বন্ধু আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা
বাণী
বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে আম কুড়ানো খেলা। আম কুড়াইবার যাইতাম দুইজন নিশি-ভোরের বেলা।। জোষ্ঠি মাসের গুমোঁট রে বন্ধু আস্ত নাকো নিদ রাত্রে আস্ত নাকো নিদ্ আম-তলায় এক চোর আইস্যা কাঁট্ত প্রাণে সিঁদ্ (আর) নিদ্রা গেলে ফেল্ত সে চোর আঙিনাতে ঢেলা।। আমরা দুইজন আম কুড়াইতাম, ডাক্ত কোকিল গাছে, ভোলো যদি — বিহান বেলার সূয্যি সাক্ষী আছে, (তুমি) পায়ের কাছে আম ফেইল্যা গায়ে দিতে ঠেলা।। আমার বুকের আঁচল থাইক্যা কাইড়া নিতে আম, বন্ধু, আজও পাই নাই দাসী সেই না আমের দাম, (আজ) দাম চাইবার গিয়া দেখি তুমি দিছ মেলা।। নিশি জাইগ্যা বইস্যা আছি, জোষ্ঠি মাসের ঝড়ে সেই না গাছের তলায় বন্ধু এখনো আম পড়ে তুমি কোথায় আমি কোথায় দুইজনে একেলা।।
বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এলো ঐ
বাণী
বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ, নবযুগ ঐ এলো ঐ এলো ঐ রক্ত যুগান্তর রে। বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়, শোন অভয় ঐ রথ-ঘর্ঘর রে।। রে বধির! শোন পেতে কান ওঠে ঐ কোন মহাগান, হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে। জগতে জাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া, ভাঙ্ পাহারা মায়ার কারা-ঘর রে। যা আছে যাক্ না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়, নিশান দুলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে।। সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীম আবেগে উঠনু জেগে পাষাণ ভেঙে প্রাণ-ঝরা নির্ঝর রে। ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন, স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে। যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায় তাদের শোনাই প্রাণ-জাগা মন্তর রে।। ঝড়ের ঝাঁটার ঝাণ্ডা নেড়ে মাভৈঃ বানীর ডঙ্কা মেরে শঙ্কা ছেড়ে হাঁক প্রলয়ঙ্কর রে। তোদের ঐ চরণ-চাপে যেন ভাই মরণ কাঁপে মিথ্যা পাপের কণ্ঠ চেপে ধর্ রে। শোনা তোর বুক-ভরা গান জাগা তোর দেশ-জোড়া প্রাণ, দে বলিদান প্রাণ ও আত্মপর রে।। মোরা ভাই বাউল চারণ মানি না শাসন বারণ, জীবন মরণ মোদের অনুচর রে। দেখে ঐ ভয়ের ফাঁসি হাসি জোর জয়ের হাসি, অ-বিনাশী নাইকো মোদের ডর রে, গেয়ে যাই গান গেয়ে যাই মরা প্রাণ উট্কে দেখাই, ছাই-চাপা ভাই অগ্নি ভয়ঙ্কর রে।। খুঁড়ব কবর তুড়ব শ্মশান মড়ার হাড়ে নাচাব প্রাণ, আনব বিধান নিদান কালের বর রে শুধু এই ভরসা রাখিস মরিস্নি ভির্মি গেছিস ঐ শুনেছিস ভারত বিধির স্বর রে। ধর্ হাত ওঠ্ রে আবার দুর্যোগের রাত্রি কাবার, ঐ হাসে মা'র মূর্তি মনোহর রে।।
বসন্ত এলো এলো এলো রে
বাণী
বসন্ত এলো এলো এলো রে পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে। মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে ভ্রমর গুঞ্জে গুনগুন গানে।। পিয়া পিয়া ডেকে ওঠে পাপিয়া মহুল, পলাশ বন-ব্যাপিয়া সুরভিত সমীরণ চঞ্চল উন্মন আনে নব-যৌবন প্রাণে।। বেণুকার বনে বাঁশি বাজে বনমালী এলো বন-মাঝে নাচে তরু-লতিকা যেন গোপ-গোপিকা রাঙা হয়ে রঙের বানে।।
বল সখি বল ওরে স'রে যেতে বল
বাণী
বল সখি বল ওরে স'রে যেতে বল। মোর মুখে কেন চায় আঁখি-ছলছল, ওরে স'রে যেতে বল।। পথে যেতে কাঁপে গা শরমে জড়ায় পা, মনে হয় সারা পথ হয়েছে পিছল ওরে স'রে যেতে বল।। জল নিতে গিয়ে সই ওর চোখে চেয়ে রই সান-বাঁধা ঘাট যেন কাঁপে টলমল ওরে স'রে যেতে বল।। প্রথম বিরহ মোর চায় কি ও চিত-চোর; চাঁদিনী চৈতী রাতে আনে সে বাদল স'রে যেতে বল ওরে স'রে যেতে বল।।