বাণী

(প্রভু)		রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি তব পদে মতি।
		আঁখির আগে যেন সদা জাগে তব ধ্রুব-জ্যোতি।।
			সংসার মরুমাঝে তুমি মেঘ-মায়া,
			বিষাদ-শোক তাপে তুমি তরু-ছায়া,
		সান্ত্বনা দাতা তুমি দুঃখ ত্রাতা অগতির গতি।।
		জননীর মত আছ ঊর্ধ্বে জাগি
		জলে স্থলে শূন্যে অগণিত তব দান মোদের লাগি১।
			ঝঞ্ঝার মাঝে তব বিষাণ বাজে,
			সহসা ঢলি পড় বনে ফুল-সাজে,
		কোমলে কঠোরে হে প্রভু বিরাজে তব মহাশক্তি।।

১. দোলে কালো নিশার কোলে / আলো-উষসী / তিমির তলে তব তিলক জ্বলে / ঐ পূর্ণ শশী।

বাণী

প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে
রসের লুকোচুরি খেলা নিত্য আমার তারই সাথে।।
তারে নয়ন দিয়ে খুঁজি যখন
অন্তরে সে লুকায় তখন
অন্তরে তায় ধরতে গেলে লুকায় গিয়ে নয়ন-পাতে।।
ঐ দেখি তার হাসির ঝিলিক আমার ধ্যানের ললাট-মাঝে
ধরতে গেলে দেখি সে নাই কোন্ সুদূরে নূপুর বাজে।
এত কাছে রয় সে তবু পাই না তারে হাতে হাতে।।

বাণী

	পদ্মদীঘির ধারে ধারে ঐ সখি লো কমল-দীঘির পারে।
	আমি জল নিতে যাই সকাল সাঁঝে সই,
সখি, 	ছল ক'রে সে মাছ ধরে, আর, চায় সে বারে বারে।।
	মাছ ধরে সে, বঁড়শী আমার বুকে এসে বেঁধে,
			ওলো সই বুকে এসে বেঁধে,
আর,	চোখের জল কলসি আমার সই, আমি ভরাই কেঁদে কেঁদে
				সই যত দেখি তা'রে।।
	ছিপ নিয়ে যায় মাছ জলে তার (ওলো সই) তাকায় না তা’র পানে
	মন ধরে না মীন ধরে সে সখি লো সেই জানে।
	মন-ভিখারি মীন-শিকারি মুখের পানে চায়,
			সখি লো চোখের পানে চায়,
আমি	বঁড়শী-বেঁধা মাছের মত (গো)
			সখি ছুটিয়া মরি হায়, অকূল পাথারে।।

বাণী

প্রিয়তম, এত প্রেম দিও না গো সহিতে পারি না আর
তটিনীর বুকে ঝাঁপায়ে পড়িলে কেন মহা- পারাবার।।
	তোমার প্রেমের বন্যায় বঁধু, হায়!
	দুই কুল মোর ভাঙিয়া ভাসিয়া যায়;
আমি নিজেরে হারাতে চাহিনি, বন্ধু; দিতে চেয়েছিনু হার।।
তুমি চাহ বুঝি তুমি ছাড়া আর রহিবে না মোর কেউ,
তাই কি পরানে তুফান তোলে গো এত রোদনের ঢেউ।
	দেহ ও মনের সীমা ছাড়াইয়া মোরে
	কোথায় নিয়ে যেতে চাও মোর হাত ধরে
বলো কোন মধু বনে শেষ হবে বঁধু আমাদের অভিসার।।

বাণী

পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে।
মন হয়েছে উতলা গো তোমার আসার পথ চেয়ে।।
	আকাশ জুড়ে আলোর খেলা
	বসুন্ধরায় ফুলের মেলা
রঙিন মেঘের ভাসলো ভেলা তোমারই আসার আভাস পেয়ে।।
সাধ জাগে ঐ পথে তোমার পেতে রাখি মন প্রাণ
চলতে গিয়ে দলবে তা’রে চরণ ছোঁয়া করিবে দান।
	তোমার ধ্যানে, হে রাজাধিরাজ
	সাজ ভুলেছি ভুলেছি কাজ
আসবে তুমি সেই খুশিতে আছে আমার মন ছেয়ে।।

বাণী

প্রভু সংসারেরি সোনার শিকল বেঁধো না আর পায়
তোমার প্রেম ডোরে ত্রিভুবন স্বামী বাঁধ হে আমায়॥
সারা জীবন বোঝা বয়ে, এসেছি আজ ক্লান্ত হয়ে
জুড়াতে হে শান্তি দাতা তোমার শীতল ছায়॥
হে নাথ যতদিন শক্তি ছিল বোঝা বহিবার
হাসি মুখে বয়েছি নাথ তোমার দেওয়া ভার।
শেষ হল আজ ভবের খেলা, কি দান দেব যাবার বেলা
তোমার নামের ভেলায় যেন এ দীন তরে যায়॥