বাণী
তোরা বলিস্ লো সখি, মাধবে মথুরায় কেমনে রাধার কাঁদিয়া বরষ যায়॥ খর-বৈশাখে কি দাহন থাকে বিরহিণী একা জানে ঘৃত-চন্দন পদ্ম পাতায় দারুণ দহন-জ্বালা না জুড়ায় ‘ফটিক জলে’র সাথে আমি কাঁদি চাহিয়া গগন-পানে। জ্বালা না জুড়ায় গো — হরি-চন্দন বিনা ঘৃত-চন্দনে জ্বালা না জুড়ায় গো শ্যাম-শ্রীমুখ-পদ্ম বিনা পদ্ম পাতায় জ্বালা না জুড়ায়॥ বরষায় অবিরল ঝর ঝর ঝরে জল জুড়াইল জগতের নারী রাধার গলার মালা হইল বিজলি-জ্বালা তৃষ্ণা মিটিল না তা’রি! সখি রে, তৃষ্ণা মিটিল না তা’রি। প্রবাসে না যায় পতি সব নারী ভাগ্যবতী বন্ধু রে বাহুডোরে বাঁধে ললাটে কাঁকন হানি’ একা রাধা অভাগিনী প্রদীপ নিভায়ে ঘরে কাঁদে। জ্বালা তা’র জুড়ালো না জলে গো শাওনের জলে তা’র মনের আগুন দ্বিগুণ জ্বলে গো কৃষ্ণ-মেঘ গেছে চ’লে, অকরুণ অশনি হানিয়া হিয়ায় (সখি)॥ আশ্বিনে পরবাসী প্রিয় এলো ঘরে গো মিটিল বধূর মন-সাধ (সখি রে) রাধার চোখের জলে মলিন হইয়া যায় কোজাগরী চাঁদ (মলিন হইয়া যায় গো)। আগুন জ্বালালে শীত যায় নাকি রাধার কি হ’ল হায় বুক ভরা তার জ্বলিছে আগুন তবু শীত নাহি যায়। যায় না, যায় না আগুন জ্বলে — বুকের আগুন জলে, তবু শীত যায় না, যায় না, শীত যদি বা যায় নিশীথ না, যায় গো যায় না, যায় না, রাধার যে কি হ’ল হায়॥ কলিয়া কৃষ্ণ-ছূড়া, ছড়ায়ে ফাগের গুঁড়া আসিল বসন্ত রাধা-অনুরাগে রেঙে কে ফাগ খেলিবে গো, নাই ব্রজ-কিশোর দুরন্ত। মাধবী-কুঞ্জে কুহু কুহরিছে মুহুমুহু ফুল-দোলনায় সবে দোলে, এ মধু মাধবী রাতে রাধার মাধব নাই দুলিবে রাধা কার কোলে সখি রে — রাধা দোলে কার কোলে গো শ্যাম-বল্লভ বিনা রাধা দোলে কার কোলে গো, বল্ সখি, দোলে কার কোলে। ফুল-দোলে দোলে সবে পিয়াল-শাখে রাধার প্রিয়া নাই, বাহু দু’টি দিয়া বাঁধিবে কাহাকে, ঝরা-ফুল-সাথে রাধা ধূলাতে লুটায়॥
রাগ ও তাল
রাগঃ
তালঃ ফের্তা