উঠেছে কি চাঁদ সাঁঝ গগনে
বাণী
উঠেছে কি চাঁদ সাঁঝ গগনে আজিকে আমার বিদায় লগনে।। জানালা পাশে চাঁপার শাখে ‘বউ কথা কও’ পাখি কি ডাকে? ফুটেছে কি ফুল মালতী বকুল — আমার সাধের কুসুম বনে সাঁঝ গগনে।। তুলসী তলায় জ্বলেছে কি দীপ পরেছে আকাশ তারকার টিপ? হারিয়ে যাওয়া বঁধূ অবেলায় এলো কি ফিরে দেখিতে আমায়, ঝুরিছে বাঁশি পিলু বারোয়াঁয় — কেন গো আমার যাবার ক্ষণে।।
উদার ভারত! সকল মানবে
বাণী
উদার ভারত! সকল মানবে দিয়াছ তোমার কোলে স্থান। পার্সি-জৈন-বৌদ্ধ-হিন্দু খ্রিস্টান-শিখ-মুসলমান।। তুমি পারাবার, তোমাতে আসিয়া মিলেছে সকল ধর্ম জাতি; আপনি সহিয়া ত্যাগের বেদনা সকল দেশের করেছ জ্ঞাতি; নিজেরে নিঃস্ব করিয়া, হয়েছ বিশ্ব-মানব-পীঠস্থান।। নিজ সন্তানে রাখি নিরন্ন, অন্য সবারে অন্ন দাও, তোমার স্বর্ণ রৌপ্য মানিকে বিশ্বের ভান্ডার ভরাও; আপনি মগ্ন ঘন তমসায় ভুবনে করিয়া আলোক দান।। বক্ষে ধরিয়া কত সে যুগের কত বিজেতার গ্লানির স্মৃতি, প্রভাত আশায় সর্বসহা মা যাইপছ দুখের কৃষ্ণাতিথি, এমনি নিশীথে এসেছিলে বুকে আসিবে আবার সে ভগবান।।
উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে
বাণী
উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে বাজে ঘুমতি নদীর জলে। বুনো হাঁসের পাখার মত মন যে ভেসে চলে সেই ঘুমতি নদীর জলে।। মেঘ এসেছে আকাশ ভ'রে — যেন শ্যামল ধেনু চরে নাগিনীর সম বিজলি-ফনা তুলে নাচে,নাচে নাচে রে। মেঘ-ঘন গগন তলে।। পাহাড়িয়া অজগর ছুটে আসে ঝর্ ঝর্ বেনো-জল্ দিয়ে করতালি প'রে পিয়াল পাতার মাথালি ছিটায় জল,গেঁয়ো কিশোরীর দল। রিনিক,ঝিনিক,বাজে চাবি আঁচলে কাল নাগিনীর মত পিঠে বেনী দোলে তীর-ধনুক হাতে বন-শিকারির সাথে মন ছুটে যায় বনতলে।।
উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায়
বাণী
উঠুক তুফান পাপ-দরিয়ায় ওরে আমি কি তায় ভয় করি। ও ভাই আমি কি তায় ভয় করি। পাক্কা ঈমান তক্তা দিয়ে গড়া যে আমার তরী। ও ভাই গড়া যে আমার তরী।। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু'র পাল তুলে, ঘোর তুফানকে জয় ক'রে ভাই যাবই কূলে, মোহাম্মদ মোস্তফা নামের (ও ভাই) গুণের রশি ধরি'।। খোদার রাহে সঁপে দেওয়া ডুববে না মোর তরী, সওদা ক'রে ভিড়বে তীরে সওয়াব-মাণিক ভরি'। দাঁড় এ তরীর নামাজ, রোজা, হজ্ ও জাকাত, উঠুক না মেঘ, আসুক বিপদ — যত বজ্রপাত, আমি যাব বেহেশত্-বন্দরেতে রে এই সে কিশতিতে চড়ি'।।
উজান বাওয়ার গান গো এবার
বাণী
উজান বাওয়ার গান গো এবার, গাস্নে ভাটিয়ালি আর গাস্নে ভাটিয়ালি। নূতন আশার চাঁদ উঠেছে কুম্ড়ো জালির ফালি যেন কুম্ড়ো জালির ফালি।। বান এসেছে, বাঁধ ভেঙেচে, নায়ে দোলা লাগে আড়-বাঁশিতে তান ছেড়ে তুই দাঁড়্ বেয়ে চল্ আগে দেখ্ জোয়ার-জলে ডু’বে গেছে চরের চোরাবালি।। কালো বউ-এর চোখ যেন, দেখ্ মৌরলা মাছ ভাসে গাঙ্চিল আর জল-পায়রা উড়ছে মুখের পাশে, শোন্ বউ কথা কও পাখি, মোদের করছে দূতিয়ালি।। জল নিয়ে বৌ দাঁড়িয়ে আছে, গাছে কচি ডাব লোক্সানেরই হিসাব দেখিস, লাভের কথা ভাব্, সাজ্ রে তামুক, নামুক দেয়া, দুক্ষু ত ইজমালি।।