বাণী

	যাও যাও তুমি ফিরে এই মুছিনু আঁখি
	কে বাঁধিবে তোমারে হায় গানের পাখি॥
মোর	আজ এত প্রেম আশা এত ভালোবাসা
	সকলি দুরাশা আজ কি দিয়া রাখি॥
	তোমার বেঁধেছিল নয়ন শুধু এ রূপের জালে
	তাই দুদিন কাঁদিয়া হায় এ বাঁধন ছাড়ালে।
	আমার বাঁধিয়াছে হিয়া আমি ছাড়াব কি দিয়া
	আমার হিয়া তো নয়ন নহে ও সে ছাড়ে না কাঁদিয়া,
	ওগো দুদিন কাঁদিয়া।
	এই অভিমান জ্বালা মোর একেলারি কালা
	ম্লান মিলনেরি মালা দাও ধূলাতে ঢাকি॥

বাণী

যাও মেঘদূত, দিও প্রিয়ার হাতে
আমার বিরহ–লিপি লেখা কেয়া পাতে।।
আমার প্রিয়ার দিরঘ নিশাসে
থির হয়ে আছে মেঘ যে–দেশেরই আকাশে
আমার প্রিয়ার ম্লান মুখ হেরি’
ওঠে না চাঁদ আর যে–দেশে রাতে।।
পাইবে যে–দেশে কুন্তল–সুরভি বকুল ফুলে
আমার প্রিয়া কাঁদে এলায়ে কেশ সেই মেঘনা–কূলে।
স্বর্ণলতার সম যার ক্ষীণ করে
বারে বারে কঙ্কণ চুড়ি খুলে পড়ে
মুকুল’ বয়সে যথা বরষার ফুল–দল
বেদনায় মুরছিয়া আছে আঙিনাতে।।

বাণী

		যেদিন লব বিদায় ধরা ছাড়ি প্রিয়ে।
		ধুয়ো ‘লাশ’ আমার লাল পানি দিয়ে।।
শেয়র:	শারাবী জমশেদী গজল ‘জানাজায়’ গাহিও আমার
		দিবে গোর খুঁড়িয়া মাটি খারারী ঐ শারাব-খানার!
		‘রোজ-কিয়ামতে’ তাজা উঠব জিয়ে।।
শেয়র:	এমনি পিইব শারাব ভেসে যাব তাহার স্রোতে,
		উঠিবে খুশবু শারাবের আমার ঐ গোরের পার হতে;
		টলি’ পড়বে পথিক সে নেশায় ঝিমিয়ে।।

বাণী

যে আল্লার কথা শোনে তারি কথা শোনে লোকে।
আল্লার নূর যে দেখেছে পথ পায় লোক তার আলোকে।।
	যে আপনার হাত দেয় আল্লায়
	জুল্‌ফিকারের তেজ সে পায়,
যার চোখে আছে খোদার জ্যোতি রাত্রি পোহায় তারি চোখে।।
ভোগের তৃষ্ণা মিটেছে যার খোদার প্রেমের শিরনি পেয়ে,
যায় বাদ্‌শা-নবাব গোলাম হ'য়ে সেই ফকিরের কাছে যেয়ে।
আসে সেই কওমের ইমাম সেজে কওমকে পেয়েছে যে,
তারি কাছে খোদার দেওয়া শান্তি আছে দুখে-শোকে।। 

বাণী

যায়	ঝিল্‌মিল্ ঝিল্‌মিল্ ঢেউ তুলে দেহের কূলে
	কে চঞ্চলা দিগঞ্চলা মেঘ-ঘন-কুন্তলা।
	দেয় দোলা পুব-সমীরণে বনে বনে দেয় দোলা।।
	চলে নাগরি দোলে ঘাগরি
	কাঁখে বরষা-জলের গাগরি
	বাজে নূপুর-সুর-লহরি
	রিমি ঝিম্‌, রিম ঝিম্, রিম ঝিম্‌ চল-চপলা।।
	দেয়ারই তালে কেয়া কদম নাচে
	ময়ূর-ময়ূরী নাচে তমাল-গাছে।
	এলায়ে মেঘ-বেণী কাল-ফণি
	আসিল কি দেব-কুমারী নন্দন-পথ-ভোলা।।

বাণী

যদি	শালের বন হ’ত শালার বোন,
	ক’নে বউ হ’ত ঐ গৃহেরই কোণ,
ছেড়ে	যেতাম না গো শালার বোন,
আমি	থাকতাম পড়ে সদা, খেতাম না গো, শালার বোনথ —
	বনে হারিয়ে যেতাম,
	শালার বোন ঐ বৃন্দাবনে না হয় চারিয়ে যেতাম —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আর	মাকুন্দ হত যদি কুন্দবালা,
হ’ত	দাড়িম্ব সুন্দরী দাড়িওয়ালা,
আমি	ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	জয়নাথ তরকনাথ বলে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে,
বাবা	দুগ্‌গা ব’লে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আহা	বাচ্চা হইত যদি চৌবাচ্চায়
নিতি	পানকৌড়ি হ’য়ে ডুবে থাকিতাম তায়,
যদি	দামড়ার ল্যাজ হ’ত কুন্তল দাম
	বেণী রূপে ল্যাজ ধ’রে মাঠে দাঁড়াতাম — ঘুরে যে বেড়াতাম, তার
	আমি ল্যাজ ধ’রে ঘুরে যে বেড়াতাম, দাদা গো —
যদি	ভাগ্যগুণে এক মিলিল শালী —
বাবা	বিশাল বপু তার সে যে বিশালী,
ওযে	শালী নয় শালী নয়, শাল্মলী তরু সম
	সে যে বিশালী গো, শাল্মলী তরু সম সে যে বিশালী গো —
আহা	চিম্‌টি শালীর হ’ত বাবলা কাঁটা,
হ’ত	শর-বন তার খ্যাংড়া ঝ্যাঁটা
	খ্যাংড়া মেরে বিষ ঝেড়ে যে দিত গো —