বাণী

তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।।
	চেয়ে’ চেয়ে’ দেখি ফোটে যবে ফুল
	ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
মেঘ হেরি’ ঝুরে’ চাতকিনী, মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।।
জানে সূর্যেরে পাবে না তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে’ চেয়ে’ দেখে তার দেবতারে দেখিয়াই সে যে সুখী।
	হেরিতে তোমার রূপ–মনোহর
	পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর।
মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর নয়নের সেই সাধ।।

বাণী

তোর কালো রূপ লুকাতে মা বৃথাই আয়োজন।
ঢাকতে নারে ও রূপ, কোটি চন্দ্র তপন।।
	মাখিয়ে আলো আমার চোখে
	লুকিয়ে রাখিস তোর কালোকে,
তোর অতল কালো রূপে মাগো বিশ্ব নিমগন।।
আঁধার নিশীথ সে যেন তোর কালো রূপের ধ্যান
তোর গহন কালোয় গাহন ক’রে জুড়ায় ধরার প্রাণ।
হেরি তোর কালো রূপ স্নিগ্ধ-করা
	শ্যামা হ’ল বসুন্ধরা,
নিবল কোটি সূর্য, তোরে খুঁজে অনুক্ষণ।।

বাণী

তুম প্রেমকে হো ঘনশ্যাম ম্যায় প্রেম কি শ্যাম-প্যায়ারী।
প্রেমকা গান তুমহারে দান ম্যায় হুঁ প্রেম-ভিখারি।।
	হৃদয় বিচমে যমুনা তীর
	তুমহারি মুরলী বাজে ধীর,
নয়ন নীর কি বহত যমুনা প্রেম সে মাতোয়ারী।।
যুগ যুগ হোয়ে তুমহারি লীলা মেরে হৃদয় বনমে,
তুমহারে সুন্দর-মন্দির মোহন সোহত মেরে মনমে।
	প্রেম-নদী নীর নিত বহি যায়
	তুমহারে চরণ কো কবহুঁ না পায়,
রোয়ে শ্যাম-প্যায়ারী সাথ ব্রিজনারী আও মুরলীধারী।।

বাণী

তুমি আমার সকাল বেলার সুর
হৃদয় অলস–উদাস–করা অশ্রু ভারাতুর।।
ভোরের তারার মত তোমার সজল চাওয়ায়,
ভালোবাসার চেয়ে সে যে কান্না পাওয়ায়
রাত্রি–শেষের চাঁদ তুমি গো বিদায়–বিধুর।।
তুমি আমার ভোরের ঝরা ফুল
শিশির–নাওয়া শুভ্র–শুচি পূজারিণীর তুল।
অরুণ তুমি, তরুণ তুমি, করুণ তারো চেয়ে
হাসির দেশে তুমি যেন বিষাদ–লোকের মেয়ে
তুমিইন্দ্র–সভার মৌন–বীণা নীরব নূপুর।।

বাণী

	তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
	তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
ঐনূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়
	তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
	আস্‌ল এবার অনাগত প্রলয়–নেশায় নৃত্য–পাগল,
	সিন্ধু–পারের সিংহ–দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল!
	মৃত্যু–গহন অন্ধকুপে, মহাকালের চন্ড–রূপে ধূম্র–ধূপে
	বজ্র–শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!
				ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর!
				তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
	দ্বাদশ রবির বহ্নি–জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন–কটায়,
	দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়!
		বিন্দু তাহার নয়ন –জলে
		সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
			কপোল–তলে!
	বিশ্ব –মায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর ‘পর –
			হাঁকে ঐ “জয় প্রলয়ংকর!”
			তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
মাভৈঃ, ওরে মাভৈঃ, মাভৈঃ, মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে
জরায়–মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ–লুকানো ঐ বিনাশে।
		এবার মহা–নিশার শেষে
		আসবে ঊষা অরুণ হেসে
			করুণ্ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু–চাঁদের কর!
			আলো তার ভরবে এবার ঘর!
			তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!

বাণী

তব	চলার পথে আমার গানের ফুল ছড়িয়ে যাই গো।
তারা	ধুলায় প’ড়ে কেঁদে বলে ‘তোমার পরশ (আল্‌তা) হ’তে চাই গো।।
		ওরা রাঙা হ’য়ে অনুরাগের রসে
		তোমার চরণ-তলে পড়ে খ’সে,
	ওদের দ’লে যেও, নাই যদি হয় বক্ষে তেমার ঠাঁই গো।।
ওরা	বুক পেতে দেয় পায়ের কাছে, অশ্রু-টলমল,
বলে	‘ধূলির পথে চলো না গো, ফুলেরপেথে চল।’
	(তুমি)	চরণ ফেল কেন ভয়ে ভয়ে
		বিরহ মোর ফুটেছে ফুল হ’য়ে,
	কাঁটা আছে আমার বুকে, ফুলে কাঁটা নাই গো।।