ভক্তিমূলক

  • অকূল তুফানে নাইয়া কর পার

    বাণী

    অকূল তুফানে নাইয়া কর পার
    পাপ দরিয়াতে ডুবে মরি কান্ডারি
    নাই কড়ি নাই তরী প্রভু পারে তরিবার।।
    থির নহে চিত পাপ-ভীত সদা টলমল
    পুণ্যহীন শূন্য মরু সম হৃদি-তল নাহি ফুল নাহি ফল
    পার কর হে পার কর ডাকি কাঁদি অবিরল
    নাহি সঙ্গী নাহি বন্ধু নাহি পথেরি সম্বল।
    সাহারায় নাহি জল
    শাওন বরিষা সম তব করুণার ধারা
    ঝরিয়া পড়ুক পরানে আমার।।
    
  • অন্তরে তুমি আছ চিরদিন

    বাণী

    অন্তরে তুমি আছ চিরদিন ওগো অন্তর্যামী
    বাহিরে বৃথাই যত খুঁজি তা-ই পাই না তোমারে আমি।।
    প্রাণের মতন, আত্মার সম
    আমাতে আছ হে অন্তরতম
    মন্দির রচি’ বিগ্রহ পূজি দেখে হাস তুমি স্বামী।।
    সমীরণ সম, আলোর মতন বিশ্বে রয়েছ ছড়ায়ে
    গন্ধ-কুসুমে সৌরভ সম প্রাণে-প্রাণে আছ জড়ায়ে।
    তুমি বহুরূপী তুমি রূপহীন —
    তব লীলা হেরি অন্তবিহিন।
    তব লুকোচুরি খেলা সহচরী আমি যে দিবসযামী।।
    
  • অন্ধকারে দেখাও আলো কৃষ্ণ

    বাণী

    অন্ধকারে দেখাও আলো কৃষ্ণ নয়ন-তারা।
    কালো মেঘে অন্ধ-আকাশ পথিক পথ-হারা।।
    	ভক্ত কাঁদে অকূল ভবে,
    	গোকূলে তায় ডাকবে কবে।
    অশান্ত এ চিত্তে হরি বহাও শান্তি-ধারা।।
    
  • অন্ধকারের তীর্থপথে ভাসিয়ে দিলাম

    বাণী

    অন্ধকারের তীর্থপথে ভাসিয়ে দিলাম নামের তরী
    মায়া মোহের ঝড় বাদলে এবার আমি ভয় না করি।
    	যে নাম লেখা তারায় তারায়
    	যে নাম ঝরে অশ্রুধারায়
    যাত্রা শুরু সেই নামেরি জপমালা বক্ষে ধরি।।
    এই আঁধারের অন্তরালে লক্ষ রবি চন্দ্র জ্বলে
    নিত্য ফোটে আলোর কমল জানি তোমার চরণ তলে।
    	এবার ওগো অশিব নাশন
    	থামাও তোমার ঢেউর নাচন
    সেই ত অমর মরণ যদি ধ্যান সাগরে ডুবে মরি।।
    
  • আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে

    বাণী

    আজি নাহি কিছু মোর মান-অপমান ব’লে।
    সকলি দিয়াছি মোর ঠাকুরের রাঙা চরণের তলে॥
    		মোর দেহ-প্রাণ, জাতি কুল মান,
    		লজ্জা ও গ্লানি আর অভিমান;
    (আমি) দিছি চিরতরে জলাঞ্জলি গো কালো যমুনার জলে॥
    মোরে যদি কেহ ভালোবাসে আজ জল আসে আঁখি ভ’রে।
    মোর ছল ক’রে সে যে ভালোবাসে মোর শ্যামসুন্দরে।
    মোরে		না বুঝিয়া কেহ করিলে আঘাত
    		কেঁদে বলি, ওরে ক্ষমা করো নাথ্
    বৃন্দাবনে যে প্রেম মধুর হয় আঘাত নিন্দাছলে॥
    
  • আমাদের ভাল কর হে ভগবান

    বাণী

    আমাদের ভাল কর, হে ভগবান,
    সকলের ভাল কর, হে ভগবান।।
    আমাদের সব লোকে বাসিবে ভালো
    আমরাও সকলেরে বাসিব ভালো,
    রবে না হিংসা-দ্বেষ, দেহ ও মনের ক্লেশ
    মাটির পৃথিবী হবে স্বর্গ সমান - হে ভগভান।।
    জ্ঞানের আলোক দাও, হে ভগবান!
    বিপুল শক্তি দাও, হে ভগবান।
    তোমারি দেওয়া জ্ঞানে চিনিব তোমায়
    তোমার শক্তি হবে কর্মে সহায়,
    ধর্ম যদি সাথি হয়, রবেনাক দুঃখ-ভয়
    বিপদে পড়িলে তুমি করো যেন ত্রাণ - হে ভগবান।।
    
  • আমার কালো মেয়ে রাগ করেছে

    বাণী

    আমারকালো মেয়ে রাগ করেছে (মাকে) কে দিয়েছে গালি –
    রাগ ক’রে সে সারা গায়ে মেখেছে তাই কালি।।
    যখনরাগ করে মোর অভিমানী মেয়ে
    আরো মধুর লাগে তাহার হাসি–মুখের চেয়ে –
    কেকালো দেউল ক’রলে আলো অনুরাগের প্রদীপ জ্বালি’।।
    পরেনি সে বসন–ভূষণ, বাঁধেনি সে কেশ, -
    তারি কাছে হার মানে যে ভুবন–মোহন বেশ।
    রাগিয়ে তারে কাঁদি যখন দুখে, (দয়াময়ী মা –)
    দয়াময়ী মেয়ে আমার ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকে;
    আমাররাগী মেয়ে, তাই তারে দিই জবা ফুলের ডালি।।
    
  • আমার ভবের অভাব লয় হয়েছে

    বাণী

    (মা) আমার ভবের অভাব লয় হয়েছে শ্যামা-ভাব-সমাধিতে।
    শ্যামা রসে যে-মন আছে ডুবে কাজ কিরে তার যশ-খ্যাতিতে।।
    	মধু যে পায় শ্যামা-পদে,
    	কাজ কিরে তার বিষয়-মদে;
    যুক্ত যে মন যোগামায়াতে; ভাবনা কি তার রোগ ব্যাধিতে।।
    কাজ কি’রে তার লক্ষ টাকায়, মোক্ষ লক্ষ্মী যাহার ঘরে,
    কত রাজার রাজা প্রসাদ মাগে সেই ভিখারীর পায়ে ধরে।
    ও মা শান্তিময়ী অন্তরে যার, দুঃখ শোকে ভয় কি রে তার
    সে সদানন্দ সদাশিব জীবন্মুক্ত ধরণীতে।।
    
  • আমার মুক্তি নিয়ে কি হবে মা

    বাণী

    আমার	মুক্তি নিয়ে কি হবে মা, (মাগো) আমি তোরেই চাই
    		স্বর্গ আমি চাইনে মাগো, কোল্ যদি তোর পাই॥
    (মাগো)		কি হবে সে মুক্তি নিয়ে,
    			কি হবে সে স্বর্গে গিয়ে;
    		যেথায় গিয়ে তোকে ডাকার আর প্রয়োজন নাই॥
    		যুগে যুগে যে লোকে মা প্রকাশ হবে তোর
    (আমি)	পুত্র হয়ে দেখব লীলা এই বাসনা মোর।
    			তুই, মাখাস্ যদি মাখ্‌ব ধূলি,
    			শুধু তোকে যেন নাহি ভুলি;
    		তুই, মুছিয়ে ধূলি নিবি তুলি বক্ষে দিবি ঠাঁই॥
    
  • আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী

    বাণী

    আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী।
    জাগে আমার জাগ্রত প্রেম দুয়ারে তার দ্বারী ॥
    	কানু আমার বুকে ঘুমায় -
    	ভক্তি জেগে চামর ঝুলায়,
    শিয়রে দীপ আমার আঁখি, প্রীতি দাসী তারি ॥
    চোরের মত মোর গুরুজন ঘুরুক কাছে কাছে -
    আমি তাদের ভয় করিনে, (আমার) প্রেম যে জেগে আছে।
    	আধেক রাতে নিরালাতে
    	জাগবে হরি, ধরবে হাতে,
    ওগো ধ্যান করে গো সেই আশাতে এ প্রাণ রাধা-প্যারী ॥
    

  • আমি দ্বার খুলে আর রাখব না

    বাণী

    আমি দ্বার খুলে আর রাখব না, পালিয়ে যাবে গো।
    জানবে সবে গো, নাম ধরে আর ডাকব না।।
    	এবার পূজার প্রদীপ হয়ে
    	জ্বলবে আমার দেবালয়ে,
    জ্বালিয়ে যাবে গো — আর আঁচল দিয়ে ঢাকব না।।
    হার মেনেছি গো, হার দিয়ে আর বাঁধব না।
    দান এনেছি গো, প্রাণ চেয়ে আর কাঁদব না।
    	পাষাণ, তোমায় বন্দী ক’রে
    	রাখব আমার ঠাকুর ঘরে,
    রইব কাছে গো — আর অন্তরালে থাকব না।।
    
  • আমি নামের নেশায় শিশুর মতো

    বাণী

    আমি	নামের নেশায় শিশুর মতো ডাকি গো মা ব'লে
    	নাই দিলি তুই সাড়া মা গো নাই নিলি তুই কোলে।।
    		শুনলে 'মা' নাম জেগে উঠি
    		ব্যাকুল হয়ে বাইরে ছুটি
    মাগো	ঐ নামে মোর নয়ন দু'টি ভ'রে ওঠে জলে।।
    	ও নাম আমার মুখের বুলি ও নাম খেলার সাথি
    	ও নাম বুকে জড়িয়ে ধ'রে পোহাই দুখের রাতি।
    		মা হারানো শিশুর মতো
    		যপি ও নাম অবিরত
    মা	ঐ নামের মন্ত্র আমার বুকে কবচ হয়ে দোলে।।
    
  • আমি মুক্তা নিতে আসিনি মা

    বাণী

    (মা)	আমি, মুক্তা নিতে আসিনি মা ও মা তোর মুক্তি-সাগর কূলে।
    	মোর ভিক্ষা-ঝুলি হ’তে মায়ার মুক্তা মানিক নে মা তুলে।।
    		মা তুই, সবই জানিস অন্তর্যামী,
    		সেই চরণ-প্রসাদ ভিক্ষু আমি,
    	শবেরও হয় শিবত্ব লাভ মা তোর যে চরণ ছুঁলে।।
    	তুই অর্থ দিয়ে কেন ভুলাস এই পরমার্থ ভিখারিরে,
    	তোর প্রসাদী ফুল পাই যদি মা গঙ্গা ধারাও চাই না শিরে।
    		তোর শক্তিমন্ত্রে শক্তিময়ী
    		আমি হতে পারি ব্রহ্ম-জয়ী
    	সেই মাতৃনামের মহাভিক্ষু তোর মায়াতেও নাহি ভুলে।।
    
  • আয় নেচে নেচে আয় রে বুকে দুলালী মোর

    বাণী

    আয় নেচে নেচে আয় রে বুকে দুলালীমোর কালো মেয়ে
    দগ্ধ দিনেরবুকে যেমন আসে শীতল আঁধার ছেয়ে।।
    	আমার হৃদয়-আঙিনাতে
    	খেলবি মা তুই দিনে রাতে
    মোর সকল দেহ নয়ন হয়ে দেখবে মা তাই চেয়ে চেয়ে।।
    হাত ধরে মোর নিয়ে যাবি তোর খেলাঘর দেখবি মা
    এইটুকু তুই মেয়ে আমার কেমন করে হ’স অসীমা।
    	লুটে নিবি চতুর্ভূজা
    	আমার স্নেহ প্রেম-পূজা
    (মা) নাম ধরে তোর ডাকব মা যেই যেথায় থাকিস আসবি ধেয়ে।।
    
  • আর কত দুখ্ দেবে বল মাধব বল

    বাণী

    আর কত দুখ্ দেবে, বল মাধব বল বল মাধব বল।
    দুখ্ দিয়ে যদি সুখ পাও তুমি কেন আঁখি ছলছল॥
    	তব শ্রীচরণ তলে আমি চাহি ঠাঁই,
    	তুমি কেন ঠেল বাহিরে সদাই;
    আমি কি এতই ভার এ জগতে যে, পাষাণ তুমিও টল॥
    ক্ষুদ্র মানুষ অপরাধ ভোলে তুমি নাকি ভগবান,
    তোমার চেয়ে কি পাপ বেশি হ’ল (মোরে) দিলে না চরণে স্থান।
    	হে নারায়ণ! আমি নারায়ণী সেনা,
    	মোরে কুরুকুল দিতে ব্যথা কি বাজে না,
    (যদি) চার হাতে মেরে সাধ নাহি মেটে দু’চরণ দিয়ে দ’ল॥
    
  • আহার দেবেন তিনি রে মন

    বাণী

    		আহার দেবেন তিনি রে মন জিভ দিয়াছেন যিনি।
    		তোরে সৃষ্টি ক'রে তোর কাছে যে আছেন তিনি ঋণী।।
    		সারা জীবন চেষ্টা ক'রে,ভিক্ষা-মুষ্টি আনলি ঘরে
    (ও মন)	তাঁর কাছে তুই হাত পেতে দেখ কি দান দেন তিনি।।
    		না চাইতে ক্ষেতের ফসল পায় বৃষ্টির জল
    		তুই যে পেলি পুত্র-কন্যা তোরে কে দিল তা বল।
    		যাঁর করুণায় এত পেলি,তাঁরেই কেবল ভুলে গেলি
    (তোর)	ভাবনার ভার দিয়ে তাঁকে ডাক রে নিশিদিন-ই।।
    

  • এলো রে এলো ঐ রণ-রঙ্গিণী

    বাণী

    এলো রে এলো ঐ রণ-রঙ্গিণী শ্রীচন্ডী, চন্ডী এলো রে এলো ঐ
    অসুর সংহারিতে বাঁচাতে উৎপীড়িতে
    ধ্বংস করিতে সব বন্ধন বন্দী, শ্রীচন্ডী, চন্ডী, এলো রে এলো ঐ॥
    দনুজ দলনে চামুন্ডা এলো ঐ প্রলয় অগ্নি জ্বালি নাছিছে
    তাথৈ তাথৈ তাতা থৈ থৈ দুর্বলে বলে মা মাভৈঃ মাভৈঃ
    মুক্তি লভিবি সব শৃঙ্খল বন্দী, শ্রীচন্ডী, চন্ডী, এলো রে এলো ঐ॥
    রক্ত-রঞ্জিত অগ্নি শিখায় করালী কোন্ রসনা দেখা যায়।
    পাতাল তলের যত মাতাল দানব পৃথিবীতে এসেছিল হইয়া মানব
    তাদের দন্ড দিতে আসিয়াছে চন্ডীকা সাজিয়া চন্ডী, শ্রীচন্ডী, চন্ডী এলো রে॥
    
  • এলো রে শ্রী দুর্গা

    বাণী

    এলো রে শ্রী দুর্গা
    শ্রী আদ্যাশক্তি মাতৃরূপে পৃথিবীতে এলো রে
    গভীর স্নেহরস ধারায় কল্যাণ কৃপা করুণায় স্নিগ্ধ করিতে॥
    উর্ধ্বে উড়ে যায় শান্তির পতাকা
    শুভ্র শান্ত মেঘ আনন্দ বলাকা
    মমতার অমৃত লয়ে শ্যামা, মা হয়ে এলো রে
    সকলের দুঃখ দৈন্য হরিতে॥
    প্রতি হৃদয়ের শতদলে শ্রীচরণ ফেলে
    বন্ধন কারার দুয়ার ঠেলে।
    এলো রে দশভুজা সর্বমঙ্গলা মা হয়ে
    দুর্বলে দুর্জয় করিতে নিরন্নে অন্ন দিতে॥
    
  • ওরে সর্বনাশী মেখে এলি

    বাণী

    ওরে	সর্বনাশী! মেখে এলি এ কোন চুলোর ছাই!
    	শ্মশান ছাড়া খেলার তোর জায়গা কি আর নাই॥
    	মুক্তকেশী, কেশ এলিয়ে
    ওমা	বেড়াস কখন কোথায় গিয়ে
    আমি	এক নিমেষ তোকে নিয়ে (আমি) শান্তি নাহি পাই॥
    ওরে	হাড়-জ্বালানী মেয়ে, হাড়ের মালা কোথায় পেলি,
    	ভুবন-মোহন গৌরী রূপে কালি মেখে এলি!
    তোর	গায়ের কালি চোখের জলে
    আমি	ধুইয়ে দেব আয় মা কোলে;
    তোরে	বুকে ধরেও মরি জ্ব’লে, আমি দিই মা গালি তাই॥
    
  • কলঙ্কে মোর সকল দেহ হলো কৃষ্ণময়

    বাণী

    	কলঙ্কে মোর সকল দেহ হলো কৃষ্ণময়
    	শ্যামের নামে হউক এবার আমার পরিচয়।।
    		কলঙ্কিনীর তিলক এঁকে
    		কলঙ্ক-চন্দন মেখে'
    আমি	শোনাব গো ডেকে ডেকে কলঙ্কেরি জয়, কৃষ্ণ-কলঙ্কেরি জয়।।
    	ভুবনে মোর ঠাঁই পেয়েছি ভবন হতে নেমে'
    হয়ে	বৈরাগিনী আমার কৃষ্ণ-প্রিয়তমের প্রেমে।
    	যারে কৃষ্ণ টানে বিপুল টানে
    	সে কি কুলের বাধা মানে
    এই	বিশ্ববৃজে ভাগ্যবতী সেই শ্রীমতী হয়।।