বাণী

মৃত্যু নাই, নাই দুঃখ, আছে শুধু প্রাণ।
আনন্ত আনন্দ হাসি অফুরান।।
	নিরাশার বিবর হ’তে
	আয় রে বাহির পথে,
দেখ্ নিত্য সেথায় — আলোকের অভিযান।।
ভিতর হ’তে দ্বার বন্ধ ক’রে
জীবন থাকিতে কে আছিস্‌ ম’রে।
	ঘুমে যারা অচেতন
	দেখে রাতে কু-স্বপন,
প্রভাতে ভয়ের নিশি হয় অবসান।।

বাণী

মাকে আমার দেখেছে যে ভাইকে সে কি ঘৃণা করে।
ত্রিলোক-বাসী প্রিয় তাহার পরান কাঁদে সবার তরে॥
নাই জাতি ভেদ উচ্চ-নীচের জ্ঞান
তাহার কাছে সকলে সমান,
দেখলে গুহক চন্ডালে সে রামের মত বক্ষে ধরে॥
মা আমাদের মহামায়া পরমা প্রকৃতি
পিতা মোদের পরমাত্মা রে তাই সবার সাথে প্রীতি
মোদের সবার সাথে প্রীতি।
সন্তানে তাঁর ঘৃণা করে মাকে করে পূজা
সে পূজা তার নেয় না কভু, নেয় না দশভূজা।১
(মোরা) এই ভেদ-জ্ঞান ভুলব যেদিন
মা সেই দিন আসবে ঘরে॥

১. সে পূজা তার নেয় না চতুর্ভুজা, ওরে নেয় না দশভুজা

বাণী

	মমতাজ মমতাজ তোমার তাজমহল —
যেন 	ফিরদৌসের একমুঠো প্রেম,
	বৃন্দাবনের একমুঠো প্রেম, আজো করে ঝলমল।।
	কত সম্রাট হ’ল ধূলি স্মৃতির গোরস্তানে —
	পৃথিবী ভুলিতে নারে প্রেমিক শাহ্‌জাহানে,
	শ্বেত মর্মরে সেই বিরহীর ক্রন্দন –মর্মর গুঞ্জরে অবিরল।।
	কেমনে জানিল শাজাহান – প্রেম পৃথিবীতে ম’রে যায়,
তাই	পাষাণ প্রেমের স্মৃতি রেখে গেল পাষাণে লিখিয়া হায়!
যেন	তাজের পাষাণ অঞ্জলি ল’য়ে নিঠুর বিধাতা পানে
	অতৃপ্ত প্রেম বিরহী আত্মা আজো অভিযোগ হানে!
বুঝি	সেই লাজে বালুকায় মুখ লুকাইতে চায় শীর্ণা যমুনা জল।।

বাণী

মেঘ-মেদুর গগন কাঁদে হুতাশ পবন
কে বিরহী রহি’রহি’দ্বারে আঘাত হানো।
শাওন ঘন ঘোর ঝরিছে বারি অঝোর
কাঁপিছে কুটির মোর দীপ নেভানো।।
বজ্রে বাজিয়া ওঠে তব সঙ্গীত,
বিদ্যুতে ঝলকিছে আঁখি-ইঙ্গিত,
চাঁচর চিকুরে তব ঝড় দুলানো, ওগো মন ভুলানো।।
এক হাতে, সুন্দর, কুসুম ফোটাও!
আর হাতে নিষ্ঠুর মুকুল ঝরাও।
হে পথিক, তব সুর অশান্ত ব‍ায়
জন্মান্তর হতে যেন ভেসে আসে হায়!
বিজড়িত তব স্মৃতি চেনা অচেনায় প্রাণ কাঁদানো।।

বাণী

মাধবী-তলে চল মাধবিকা-দল
		আইল সুখ-মধুমাস।
বহিছে খরতর থরথর মরমর
		উদাস চৈতী-বাতাস।।
পিককুল কলকর অবিরল ভাষে,
মদালস মধুপ পুষ্পল বাসে।
		বেণু-বনে উঠিছে নিশাস।।
তরুণ নয়ন সম আকাশ আনীল,
তট-তরু-ছায়া ধরে নীর নিরাবিল
		বুকে বুকে স্বপন-বিলাস।।

বাণী

মাদল বাজিয়ে এলো বাদলা মেঘ এলোমেলো
মাতলা হাওয়া এলো বনে।
ময়ূরী নাচে কালো জামের গাছে
পিয়া পিয়া বন-পাপিয়া
ডাকে গো আপন মনে।।
বেত-বনের আড়ালে ডাহুকী ডাকে,
ডাকে না এমন দিনে কেহ আমাকে,
বেণীর বিনুনী খুলে পড়ে
একলা মন টেকে না ঘরের কোণে।।
জঙ্গল পাহাড় কাঁপে বাজের আওয়াজে,
বুকের মাঝে তবু নূপুর বাজে।।
ঝিঁঝিঁ তার ডাক ভুলে
ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বৃষ্টির বাজ্‌না শোনে।।