কেমনে রাখি আঁখি–বারি চাপিয়া

বাণী

কেমনে রাখি আঁখি–বারি চাপিয়া
প্রাতে কোকিল কাঁদে নিশীথে পাপিয়া।।
এ ভরা ভাদরে আমার মরা নদী
উথলি’ উথলি’ উঠিছে নিরবধি
আমার এ ভাঙা ঘটে, আমার এ হৃদিতটে
চাপিতে গেলে ওঠে দু’কূল ছাপিয়া।।
নিষেধ নাহি মানে আমার এ পোড়া আঁখি
জল লুকাবো কত কাজল মাখি’ মাখি’
ছলনা ক’রে হাসি, অমনি জলে ভাসি
ছলিতে গিয়া আসি ভয়েতে কাঁপিয়া।।

কেন করুণ সুরে হৃদয়পুরে বাজিছে বাঁশরি

বাণী

কেন করুণ সুরে হৃদয় পুরে বাজিছে বাঁশরি
ঘনায় গহন নীরদ সঘন নয়ন মন ভরি॥
বিজলি চমকে পবন দমকে পরান কাঁপে রে
বুকের বঁধুরে বুকে বেঁধে ঝুরে বিধুরা কিশোরী॥

ব্রজে আবার আসবে ফিরে আমার ননী-চোরা

বাণী

ব্রজে আবার আসবে ফিরে আমার ননী-চোরা
	আর কাঁদিস্‌নে গো তোরা।
স্বভাব যে ওর লুকিয়ে থেকে কাঁদিয়ে পাগল করা —
	আর কাঁদিস্‌নে গো তোরা।
	আমি যে তার মা যশোদা
	সে আমারেই কাঁদায় সদা,
যেই কাঁদি সে যায় যে ভুলে বনে বনে ঘোরা॥
মথুরাতে আমার গোপাল রাজা হ’ল নাকি,
যেখানে যায়, সে রাজা হয় (তোরে) ভুল দেখেনি আঁখি।
	সে রাজা যদি হয়েই থাকে
	তাই ব’লে কি ভুলবে মাকে,
আমি হব রাজ-মাতা, তাই ওর রাজবেশ পরা॥

মাঠে আমার ফল্‌ল ফসল

বাণী

মাঠে আমার ফল্‌ল ফসল মনের ফসল কই
শূন্য মনে আল্লা তোমার পানে চেয়ে রই।।
আরব মরুভূমে নবীজীরে পাঠাইলে
আমার মনের মরুভূমি বিফল রাখিলে,
গরীব ব’লে আমি কি গো বান্দা তব নই।।
চাই না যশ মান আমি চাহি না দৌলৎ,
আমি চাহি শুধু — তোমার নামেরি সরবত
যে যাহা চায় তুমি নাকি তারে তাহাই দাও
আমার মানত পূর্ণ ক’রে পরান বাঁচাও,
আমি যেন আল্লা নামের তস্‌বি শুধু বই।।

কার নিকুঞ্জে রাত কাটায়ে আস্‌লে প্রাতে

বাণী

কার নিকুঞ্জে রাত কাটায়ে আস্‌লে প্রাতে পুষ্প-চোর।
ডাকছে পাখি, ‘বৌ গো জাগো’ আর ঘুমায়ো না, রাত্রি ভোর।।
যুঁই-কুঁড়িরা চোখ মেলে চায় চুম্‌কুড়ি দেয় মৌমাছি
শাপলা-বনে চাঁদ ডুবে যায় ম্লান চোখে হায় চায় চকোর।।
ঘোম্‌টা ঠেলি’ কয় চামেলি গোল ক’রো না গুল্‌-ডাকাত,
ঢুলছে নয়ন, দুলছে গলায় বেল-টগরের ছিন্ন ডোর।।
গুন্‌গুনিয়ে মোর আঙিনায় কোন্‌ সতীনের গাইছ গুন্‌
কার মালঞ্চে ফুল ফোটায়ে হুল ফোটালে বক্ষে মোর।।

দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি

বাণী

দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি।
কে যেন কহিছে কেঁদে মোর বুকে মুখ রাখি’
	‘পথিক এসেছ না কি’।।
হারায়ে গিয়াছে চাঁদ জল-ভরা কালো মেঘে
আঁচলে লুকায়ে ফুল বাতায়নে আছি জেগে’
শূন্য গগনে দেয়া কহিতেছে যেন ডাকি’
	‘পথিক এসেছ না কি’।।
ভাঙিয়া দুয়ার মম কাড়িয়া লইতে মোরে
এলে কি ভিখারি ওগো প্রলয়ের রূপ ধ’রে?
ফুরাইয়া যায় বঁধু শুভ-লগনের বেলা
আনো আনো ত্বরা করি’ ওপারে যাবার ভেলা
‘পিয়া পিয়া’ ব’লে বনে ঝুরিছে পাপিয়া পাখি
	‘পথিক এসেছ না কি’।।