ম্লান আলোকে ফুটলি কেন গোলক-চাঁপার ফুল
বাণী
ম্লান আলোকে ফুটলি কেন গোলক-চাঁপার ফুল। ভূষণহীনা বনদেবী কার হ'রি তুই দুল।। হার হ'বি কার কবরীতে সন্ধ্যারানী দূর নিভৃতে, ব'সে আছে অভিমানে ছড়িয়ে এলোচুল।। মাটির ধরার ফুলদানিতে তোর হবে কি ঠাঁই, আদর কে আর করবে তোরে, বসন্ত যে নাই হায় বসন্ত নাই। গোলক-চাঁপা খুঁজিস কারে — সে দেবতা নাই রে হেথা শূন্য যে আজি গোকুল।।
মেঘলা-মতীর ধারা জলে কর স্নান
বাণী
মেঘলা-মতীর ধারা জলে কর স্নান (হে ধরণী) স্নিগ্ধ শীতল মেঘ-চন্দনে জুড়াও তাপিত প্রাণ (হে ধরণী)।। তব বৈশাখী ব্রত শেষে শ্যাম সুন্দর বেশে নব দেবতা এলো হেসে লহ আশিস বারি দান (হে তাপসী)।। তব ভূষণ-হীন উপবাস ক্ষীণ কায় হোক নবতর শ্যাম সমারোহে, পুষ্পিত সুষমায়। তীর্থ-সলিলে কৃষ্ণা দূর কর গো তৃষ্ণা শ্যাম দরশ পরশ ব্যাকুলা হরষে গাহ গান (হে তপতী)।।
মালঞ্চে আজ কাহার যাওয়া আসা
বাণী
মালঞ্চে আজ কাহার যাওয়া আসা। ঝরা পাতায় বাজে মৃদুল তাহার পায়ের ভাষা।। আসার কথা জানায় ঐ যে ফুলের আখর সবুজ পাতায়, ঐ দোয়েল শ্যামার কূজন কয় যে বাণী ঐ ঐ তার ভালোবাসা।। মদির সমীরণে তনুর সুবাস পাই যে ক্ষণে ক্ষণে, সবুজ বসন ফেলি’ পরল ঐ বন কুস্মী রাঙা চেলি। তাই বসুন্ধরায় জাগে অরুণ আশা — ঐ ঐ যে আলোকের পিপাসা।।
মোর বেদনার কারাগারে জাগো
বাণী
মোর বেদনার কারাগারে জাগো, জাগো- বেদনাহারী হে মুরারি। অসীম দুঃখ ঘেরা কৃষ্ণা তিথিতে এসো এসো হে কৃষ্ণ গিরিধারী।। ব্যথিত এ চিত দেবকীর সম মূর্ছিত পাষাণেরি ভারে ডাকে প্রাণ-যাদব, এসো এসো মাধব উথলিছে প্রেম আঁখিবারি মুরারি উথলিছে প্রেম আঁখিবারি।। হৃদয়-ব্রজে মম ভক্তি প্রীতি জাগিয়া আছে আশায়, কদম্ব ফুল সম উঠিছে শিহরি’ মম শ্যাম-বরষায়। ওগো বনশীওয়ালা, তব না শোনা বাঁশি শোনে অনুরাগ রাধা প্রণয় পিয়াসি, গোপন ধ্যানের মধুবনে তব নুপুর শুনি, হে কিশোর বনচারী।।
মানবতাহীন ভারত শ্মশানে
বাণী
মানবতাহীন ভারত শ্মশানে দাও মানবতা হে পরমেশ। কি হবে লইয়া মানবতাহীন ত্রিশ কোটি মানুষ মেষ।। কলের পুতুল এরা প্রাণহীন পাষাণ আত্মা বিশ্বাসহীন, নিজেরে ইহারা চিনে না জানে না, কেমনে চিনিবে নিজের দেশ।। ভারত শ্মশানে ফেরে প্রেতপাল, নর নাই, শুধু নর-কঙ্কাল; এই চির অভিশপ্তের মাঝে জাগাও হে প্রভু প্রাণের রেশ।। ভায়ে ভায়ে হেথা নাহি প্রেমবোধ, কেবলি কলহ, কেবলি বিরোধ; হে দেশ-বিধাতা, দূর কর এই লজ্জা ও গ্লানি, এ দীন বেশ।।