বাণী

মেঘ-বিহীন খর-বৈশাখে
তৃষায় কাতর চাতকী ডাকে।।
সমাধি-মগ্না উমা তপতী —
রৌদ্র যেন তার তেজঃ জ্যোতি,
ছায়া মাগে ভীতা ক্লান্তা কপোতী —
কপোত-পাখায় শুষ্ক শাখে।।
শীর্ণা তপিনী বালুচর জড়ায়ে
তীর্থে চলে যেন শ্রান্ত পায়ে।
দগ্ধ-ধরণী যুক্ত-পাণি
চাহে আষাঢ়ের আশিস বাণী
যাপিয়া নির্জলা একদশীর তিথি
পিপাসিত আকাশ যাচে কাহাকে।।

বাণী

মাকে আমার দেখেছে যে ভাইকে সে কি ঘৃণা করে।
ত্রিলোক-বাসী প্রিয় তাহার পরান কাঁদে সবার তরে॥
নাই জাতি ভেদ উচ্চ-নীচের জ্ঞান
তাহার কাছে সকলে সমান,
দেখলে গুহক চন্ডালে সে রামের মত বক্ষে ধরে॥
মা আমাদের মহামায়া পরমা প্রকৃতি
পিতা মোদের পরমাত্মা রে তাই সবার সাথে প্রীতি
মোদের সবার সাথে প্রীতি।
সন্তানে তাঁর ঘৃণা করে মাকে করে পূজা
সে পূজা তার নেয় না কভু, নেয় না দশভূজা।১
(মোরা) এই ভেদ-জ্ঞান ভুলব যেদিন
মা সেই দিন আসবে ঘরে॥

১. সে পূজা তার নেয় না চতুর্ভুজা, ওরে নেয় না দশভুজা

বাণী

মেঘলা নিশি ভোরে মন যে কেমন করে
তারি তরে গো মেঘ-বরণ যার কেশ।
বুঝি তাহারি লাগি’ হয়েছে বৈরাগী
গেরুয়া রাঙা গিরিমাটির দেশ।।
মৌরি ফুলের ক্ষেতে, মৌমাছি ওঠে মেতে
এলিয়েছিল কেশ কি গো তার এই পথে সে যেতে।
তার ডাগর চোখের ঝিলিক লেগে রাত হয়েছে শেষ (গো)।।
শিরিষ পাতায় ঝিরিঝিরি, বাজে নূপুর তারি
সোনাল ডালে দোলে তাহার কামরাঙা রঙ শাড়ি।
হয়েছি মন-ভিখারি কোন্‌ শিকারি আমি
উঠি পাহাড় চূড়ায়, ঝর্না জলে নামি
কালো পাথর দেখে জাগে কার চোখের আবেশ গো।।

বাণী

মার্‌হাবা সৈয়দে মক্কী-মদনী আল্-আরবি।
বাদ্‌শারও বাদশাহ্ নবীদের রাজা নবী।।
ছিলে মিশে আহাদে, আসিলে আহমদ হয়ে
বাঁচাতে সৃষ্টি খোদার, এলে খোদার সনদ ল’য়ে,
মানুষে উদ্ধারিলে মানুষের আঘাত সয়ে —
মলিন দুনিয়ায় আনিলে তুমি যে বেহেশ্‌তী ছবি।।
পাপের জেহাদ-রণে দাঁড়াইলে তুমি একা
নিশান ছিল হাতে ‘লা-শরীক আল্লাহ্’ লেখা,
গেল দুনিয়া হতে ধুয়ে মুছে পাপের রেখা —
বহিল খুশির তুফান উদিল পুণ্যের রবি।।

বাণী

মহুয়া বনে লো মধু খেতে, সই,
বাহিরে চাঁদ এলো, ঘরে মোর চাঁদ কই।।
আমার নাচের সাথী কোথা পাইনে দেখা
সরে না পা ওলো নাচতে একা
সে বিনে সখী লো আমি আমার নই।।
মিছে মাদলে তাল হানে মাদলিয়া,
সে কি গেল বিদেশ, মোরে না বলিয়া।
দূরে বাঁশি বাজে পলাশ পিয়াল বনে,
বুঝি ঐ বঁধু মোর, যেন লাগে মনে
সে মোরে ভুলে নাচে কাহার সনে?
সে যে জানতো না সজনী কভু আমি বৈ।।

বাণী

মেঘলা-মতীর ধারা জলে কর স্নান (হে ধরণী)
স্নিগ্ধ শীতল মেঘ-চন্দনে জুড়াও তাপিত প্রাণ (হে ধরণী)।।
	তব বৈশাখী ব্রত শেষে
	শ্যাম সুন্দর বেশে
নব দেবতা এলো হেসে লহ আশিস বারি দান (হে তাপসী)।।
	তব ভূষণ-হীন উপবাস ক্ষীণ কায়
	হোক নবতর শ্যাম সমারোহে, পুষ্পিত সুষমায়।
	তীর্থ-সলিলে কৃষ্ণা
	দূর কর গো তৃষ্ণা
শ্যাম দরশ পরশ ব্যাকুলা হরষে গাহ গান (হে তপতী)।।