বাণী

পান্‌সে জোছ্‌নাতে কে			চল গো পানসি বেয়ে’।
ঢেউ-এর তালে তালে			বাঁশিতে গজল গেয়ে’।।
মেঘের ফাঁকে ফোটে			বাঁকা শশীর চিকন হাসি,
উজান বেয়ে চল			তুমি কি তার চোখে চেয়ে।।
ও-পারে লুকায়ে আঁধার		গভীর ঘন বন-ছায়,
আকাশে হেলান দিয়ে			আলসে পাহাড় ঘুমায়।
ঘুমায়ে দূরে সে কোন গ্রাম		বাসরে পল্লী-বধূর প্রায়
এ-পারে ধূ-ধূ বালুচর			যেন নদীর আঁচল লুটায়।
ছাড়ি’ এ সুখ-বাস			চলেছ কোথায় গো নেয়ে।।
নদীর দু’তীরে টানে			বেতস-লতা উত্তরীয়,
চমকি’ উঠি’ চখি			ডাকে মুহু মুহু ‘কিও!’
চকোরী চাঁদে ভুলি’			চাহে তব মুখপানে,
কেঁদে পাপিয়া শুধায়,			‘পিউ কাঁহা, কাঁহা পিও।’
তুমি যাও আপন-বিভোল		স্বপনে নয়ন ছেয়ে’।।

বাণী

পিয়া গেছে কবে পরদেশ পিউ কাঁহা ডাকে পাপিয়া,
দোয়েল শ্যামার শিসে তারি হুতাশ উঠিছে ছাপিয়া।।
	পাতারি আড়ালে মুখ ঢাকি'
	মুহুমুহু কুহু ওঠে ডাকি,
বাজে ধ্বনি তারি উহু উহু বিরহী পরাণ ব্যাপিয়া।।
	'বউ কথা কও' পাখি ডাকে —
	কেন মনে প'ড়ে যায় তাকে,
কথা কও বউ — ডাকিত সে মোরে, নিশীথ উঠিত কাঁপিয়া।।

বাণী

		প্রিয়ে ... বলি ও-প্রিয়ে ... তুমি দেখ ...।
		[কাঁপা-কন্ঠে আবৃত্তির ঢঙে বলা হয়েছে]
পুরুষ	:	প্রিয়ে! বলি, ও প্রিয়ে! তুমি দেখ!
		দেখ বিরহের দাবানল জ্বলে গোঁফ-দাড়িতে।
স্ত্রী	:	ও-স’রে যা, সে আগুন লেগে যাবে শাড়িতে॥
পুরুষ	:	একে ভীষণ ফাগুন মাস
স্ত্রী	:	ওগো তাই বুছি হাঁসফাঁস ?
পুরুষ	:	কাপাস ফলের মত ফেটে পড়ে হিয়া গো,
স্ত্রী	:	প্রেম-তুলো বের হয়ে পড়ে ছড়াইয়া গো,
উভয়ে:	রব্ ওঠে ভোঁস্-ভাঁস্ হৃদি-রেলগাড়িতে॥
পুরুষ	:	আজি এ বিরহের কাঠ-ঠোক্রা, ঠোক্রায় প্রেমের টাকে,
স্ত্রী	:	ওগো এ হেন বেয়াধি হলে টাকে, মধ্যম-নারায়ণ তেল মাখে।
পুরুষ	:	হায়-হায়-হায়-হায়-হায়
		আমাদের মাঝে কে রচিবে মিলনের সাঁকো।
স্ত্রী	:	থাক্ থাক্, পুরুতঠাকুর ইঞ্জিনিয়ার
		তারে তাড়াতাড়ি ডাকো, ডাকো, একবার ডাকো না ?
উভয়ে:	আগুন লাগিল ওরে দাড়ি আর শাড়িতে
		যুগল মিলন হ’ল ধেড়ে আর ধাড়িতে॥

বাণী

পুরবের তরুণ অরুণ পুরবে আস্‌লো ফিরে।
কাঁদায়ে মহাশ্বেতায় হিমানীর শৈল-শিরে।।
	কুহেলির পর্দা ডারি’
	ঘুমাত রূপ-কুমারী,
জাগালে স্বপনচারী — তাহারে নয়ন-নীরে।।
তোমার ঐ তরুণ গলার শুনি গান সিন্ধু-পারে,
দুলিছ মধ্যমণি সুরমার কণ্ঠ-হারে।
	ধেয়ানী দিলে ধরা
	হ’ল সুর স্বয়ম্বরা,
এলে কি পাগল-ঝোরা — পাষাণের বক্ষ চিরে’।

বাণী

পায়ে বিঁধেছে কাঁটা সজনী ধীরে চল।
	ধীরে ধীরে ধীরে চল।
চলিতে ছলকি' যায় ঘটে জল ছল ছল।।
	একে পথ আঁকাবাঁকা
	তাহে কন্টক -শাখা
আঁচল ধ'রে টানে, টলে তনু টলমল।।
	ভরা যৌবন-তরী,
	তাহে ভরা গাগরি,
বুঝি হয় ভরা-ডুবি, ছি ছি বল এ কি হলো।।
	পথের বাঁকে ও কে
	হাসে ডাগর চোখে,
হাসিবে পথের লোকে সখি স'রে যেতে বল।।

বাণী

	পাঠাও বেহেশ্‌ত হ’তে হজরত্ পুন সাম্যের বাণী,
(আর)	দেখিতে পারি না মানুষে মানুষে এই হীন হানাহানি।।
		বলিয়া পাঠাও, হে হজরত
		যাহারা তোমার প্রিয় উম্মত,
	সকল মানুষে বাসে তা’রা ভালো খোদার সৃষ্টি জানি’ —
			সবারে খোদারই সৃষ্টি জানি।।
	আধেক পৃথিবী আনিল ঈমান (তোমার) যে উদারতা-গুণে,
	শিখিনি আমরা সে-উদারতা, (কোরানে হাদিসে) কেবলি গেলাম শুনে’।
		তোমার আদেশ অমান্য ক’রে
		লাঞ্ছিত মোরা ত্রিভুবন ভ’রে,
	আতুর মানুষে হেলা ক’রে বলি, ‘আমরা খোদারে মানি’।।