বাণী

	তোমার গরবে গরব আমার আল্লা পরম স্বামী।
(মোর)	অন্তর বাহির জুড়িয়ে থেক যেন দিবাযামী।।
	আমি যদি পথ ভুলি, আল্লা, হাত ধ’রে ফিরাইও
	মোর নিবেদিত দেহ-মন-প্রাণ কবুল করিও প্রিয়,
(তবে)	পরমাশ্রয় ছেড়ে যেন আর ধূলি পথে নাহি নামি।।
	প্রেম যদি মোরে নাহি দাও, খোদা, পরম বিরহ দিও,
	পাষাণ এ প্রাণ তোমার বিরহে তিলে তিলে গলাইও।
	কোথায় দুনিয়া কোথা আখেরাতে, তুমি ছাড়া কিছু নই
	তুমি লা-শরিক — এই বিশ্বাস চিরদিন যেন পাই,
	রহমত দিয়া ফুল ফুটাইও ভুল যদি করি আমি।।

বাণী

তুমি	সারাজীবন দুঃখ দিলে, তব দুঃখ দেওয়া কি ফুরাবে না!
যে	ভালোবাসায় দুঃখে ভাসায় সে কি আশা পূরাবে না॥
মোর	জনম গেল ঝুরে ঝুরে - লোকে লোকে ঘুরে ঘুরে,
তব	স্নিগ্ধ পরশ দিয়ে কি, নাথ, দগ্ধ হিয়া জুড়াবে না॥
তুমি	অশ্রুতে যে-বুক ভাসালে —
সেই	বক্ষে এসো দিন ফুরালে
তুমি	আঘাত দিয়ে ফুল ঝরালে, হাত দিয়ে কি কুড়াবে না॥

বাণী

		তোমার নাম নিয়ে খোদা আমি যে কাজ করি।
		আমার তা’তে নাই লাজ ভয় মরি কিম্বা তরি।।
		আমার ভালো মন্দ তুমি খোদা জানো,
(তাই)	দুখের শমন দিয়ে এমন বুকের কাছে টানো, (খোদা)
(আমি)	দুঃখ দেখে তোমার থেকে না যেন যাই সরি’।।
		সুখ-দুঃখ যশ নিন্দা মান ও অপমান
		আমার ব’লে নাইতো কিছু সবই তোমার দান,
(যত)		বাইরে আঘাত আসে তত তোমায় যেন ধরি।।
(এই)		ফেরেববাজীর দনিয়া ভরা কেবল মায়া ফাঁকি
(তাই)	তোমার নামের বাতি জ্বেলে বুকের কাছে রাখি,
		ঐ নামের আঁচের আমি যেন মোমের মত ঝরি।
খোদা		তোমার প্রেমে গ’লে যেন মোমের মত ঝরি।।

বাণী

তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় না তো কভু।
আমরা অবোধ, অন্ধ মায়ায় তাই তো কাঁদি প্রভু।।
তোমার মতই তোমার ভুবন
চির পূর্ণ, হে নারায়ণ!
দেখতে না পায় অন্ধ নয়ন তাই এ দুঃখ প্রভু।।
ঝরে যে ফল ধূলায় জানি, হয় না তাহা (কভু) হারা,
ঐ ঝরা ফলে নেয় যে জনম তরুণ তরুর চারা —
তারা হয় না কভু হারা।
হারালো (ও) মোর প্রিয় যারা,
তোমার কাছে আছে তারা;
আমার কাছে নাই তাহারা — হারায়নিক’ তবু।।

বাণী

তুমি	কোন্ পথে এলে হে মায়াবী কবি
	বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।
এলো	রাজ-সভা ছাড়ি’ ছুটি,
	গুণিজন তোমার সে সুরে পাশরি’।।
তোমার	চলার শ্যাম-বনপথ
	কদম-কেশর-কীর্ণ,
তুমি	কেয়ার বনের খেয়াঘাটে হলে
	গোপনে কি অবতীর্ণ?
তুমি	অপরাজিতার সুনীল মাধুরী
	দু’চোখে আনিলে করিয়া কি চুরি?
তোমায়	নাগ-কেশরের ফণী-ঘেরা মউ
	পান করাল কে কিশোরী?
	জনপুরী যবে কল-কোলাহলে
	মগ্নোৎসব রাজ সভাতলে,
তুমি	একাকী বসিয়া দূর নদী-তটে
	ছায়া-বটে বাঁশি বাজালে,
তুমি	বসি’ নিরজনে ভাঁট ফুল দিয়া
	বালিকা বাণীরে সাজালে।।
যবে	রুদ্র আসিল ডম্বরু-করে
	ত্রিশূল বিঁধিয়া নীল অম্বরে,
তুমি	ফেলিয়া বাঁশরি আপনা পাশরি,
	এলে সে-প্রলয় নাটে গো,
তুমি	প্রাণের রক্তে রাঙালে তোমার
	জীবন-গোধূলি পাটে গো।।
	হে চির-কিশোর, হে চির-তরুণ,
	চির-শিশু চির-কোমল করুণ।
	দাও অমিয়া আরো অমিয়া,
দাও	উদয়-ঊষারে লজ্জা গো তুমি
	গোধূলির রঙে রঙিয়া।
	প্রখর রবি-প্রদীপ্ত গগনে,
	তুমি রাঙা মেঘ খেল আন্‌মনে,
	উৎসব-শেষে দেউলাঙ্গনে
	নিরালা বাজাও বাঁশরি,
আমি	স্বপন-জড়িত ঘুমে সেই সুর
	শুনিব সকল পাশরি’।।

বাণী

তোমার বীণার মূর্ছনাতে বাজাও আমার বাণী।
তোমার সুরে শোনাও আমার গানের আধেকখানি।।
	শুনব শুধু তোমার কথা
	এবার আমার নীরবতা,
আমার সুরের ছবি আঁকুক তোমার পদ্মপাণি।।