দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে

বাণী

দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।।
গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে,
তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে।
	বরিষা-শত-নরী
	দুলিছে মরি মরি,
	দুলে বাদল-পরী
		কেতকী-বেণী খোলে।।
নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা,
দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা।
করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা,
দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা।
	উমারে লয়ে বু’কে
	শিব দুলিছে সুখে,
	দোলে অপরূপ
		রূপ-লহর তোলে।।

দরিয়ায় ঘোর তুফান

বাণী

দরিয়ায় ঘোর তুফান, পার কর নাইয়া।
রজনী আঁধার ঘোর, মেঘ আসে ছাইয়া।।
যাত্রী গুনাহ্গার, জীর্ণ তরুণী,
অসীম পাথারে কাঁদি পথ হারাইয়া।।
হে-চির কাণ্ডারী, পাপে তাপে বোঝাই তরী
তুমি না করিলে পার, পার হব কেমন করি’,
সুখ-দিনে ভুলে’ থাকি, বিপদে তোমারে স্মরি –
ডুবাবে কি তব নাম আমারে ডুবাইয়া।।
মা’র কাছে মার খেয়ে শিশু যেমন মাকে ডাকে
যত দাও দুখ শোক, ডাকি ততই তোমাকে,
জানি শুধু তুমি আছ, আসিবে আমার ডাকে –
তোমারি এ তরী প্রভু, তুমি চল বাহিয়া।।

বল্ রে তোরা বল্ ওরে

বাণী

বল্ রে তোরা বল্ ওরে ও-আকাশ-ভরা তারা।
আমার নয়ন-তারা কোথায়? কোথায় হ’ল হারা।।
দৃষ্টিতে তার বৃষ্টি হ’ত তোদের অধিক আলো
আঁধার ক’রে নামার ভুবন কোথায় সে লুকালো,
হাত্‌ড়ে ফিরি আকাশ ভুবন, পাইনে তাহার সাড়া।।
খানিক আগে মানিক আমার ছিল রে এই চোখে,
আলোর কুঁড়ি পড়ল ঝ’রে কোন্ সে গহন-লোকে।
	বলিস্‌ তোরা আলোর রাজায়
	তাঁহার অসীম আলোকসভায়,
কম হ’ত কি আলো, আমার আঁখির আলো ছাড়া।।

প্রেমের গোকুলে কুটির বাঁধিব গো

বাণী

চণ্ডীদাস	:	প্রেমের গোকুলে কুটির বাঁধিব গো, প্রেমের যমুনাতীরে।
রামী	:	নীর ভরণে যাব প্রেম যমুনাতে, প্রেমের গাগরি শিরে।।
চণ্ডীদাস	:	প্রেম জাগরণে শয়নে স্বপনে প্রেম থাক্‌ পরাণ ঘিরে (মোর)।
রামী	:	প্রেম গলার হার, প্রেম নয়নধার, প্রেম দীপ ঘন-তিমিরে।।
চণ্ডীদাস	:	প্রেম পরান প্রিয়, প্রেম সুধা অমিয় চাহি প্রেমের প্রেমীরে।
		প্রেমের লাগিয়া লাখো জনম গো আসিব ফিরে ফিরে।।
রামী	:	প্রেমের যমুনা তীরে।।

সকাল হ'ল শোন রে আজান

বাণী

সকাল হ'ল শোন রে আজান
	ওঠ রে শয্যা ছাড়ি'
তুই মসজিদে চল দ্বীনের কাজে
	ভোল দুনিয়াদারি।।

ওজু করে ফেল রে ধুয়ে
	নিশীথ রাতের গ্লানি
সিজদা করে জায়নামাজে
	ফেল রে চোখের পানি;
খোদার নামে সারাদিনের
	কাজ হবে না ভারী।।

নামাজ প'ড়ে দু'হাত তুলে
	প্রার্থনা কর তুই -
ফুল-ফসলে ভ'রে উঠুক
	সকল চাষির ভূঁই
সকল লোকের মুখে হোক
	আল্লার নাম জারী।।

ছেলে-মেয়ে সংসার-ভার
	সঁপে দে আল্লারে
নবীজীর দোয়া ভিক্ষা কর
	কর রে বারে বারে;
তোর হেসে নিশি প্রভাত হবে
	সুখে দিবি পাড়ি।।

টলমল টলমল পদভরে

বাণী

টলমল টলমল পদভরে
বীরদল চলে সমরে॥
খরধার তরবার কটিতে দোলে
রণন ঝনন রণ-ডঙ্কা বোলে
ঘন তূর্য-রোলে শোক-মৃত্যু ভোলে
দেয় আশিস সূর্য সহস্র করে॥
চলে শ্রান্ত দূর-পথে মরু দুর্গম পর্বতে
চলে বন্ধুবিহীন একা, মোছে রক্তে ললাট-কলঙ্ক-লেখা।
কাঁপে মন্দিরে ভৈরবী -  এ কি বলিদান!
জাগে নিঃশঙ্ক শঙ্কর ত্যজিয়া শ্মশান!
দোলে ঈশান মেঘে কাল প্রলয় নিশান!
বাজে ডম্বরু, অম্বর কাঁপিছে ডরে॥