বাণী

যাস্‌নে মা ফিরে, যাস্‌নে জননী ধরি দুটি রাঙা পায়।
শরণাগত দীন সন্তানে ফেলি’ ধরার ধূলায় (মা) ধরি রাঙা পায়।।
(মোরা) অমর নহি মা দেবতাও নহি
	শত দুখ সহি’ ধরণীতে রহি’,
মোরা অসহায়, তাই অধিকারী মাগো তোর করুণায়।।
দিব্যশক্তি দিলি দেবতারে মৃত্যু-বিহীন প্রাণ,
তবু কেন মাগো তাহাদেরি তরে তোর এত বেশি টান?
(আজো) মরেনি অসুর মরেনি দানব
	ধরণীর বুকে নাচে তান্ডব,
সংহার নাহি করি’ সে অসুরে চলে যাস্ বিজয়ায়।।

নাটিকা: ‘বিজয়া’

বাণী

যোগী শিব শঙ্কর ভোলা দিগম্বর
ত্রিলোচন দেবাদিদেব ধ্যানে সদা মগন॥
চির শ্মশানচারী অনাদি সমাধিধারী
স্তব্ধ ভয়ে চরণে তাঁরি প্রণতি করে গগন॥
ত্রিশূল-বিষাণ রহে পড়িয়া পাশে
ললাটে শশী নাহি হাসে
গঙ্গা তরঙ্গ-হারা ভীত ভুবন।
ত্রাহি হে শম্ভু শিব, ত্রাসে কাঁপে জড় ও জীব
ভোলো এ ভীষণ তপ গাহিতেছে সঘন॥

বাণী

যবে		তুলসীতলায় প্রিয় সন্ধ্যাবেলায় তুমি করিবে প্রণাম,
তব		দেবতার নাম নিতে ভুলিয়া বারেক প্রিয় নিও মোর নাম।।
		একদা এমনি এক গোধূলি বেলা
		যেতেছিলে মন্দির-পথে একেলা,
		জানি না কাহার ভুল তোমার পূজার ফুল
				আমি লইলাম —
সেই		দেউলের পথ সেই ফুলেরই শপথ
প্রিয়,		তুমি ভুলিলে হায় আমি ভুলিলাম।।
		পথের দুঁধারে সেই কুসুম ফোটে — হায় এরা ভোলেনি,
		বেঁধেছিলে তরু শাখে লতার যে ডোর হের আজো খোলেনি।
		একদা যে নীল নভে উঠেছিল চাঁদ
ছিল		অসীম আকাশ ভরা অনন্ত সাধ,
আজি		অশ্রু-বাদল সেথা ঝরে অবিরাম।।

বাণী

	যত ফুল তত ভুল কণ্টক জাগে
	মাটির পৃথিবী তাই এত ভালো লাগে।।
হেথা	চাঁদে আছে কলঙ্ক, সাধে অবসাদ
হেথা	প্রেমে আছে গুরুগঞ্জনা অপবাদ;
আছে	মান-অভিমান পিরিতি-সোহাগে।।
হেথা	হারাই হারাই ভয়, প্রিয়তমে তাই
	ব’ক্ষে জড়ায়ে কাঁদি ছাড়িতে না চাই।
	স্বর্গের প্রেমে নাই বিরহ-অনল
	সুন্দর আঁখি আছে, নাই আখি-জল;
	রাধার অশ্রু নাই কুমকুম-ফাগে।।

নাটকঃ অন্নপূর্ণা (নাট্যকারঃ মণিলাল বন্দোপাধ্যায়)

বাণী

যবে	ভোরের কুন্দ-কলি মেলিবে আঁখি
	ঘুম ভাঙায়ে হাতে বাঁধিও রাখি।।
		রাতের বিরহ যবে
		প্রভাতে নিবিড় হবে
	অকরুণ কলরবে গাহিবে পাখি।।
যেন	অরুণ দেখিতে গিয়া তরুণ কিশোর
	তোমারে প্রথম হেরি' ঘুম ভাঙে মোর।
		কবরীর মঞ্জরি
		আঙিনায় রবে ঝরি'
	সেই ফুল পায়ে দলি এসো একাকী।।

বাণী

যে নামে মা ডেকেছিল সুরথ আর শ্রীমন্ত তোরে।
সেই নাম তুই শিখিয়ে দে মা, ডাকব আমি তেমনি ক’রে।।
	বেদ-পুরাণে যে নাম শুনি
	যে নাম জপে ঋষি-মুনি
সেই নাম দে, যে নাম নিতে বক্ষ ভাসে অশ্রু-নীরে।।
ভয় যদি তোর ভক্তি দিতে, কর মা অসুর দানব মোরে
আসবি যখন শাস্তি দিতে, দেখব তোরে নয়ন ভরে।।
	তোর হাতে মা মরণ হলে
	ঠাঁই পাব যে তোরই কোলে
আঘাত করে ছেলেকে মা কাঁদে যেমন বক্ষে ধরে।।