বাণী

তোমার কবরে প্রিয় মোর তরে একটু রাখিও ঠাঁই।
মরণে যেন সে পরশ পাই গো জীবনে যা পাই নাই।।
	তোমারে চাহিয়া ওগো প্রিয়তম
	কাঁদিয়া আমার কাটিল জনম,
কেঁদেছি বিরহে এবার যেন গো মিলনে কাঁদিতে পাই।।
ঐ কবরের বাসর ঘরে গো তোমার বুকের কাছে
কাঁদিবে লায়লী, মজনু তোমার য’দিন ধরণী আছে।
	যে যাহারে চায় কেন নাহি পায়,
	কেন হেথা প্রেম-ফুল ঝ’রে যায় —
প্রেমের বিধাতা থাকে যদি কেউ শুধাইব তারে তাই।।

নাটিকা: ‌‘লায়লী মজনু’

বাণী

তোমার বাণীরে করিনি গ্রহণ ক্ষমা কর হজরত।
মোরা	ভুলিয়া গিয়াছি তব আদর্শ, তোমারি দেখানো পথ ॥
	বিলাস-বিভব দলিয়াছ পায় ধূলি সম তুমি, প্রভু,
	তুমি চাহ নাই আমরা হইব বাদশা-নবাব কভু।
	এই ধরণীর ধন-সম্ভার - সকলেরি তাহে সম অধিকার;
	তুমি বলেছিলে ধরণীতে সবে সমান পুত্র-বৎ ॥
প্রভু	তোমার ধর্মে অবিশ্বাসীরে তুমি ঘৃণা নাহি ক’রে
	আপনি তাদের করিয়াছ সেবা ঠাঁই দিয়ে নিজ ঘরে।
	ভিন্ ধর্মীর পূজা-মন্দির, ভাঙিতে আদেশ দাওনি, হে বীর,
প্রভু	আমরা আজিকে সহ্য করিতে পারিনে’ক পর-মত ॥
	তুমি চাহ নাই ধর্মের নামে গ্লানিকর হানাহানি,
	তলোয়ার তুমি দাও নাই হাতে, দিয়াছ অমর বাণী।
	মোরা ভুলে গিয়ে তব উদারতা
	সার করিয়াছি ধর্মন্ধতা,
	বেহেশ্‌ত্‌ হ’তে ঝরে নাকো আর তাই তব রহমত ॥

বাণী

তোমা বিনা মাধব রহিতে পারি না আর।
বায়ু বিনা যেমন বাঁচে না জীবন তেমনি আপন তুমি যে আমার॥
	মেঘ বিনা চাতকিনী মরে যায়,
	জল বিনা যেমন শতদল ঝরে যায়,
তিল্ তিল্ করি মরিতেছি আমি যে তেমনি বিরহে তোমার॥
তুমি ছাড়া প্রীতম্ মনে হয় কেহ মোর নাহি এ নিখিলে;
নিভে গেছে রবি-শশী, ডুবে গেছে পৃথিবী প্রলয়-সলিলে।
আর সকলের, তুমি প্রভু, ধ্রুব-জ্যোতি;
			কৃষ্ণ নয়ন-তারা তুমি যে মীরার॥

বাণী

তোমার আঁখির মত আকাশের দু’টি তারা
চেয়ে থাকে মোর পানে নিশীথে তন্দ্রাহারা
		সে কি তুমি? সে কি তুমি??
ক্ষীণ আঁখি–দীপ জ্বালি’ বাতায়নে জাগি একা,
অসীম অন্ধকারে খুঁজি তব পথ রেখা;
সহসা দখিনা বায়ে চাঁপা–বনে জাগে সাড়া।
		সে কি তুমি? সে কি তুমি??
বৈশাখী–ঝড়ের রাতে চমকিয়া উঠি জেগে’
বুঝি অশান্ত মম আসিলে ঝড়ের বেগে,
ঝড় চ’লে যায় কেঁদে ঢালিয়া শ্রাবণ ধারা
		সে কি তুমি? সে কি তুমি??

বাণী

তুই কে ছিলি তাই বল?
কোন কাননের পুষ্পরানী কোন সরসীর জল।।
তুই কি ছিলি কবিতা আর আমি চরণ তা'রি
তুই কি ছিলি পিয়াসি শুক আমি আতুর সারী
তুই কি দুঃখী দুয়োরানী আমি চোখের জল।।
	কোন বরষার সিক্ত প্রাতে
	কোন শরতের জোছনা রাতে
কোন জগতের অরুণ ঊষার প্রথম দেখা বল।।
নতুন মোদের নতুন ক'রে পরিচয়ের পালা
কন্ঠে মোদের মিলন-বাণী হাতে মিলন-মালা
মোরা এক বিরহীর দু'টি চোখের ঝরা দু'টি মুক্তাফল।।

বাণী

তুমি বেণুকা বাজাও কার নাম লয়ে শ্যাম —
মোর সাধ যায় হরি আমি যদি সেই কিশোরী হইতাম।।
	সেই প্রেম মোরে দাও গো শ্রী হরি,
	যে প্রেমে নেমে আস রূপ ধরি',
যে প্রেমে কাঁদো যমুনার তীরে তুমি লয়ে 'রাধা রাধা' নাম।।
সেই প্রেম দাও যে প্রেমে ভোল তুমি হে শ্রী ভগবান,
রাধার দুয়ারে ভিক্ষা চাহিয়া নিতি সহ অপমান।
	মোর আঁখি হয়ে উঠুক কমল,
	দাও প্রিয় মোরে সেই আঁখিজল;
দাও সে বিরহ যে বিরহে এই ধরা হয় ব্রজধাম।।