আধুনিক

  • অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে

    বাণী

    অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে।
    প্রদীপ-শিখা সম কাঁপিছে প্রাণ মম
    তোমায়, হে সুন্দর, বন্দিতে!
    সঙ্গীতে সঙ্গীতে।।
    তোমার দেবালয়ে কি সুখে কি জানি
    দু’লে দু’লে ওঠে আমার দেহখানি
    আরতি –নৃত্যের ভঙ্গীতে।
    সঙ্গীতে সঙ্গীতে।।
    পুলকে বিকশিল প্রেমের শতদল
    গন্ধে রূপে রসে টলিছে টলমল।
    তোমার মুখে চাহি আমার বাণী যত
    লুটাইয়া পড়ে ঝরা ফুলের মত
    তোমার পদতল রঞ্জিতে।
    সঙ্গীতে সঙ্গীতে।।
    

  • অনেক কথা বলার মাঝে লুকিয়ে আছে

    বাণী

    অনেক কথা বলার মাঝে লুকিয়ে আছে একটি কথা।
    বলতে নারি সেই কথাটি তাই এ মুখর ব্যাকুলতা।।
    	সেই কথাটি ঢাকার ছলে
    	অনেক কথা যাই গো ব’লে
    ভাসি আমি নয়ন-জলে বলতে গিয়ে সেই বারতা।।
    অবকাশ দেবে কবে কবে সাহস পাবে প্রাণে
    লজ্জা ভুলে সেই কথাটি বলব তোমায় কানে কানে।
    	মনের বনে অনুরাগে
    	কত কথার মুকুল লাগে
    সেই মুকুলের বুকে জাগাও ফুটে ওঠার ব্যাকুলতা।।
    
  • আকাশে ভোরের তারা মুখ পানে

    বাণী

    আকাশে ভোরের তারা মুখ পানে চেয়ে আছে
    ঝরা-ফুল অঞ্জলি পড়ে আছে,পা'র কাছে।
    	দেবতা গো,জাগো জাগো জাগো।।
    আঁধার-ঘোমটা খুলি শতদল আঁখি তুলি'
    পৃথিবী প্রসাদ যাচে দেবতা গো,জাগো।।
    কপোত-কণ্ঠে শোন তব বন্দনা বাজে
    তোমারে হেরিতে ঊষা দাঁড়ায় বধূর সাজে।
    দেবতা,তোমার লাগি'আজি আছি নিশি জাগি’'
    ভীরু এ মনের কলি হের,দল মেলিয়াছে।
    	দেবতা গো,জাগো।।
    

  • আজ শেফালির গায়ে হলুদ

    বাণী

    আজ শেফালির গায়ে হলুদ
    	উলু দেয় পিক পাপিয়া।
    প্রথম প্রণয়-ভীরু বালা
    	লাজে ওঠে কাঁপিয়া।।
    বনভূমি বাসর সাজায়
    	ফুলে পাতায় লালে নীলে,
    ঝরে শিশির আশিস-বারি
    	গগন-ঝারি ছাপিয়া।।
    বৃষ্টি-ধোওয়া সবুজ পাতার
    	শাড়ি করে ঝলমল,
    ননদিনী ‘বৌ কথা কও’
    	ডাকে আড়াল থাকিয়া।।
    দেখতে এলো দিগ্‌বালিকা	
    	সাদা মেঘের রথে ঐ,
    শরৎ-শশীর মঙ্গল-দীপ
    	জ্বলে গগন ব্যাপিয়া।।
    অতীত্ প্রণয়-স্মৃতি স্মরি’
    	কেঁদে যায় আশিন-হাওয়া,
    উড়ে বেড়ায় বর সে ভ্রমর
    	কমল-পরাগ মাখিয়া।।
    
  • আজ শ্রাবনের লঘু মেঘের সাথে

    বাণী

    আজ	শ্রাবনের লঘু মেঘের সাথে মন চলে মোর ভেসে',
    	রেবা নদীর বিজন তীরে মালবিকার দেশে।।
    		মন ভেসে যায় অলস হাওয়ায়
    		হালকা-পাখা মরালী-প্রায়
    	বিরহিনী কাদেঁ যথা একলা এলাকেশে।।
    	কভু মেঘের পানে কভু নদীর পানে চেয়ে,'
    	লুকিয়ে যথা নয়ন মোছে গায়েঁর কালো মেয়ে,
    	একলা বধূ বসে থাকে যথায় বাতায়নে
    				বাদল দিনের শেষে।।
    
  • আজ সকালে সূর্য ওঠা সফল হলো মম

    বাণী

    আজ সকালে সূর্য ওঠা সফল হলো মম
    ঘরে এলে ফিরে পরবাসী প্রিয়তম।।
    	আজ প্রভাতের কুসুমগুলি
    	সফল হলো ডালায় তুলি'
    সাজির ফুলে আজ এ মালা হবে অনুপম।।
    এতদিনে সুখের হলো প্রভাতী শুকতারা
    ললাটে মোর সিঁদুর দিলো ঊষার রঙের ধারা।
    	আজকে সকল কাজের মাঝে
    	আনন্দেরই বীনা বাজে
    দেবতার বর পেয়েছি আজ তপস্বিনীর সম।।
    
  • আজি কুসুম-দীপালি জ্বলিছে বনে

    বাণী

    আজি		কুসুম-দীপালি জ্বলিছে বনে।
    জ্বলে		দীপ-শিখা আম্র-মুকুলে
    রাঙা		পলাশ অশোকে বকুলে,
    আসে		সে আলোর টানে বন-তল
    		মৌমাছি প্রজাপতি দলে দল
    পুড়ে		মরিতে সে রূপ-শিখাতে
    প্রাণ		সঁপিতে বাসন্তিকাতে;
    		পরিমল অঞ্জন মাখিয়া নয়নে
    হের		ঝিমায় আকাশ চাঁদের স্বপনে।।
    জ্বলে		গগনে তারার দীপালি
    আজি		ধরাতে আকাশে মিতালি
    ধরা		চাঁপার গেলাস ভরিয়া
    মধু		উর্ধ্বে তুলে গো ধরিয়া
    পান		করিতে সে মধু পরীরা
    আসে		নেমে কাননে স-শরীরা;
    		বাজে উৎসব বাঁশি গগনে পবনে
    		হের ঝিমায় আকাশ চাঁদের স্বপনে।।
    
  • আজি বাদল বঁধূ এলো শ্রাবণ-সাঁঝে

    বাণী

    আজি বাদল বঁধূ এলো শ্রাবণ-সাঁঝে —
    নীপের দীপ ঢাকি’ আঁচল ভাঁজে।।
    	জ্বালি’ হেনার ধুনা
    	যাচি’ কার করুণা
    বন-তুলসী তলে এলে পূজারিণী সাজে।।
    সেদিন এমনি সাঁঝে মোর বেদীর মূলে
    প্রিয়া জ্বালিলে এ দীপ, তাহা গেছ কি ভুলে?
    	সেই সন্ধ্যা-স্মৃতি
    	সে যে করুণ গীতি,
    দূরে দাদুরি আনে বহি’ মরম মাঝে।।
    
  • আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে

    বাণী

    আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে
    	আধখানা চাঁদ নিচে
    	প্রিয়া তব মুখে ঝলকিছে
    গগনে জ্বলিছে অগণন তারা
    	দু’টি তারা ধরণীতে
    	প্রিয়া তব চোখে চমকিছে।।
    তড়িৎ-লতার ছিঁড়িয়া আধেকখানি
    জড়িত তোমার জরীণ ফিতায় রানী!
    অঝোরে ঝরিছে নীল নভে বারি
    	দুইটি বিন্দু তারি
    	প্রিয়া তব আঁখি বরষিছে।।
    মধুর কণ্ঠে বিহগ বিলাপ গাহে,
    গান ভুলি’ তা’রা তব অঙ্গনে চাহে,
    তাহারও অধিক সুমধুর সুর তব
    	চুড়ি কঙ্কনে ঝনকিছে।।
    

  • আঁধার রাতে দেবতা মোর

    বাণী

    আঁধার রাতে দেবতা মোর এসে গেছে চ’লে
    রেখে গেছে চরণ-চিহ্ন শূন্য গৃহ-তলে।।
    	জেগে দেখি বুকের কাছে
    	পূজার মালা প’ড়ে আছে
    ফেলে গেছে মালাখানি বুঝি খানিক প’রে গলে।।
    তার অঙ্গের সুবাস ভাসে মন্দির-অঙ্গনে,
    তাহার ছোঁওয়া লেগে আছে কুমকুম-চন্দনে।
    	অপূর্ণ মোর প্রণামখানি
    	দেবো কবে নাহি জানি,
    সে আস্‌বে বুঝি বাসনা-ধূপ পুড়িয়া শেষ হলে’।।
    
  • আঁধার রাতের তিমির দুলে আমার মনে

    বাণী

    আঁধার রাতের তিমির দুলে আমার মনে।
    দুলে গো আমার ঘুমে -  জাগরণে॥
    হতাশ-ভরা বাতাস বহে,
    আমার কানে কি কথা কহে;
    দিনগুলি মোর যায় যে ঝ’রে যায় —
    ওগো যায় যে ঝ’রে ঝরা পাতার সনে॥
    গিয়াছে চলিয়া সুখে যাহারা ছিল গো সাথি,
    গিয়াছে নিভিয়া জ্বলিতেছিল যে শিয়রে বাতি।
    স্মৃতির মালার ফুল শুকাইয়া,
    একে একে হায় পড়িছে ঝরিয়া;
    বিদায়-বেলা শুনিয়ে বাঁশি ক্ষণে ক্ষণে॥
    
  • আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়

    বাণী

    	আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়, চাঁদ নেহারিয়া প্রিয়
    	মোরে যদি মনে পড়ে, বাতায়ন বন্ধ করিয়া দিও।।
    		সুরের ডুরিতে জপমালা সম
    		তব নাম গাঁথা ছিল প্রিয়তম,
    	দুয়ারে ভিখারি গাহিলে সে গান, তুমি ফিরে না চাহিও।।
    	অভিশাপ দিও, বকুল-কুঞ্জে যদি কুহু গেয়ে ওঠে,
    	চরণে দলিও সেই যুঁই গাছে আর যদি ফুল ফোটে।
    		মোর স্মৃতি আছে যা কিছু যেথায়
    		যেন তাহা চির-তরে মুছে যায়,
    (মোর)	যে ছবি ভাঙিয়া ফেলেছ ধূলায় (তারে) আর তু’লে নাহি নিও।।
    
  • আমার আছে এই ক’খানি গান

    বাণী

    আমার আছে এই ক’খানি গান
    তা’ দিয়ে কি ভর’বে তোমার প্রাণ।।
    		অনেক বেশি তোমার দাবি
    		শূন্য হাতে তাইতো ভাবি,
    কি দান দিয়ে ভাঙবো তোমার গভীর অভিমান।।
    	তুমি চাহ গভীর ব্যাকুলতা
    	আমার কাছে বলার দুটি কথা।
    		যে বাঁশরি গায় অবিরাম
    		প্রিয়তম তোমারি নাম
    যাবার বেলায় তোমায় দিলাম সেই বাঁশরি খান।।
    

  • আমার ঘরের মলিন দীপালোকে

    বাণী

    আমার ঘরের মলিন দীপালোকে
    জল দেখেছি যেন তোমার চোখে।।
    	বল পথিক বল বল
    	কেন নয়ন ছল ছল
    কেন শিশির টলমল কমল-কোরকে।।
    তোমার হাসির তড়িৎ আলোকে
    মেঘ দেখেছি তব মানস-লোকে।
    	চাঁদনি রাতে আনো কেন
    	পুবের হাওয়ার কাঁদন হেন?
    ধূলি ঝড়ে ঢাকল যেন ফুলেল বসন্তকে।।
    
  • আমার দেওয়া ব্যথা ভোলো

    বাণী

    আমার দেওয়া ব্যথা ভোলো।
    আজ যে যাবার সময় হলো।।
    নিব্‌বে যখন আমার বাতি 
    আসবে তোমার নূতন সাথি, 
    আমার কথা তা'রে বলো।।
    ব্যথা দেওয়ার কী যে ব্যথা 
    জানি আমি, জানে দেবতা।
    জানিলে না কী অভিমান 
    করেছে হায় আমায় পাষাণ, 
    দাও যেতে দাও, দুয়ার খোলো।।
    
  • আমার মালায় লাগুক তোমার

    বাণী

    	আমার মালায় লাগুক তোমার মধুর হাতের ছোঁওয়া
    	ঘিরুক তোমায় মোর আরতি পূজা-ধূপের ধোঁওয়া।।
    		পূজায় ব'সে দেব-দেউলে
    		তোমায় দেখি মনের ভুলে
    প্রিয়	তুমি নিলে আমার পূজা হবে তারই লওয়া
    		হবে দেবতারই লওয়া।।
    		তুমি যেদিন প্রসন্ন হও ঠাকুর চাহেন হেসে
    	কাঁদলে তুমি, বুকে আমার দেবতা কাদেঁন এসে।
    		আমি অন্ধকারে ঠাকুর পুজে
    		ঘরের মাঝে পেলাম খুজেঁ
    	সে যে তুমি, আমার চির অবহেলা-সওয়া।।
    

  • আমি গগন গহনে সন্ধ্যা-তারা

    বাণী

    আমি	গগন গহনে সন্ধ্যা-তারা
    	কনক গাঁদার ফুল গো।
    	গোধূলির শেষে হেসে উঠি আমি
    	এক নিমেষের ভুল গো।
    আমি	কণিকা,
    আমি	সাঁঝের অধরে ম্লান আনন্দ-কণিকা
    আমি	অভিমানিনীর খুলে ফেলে দেওয়া মণিকা
    আমি	দেব-কুমারীর দুল গো।।
    	আলতা রাখার পাত্র আমার আধখানা চাঁদ ভাঙা
    	তাহারি রং গড়িয়ে পরে (ঐ) অস্ত-আকাশ রাঙা।
    আমি	একমুঠো আলো কৃষ্ণা-সাঁঝের হাতে
    আমি	নিবেদিত ফুল আকাশ-নদীতে রাতে
    	ভাসিয়া বেড়াই যাঁর উদ্দেশে গো
    	তার পাই না চরণ-মূল।।
    
  • আমি চাঁদ নহি চাঁদ নহি অভিশাপ

    বাণী

    	আমি চাঁদ নহি, চাঁদ নহি অভিশাপ
    	শূন্য হৃদয়ে আজো নিরাশায় আকাশে করি বিলাপ।।
    		শত জনমের অপূর্ণ সাধ ল'য়ে
    আমি	গগনে কাদিঁ গো ভুবনের চাঁদ হয়ে
    	জোছনা হইয়া ঝরে গো আমার অশ্রু বিরহ-তাপ।।
    	কলঙ্কহয়ে বুকে দোলে মোর তোমার স্মৃতির ছায়া
    	এত জোছনায় ঢাকিতে পারিনি তোমার মধুর মায়া।
    		কোন সে সাগর মন্থন শেষে মোরে
    		জড়াইয়া যেন উঠেছিলে প্রেমভরে
    হায়	তুমি গেছ চলে বুকে তবু দোলে তব অঙ্গের ছাপ।।
    
  • আমি জানি তব মন বুঝি তব ভাষা

    বাণী

    	আমি জানি তব মন বুঝি তব ভাষা
    	তব কঠিন হিয়ার তলে জাগে কি গভীর ভালোবাসা।।
    	ওগো উদাসীন! আমি জানি তব ব্যথা
    	আহত পাখির বুকে বাণ বিধেঁ কোথা
    	কোন অভিমান ভুলিয়াছ তুমি ভালোবাসিবার আশা।।
    তুমি	কেন হানো অবহেলা অকারন আপনাকে,
    প্রিয়	যে হৃদয়ে বিষ থাকে সে হৃদয়ে অমৃত থাকে।
    	তব যে বুকে জাগে প্রলয় ঝড়ের জ্বালা
    	আমি দেখেছি যে সেথা সজল মেঘের মালা
    ওগো	ক্ষুধাতুর আমারে আহুতি দিলে
    	মিটিবে কি তব পরানের পিপাসা।।
    
  • আমি তব দ্বারে প্রেম-ভিখারি

    বাণী

    আমি তব দ্বারে প্রেম-ভিখারি
    নয়নের অনুরাগ-দৃষ্টির সাথে চাহি নয়ন-বারি।।
    তব পুষ্পিত তনুতে,হৃদয় -কমলে
    গোপনে যে প্রেম-মধু উথলে
    তোমার কাছে সেই অমৃত যাচে তৃষিত এ পথচারী।।
    জনম জনম আমি রূপ ধ'রে আসি গো,
    	তোমারি বিরহে কাঁদিতে,
    রাহুর মত আমি আসি না
    	বাহু-পাশে বাঁধিতে।
    আমি ফুলের মধু চাহি,ছিঁড়ি না ফুল গো,
    তদূরে রহি,গাহি গান বন-বুলবুল গো,
    মনোবনে আছে তব নন্দন-পারিজাত,আমি তা'রি পূজারি।।