বাণী

উম্মত আমি গুনাহগার তবু ভয় নাহি রে আমার।
আহমদ আমার নবী যিনি খোদ্ হবিব খোদার।।
যাঁহার উম্মত্ হ’তে চাহে সকল নবী,
তাঁহারি দামন ধরি’ পুলসরাত হব পার।।
	কাঁদিবে রোজ হাশরে সবে
	যবে ‘নফ্‌সি য়্যা নফ্‌সি’ রবে,
‘য়্যা উম্মতী’ ব’লে একা কাঁদিবেন আমার মোখতার।।
কাঁদিবেন সাথে মা ফাতেমা ধরিয়া আরশ্ আল্লার।
হোসায়নের খুনের বদলায় মাফী চাই পাপী সবাকার।
দোজখ্ হয়েছে হারাম যে-দিন পড়েছি কলেমা।
যেদিন হয়েছি আমি কোরানের নিশান-বর্দার।।

বাণী

উদার ভারত! সকল মানবে দিয়াছ তোমার কোলে স্থান।
পার্সি-জৈন-বৌদ্ধ-হিন্দু খ্রিস্টান-শিখ-মুসলমান।।
তুমি পারাবার, তোমাতে আসিয়া মিলেছে সকল ধর্ম জাতি;
আপনি সহিয়া ত্যাগের বেদনা সকল দেশের করেছ জ্ঞাতি;
নিজেরে নিঃস্ব করিয়া, হয়েছ বিশ্ব-মানব-পীঠস্থান।।
নিজ সন্তানে রাখি নিরন্ন, অন্য সবারে অন্ন দাও,
তোমার স্বর্ণ রৌপ্য মানিকে বিশ্বের ভান্ডার ভরাও;
আপনি মগ্ন ঘন তমসায় ভুবনে করিয়া আলোক দান।।
বক্ষে ধরিয়া কত সে যুগের কত বিজেতার গ্লানির স্মৃতি,
প্রভাত আশায় সর্বসহা মা যাইপছ দুখের কৃষ্ণাতিথি,
এমনি নিশীথে এসেছিলে বুকে আসিবে আবার সে ভগবান।।

বাণী

(পিয়া মোর) উচাটন মন ঘরে রয় না।
(পিয়া মোর) ডাকে পথে বাঁকা তব নয়না।।
	ত্যজিয়া লোক-লাজ
	সুখ-সাধ গৃহ-কাজ,
(প্রিয়া মোর) নিজ গৃহে বনবাস সয়না।।
	লইয়া স্মৃতির লেখা
	কত আর কাঁদি একা,
(পিয়া মোর) ফুল গেলে কাঁটা কেন যায় না।।

বাণী

উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় ওরে আমি কি তায় ভয় করি।
			ও ভাই আমি কি তায় ভয় করি।
পাক্কা ঈমান তক্তা দিয়ে গড়া যে আমার তরী।
			ও ভাই গড়া যে আমার তরী।।
‌‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু'র পাল তুলে,
ঘোর তুফানকে জয় ক'রে ভাই যাবই কূলে,
মোহাম্মদ মোস্তফা নামের (ও ভাই) গুণের রশি ধরি'।।
খোদার রাহে সঁপে দেওয়া ডুববে না মোর তরী,
সওদা ক'রে ভিড়বে তীরে সওয়াব-মাণিক ভরি'।
দাঁড় এ তরীর নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত,
উঠুক না মেঘ, আসুক বিপদ — যত বজ্রপাত,
আমি যাব বেহেশত্-বন্দরেতে রে এই সে কিশতিতে চড়ি'।।

বাণী

উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।
শতদল-শ্রভ্রা পদতল-লীনা, প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।।
	সহস্র কিরণ-তারে হানি’ ঝঙ্কার
	ধ্বনি তোলে অনাহত গভীর ওঙ্কার,
সেই সুরে উদাসীন, পরমা প্রকৃতি ধ্যান-নিমগ্না মহাযোগাসীনা।।
	আনন্দ-হংস বিমুগ্ধ গতিহীন
	স্থির হ’য়ে ব্যোমে শোনে সে জ্যোতির্বীণ,
ঝরা ফুল-অঞ্জলি তা’রি চরণে প্রণতা ধরণী বাণী-বিহীনা।।

বাণী

উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে
	বাজে ঘুমতি নদীর জলে।
বুনো হাঁসের পাখার মত মন যে ভেসে চলে
	সেই ঘুমতি নদীর জলে।।
মেঘ এসেছে আকাশ ভ'রে —
যেন শ্যামল ধেনু চরে
নাগিনীর সম বিজলি-ফনা তুলে
	নাচে,নাচে নাচে রে।
	মেঘ-ঘন গগন তলে।।
পাহাড়িয়া অজগর ছুটে আসে ঝর্‌ ঝর্‌ বেনো-জল্‌
দিয়ে করতালি প'রে পিয়াল পাতার মাথালি
ছিটায় জল,গেঁয়ো কিশোরীর দল।
রিনিক,ঝিনিক,বাজে চাবি আঁচলে
কাল নাগিনীর মত পিঠে বেনী দোলে
তীর-ধনুক হাতে বন-শিকারির সাথে
	মন ছুটে যায় বনতলে।।