বাণী

ও কালো ডাগর চোখে বল জল আনিল কে।
কে গো সেই নিঠুর হিয়া না জানি কিসের ঝোঁকে।।
দু আঁখি ছাপিয়ে গেল তিতিল
কপোলখানি উজল নীলাকাশে সহসা ঢাকিল কে।।
পড়েছে ঘোমটা খসে খোঁপাটি গেছে খুলে
ঢেকেছে মুখখানি তার পাগল এলো চুলে।
না জানি কাহার কথা ব্যথিত ভাবছে মনে
সে জনা দেখিল না এ ছবি এমন ক্ষণে
স্বরগে হয়তো মেলে, মেলে না মর্তলোকে।।

বাণী

ওগো	চৈতী রাতের চাঁদ, যেয়ো না
	সাধ না মিটিতে যেতে চেয়ো না।।
হের	তরুলতায় কত আশার মুকুল,
ওগো	মাধবী-চাঁদ আজো ফোটেনি ফুল,
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না —
ঝরা	মুকুলে বনবীথি ছেয়ো না
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না, ওগো যেয়ো না।।
আজো	ফুলের নেশায় পাগল দখিন হাওয়া
আজো	বোলেনি পাপিয়া 'পিয়া পিয়া' গাওয়া
তুমি	এখনি বিদায়-গীতি গেয়ো না
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না।।

বাণী

ও কে উদাসী বেণু বাজায়
ডাকে করুণ সুরে আয় আয়।।
ও সে বাঁধন হারা বাহির বিলাসী
	গৃহীরে করে সে পরবাসী
	রস যমুনায় উজান বহায়।।
মম মনের ব্রজে ওসে কিশোর রাখাল
যেন বাজায় বাঁশি শুনি অনাদিকাল
তার সরল বাঁশি তার তরল তাল
	অন্তরে গরল-সুধা মেশায়।।

বাণী

ওরে মথুরা-বাসিনী, মোরে বল্।
কোথায় রাধার প্রাণ — ব্রজের শ্যামল।।
		আজও রাজ-সভা মাঝে
	(সে)	আসে কি রাখাল-সাজে?
আজও তার বাঁশি শুনে যমুনার জল হয় কি উতল।।
পায়ে নূপুর কি পরে শিরে ময়ূর-পাখা,
আছে শ্রীমুখে কি অলকা তিলক আঁকা।
		রাধা রাধা ব’লে কি গো
		কাঁদে সেই ময়া-মৃগ?
নারায়ণ হয়েছে সে তোদের মথুরা এসে মোদের চপল।।

বাণী

(ওমা)	দুঃখ-অভাব-ঋণ যত মোর (শ্যামা) রাখলাম তোর পায়ে।
(এবার)	তুই দিবি মা, ভক্তের তোর সকল ঋণ মিটায়ে।।
		মাগো		সমন হাতে মোর মহাজন
				ধরতে যদি আসে এখন,
		তোরই পায়ে পড়বে বাঁধন ছেলের ঋণের দায়ে।।
ওমা		সুদ আসলে এ সংসারের বেড়েই চলে দেনা,
এবার		ঋণ মুক্তির তুই নে মা ভার, রইব তোরই কেনা।
				আমি আমার আর নহি ত
		(আমি)	তোর পায়ে যে নিবেদিত,
এখন		তুই হয়েছিস্ জামিন আমার দে ওদের বুঝায়ে।।

বাণী

ও কে মুঠি মুঠি আবীর কাননে ছড়ায়
রাঙা-হাসির পরাগ-ফুল আননে ঝরায়।।
তার রঙের আবেশ লাগে চাঁদের চোখে
তার লালসার রঙ জাগে রাঙা অশোকে
তার রঙিন নিশান দোলে কৃষ্ণ চূড়ায়।।
তার পুষ্প ধনু দোলে শিমূল শাখায়
তার কানা কাঁপে গো ভোমরা পাখায়,
সে খোঁপাতে বেল-ফুলের মালা জড়ায়।।
সে কুসমী শাড়ি পরায় নীল বসনায়
সে আঁধার মনে জ্বালে লাল রোশনাই
সে শুকনো বনে ফাগুন আগুন ধরায়।।