উদার অম্বর দরবারে তোরই
বাণী
উদার অম্বর দরবারে তোরই প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা। শতদল-শ্রভ্রা পদতল-লীনা, প্রশান্ত প্রভাত বাজায় বীণা।। সহস্র কিরণ-তারে হানি’ ঝঙ্কার ধ্বনি তোলে অনাহত গভীর ওঙ্কার, সেই সুরে উদাসীন, পরমা প্রকৃতি ধ্যান-নিমগ্না মহাযোগাসীনা।। আনন্দ-হংস বিমুগ্ধ গতিহীন স্থির হ’য়ে ব্যোমে শোনে সে জ্যোতির্বীণ, ঝরা ফুল-অঞ্জলি তা’রি চরণে প্রণতা ধরণী বাণী-বিহীনা।।
উতল হ'ল শান্ত আকাশ তোমার কলগীতে
বাণী
উতল হ'ল শান্ত আকাশ তোমার কলগীতে বাদল ধারা ঝরে বুঝি তাই আজ নিশীথে।। সুর যে তোমার নেশার মত, মনকে দোলায় অবিরত, ফুলকে শেখায় ফুটতে গো, পাখিকে শিস দিতে।। কেন তুমি গানের ছলে বঁধু, বেড়াও কেঁদে? তীরের চেয়েও সুর যে তোমার প্রাণে অধিক বেঁধে। তোমার সুরে কোন সে ব্যথা, দিলো এতো বিহ্বলতা আমি জানি (ওগো) সে বারতা তাই কাদিঁ নিভৃতে।।
উজান বাওয়ার গান গো এবার
বাণী
উজান বাওয়ার গান গো এবার, গাস্নে ভাটিয়ালি আর গাস্নে ভাটিয়ালি। নূতন আশার চাঁদ উঠেছে কুম্ড়ো জালির ফালি যেন কুম্ড়ো জালির ফালি।। বান এসেছে, বাঁধ ভেঙেচে, নায়ে দোলা লাগে আড়-বাঁশিতে তান ছেড়ে তুই দাঁড়্ বেয়ে চল্ আগে দেখ্ জোয়ার-জলে ডু’বে গেছে চরের চোরাবালি।। কালো বউ-এর চোখ যেন, দেখ্ মৌরলা মাছ ভাসে গাঙ্চিল আর জল-পায়রা উড়ছে মুখের পাশে, শোন্ বউ কথা কও পাখি, মোদের করছে দূতিয়ালি।। জল নিয়ে বৌ দাঁড়িয়ে আছে, গাছে কচি ডাব লোক্সানেরই হিসাব দেখিস, লাভের কথা ভাব্, সাজ্ রে তামুক, নামুক দেয়া, দুক্ষু ত ইজমালি।।
উদার ভারত! সকল মানবে
বাণী
উদার ভারত! সকল মানবে দিয়াছ তোমার কোলে স্থান। পার্সি-জৈন-বৌদ্ধ-হিন্দু খ্রিস্টান-শিখ-মুসলমান।। তুমি পারাবার, তোমাতে আসিয়া মিলেছে সকল ধর্ম জাতি; আপনি সহিয়া ত্যাগের বেদনা সকল দেশের করেছ জ্ঞাতি; নিজেরে নিঃস্ব করিয়া, হয়েছ বিশ্ব-মানব-পীঠস্থান।। নিজ সন্তানে রাখি নিরন্ন, অন্য সবারে অন্ন দাও, তোমার স্বর্ণ রৌপ্য মানিকে বিশ্বের ভান্ডার ভরাও; আপনি মগ্ন ঘন তমসায় ভুবনে করিয়া আলোক দান।। বক্ষে ধরিয়া কত সে যুগের কত বিজেতার গ্লানির স্মৃতি, প্রভাত আশায় সর্বসহা মা যাইপছ দুখের কৃষ্ণাতিথি, এমনি নিশীথে এসেছিলে বুকে আসিবে আবার সে ভগবান।।
উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে
বাণী
উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে বাজে ঘুমতি নদীর জলে। বুনো হাঁসের পাখার মত মন যে ভেসে চলে সেই ঘুমতি নদীর জলে।। মেঘ এসেছে আকাশ ভ'রে — যেন শ্যামল ধেনু চরে নাগিনীর সম বিজলি-ফনা তুলে নাচে,নাচে নাচে রে। মেঘ-ঘন গগন তলে।। পাহাড়িয়া অজগর ছুটে আসে ঝর্ ঝর্ বেনো-জল্ দিয়ে করতালি প'রে পিয়াল পাতার মাথালি ছিটায় জল,গেঁয়ো কিশোরীর দল। রিনিক,ঝিনিক,বাজে চাবি আঁচলে কাল নাগিনীর মত পিঠে বেনী দোলে তীর-ধনুক হাতে বন-শিকারির সাথে মন ছুটে যায় বনতলে।।