তুমি ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে
বাণী
তুমি ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে। তুমি কান্না পাওয়াও কাননকে গো ফুল-ঝরা প্রভাতে॥ তুমি ভৈরবী সুর উদাস বিধুর অতীত দিনের স্মৃতি সুদূর, তুমি ফোটার আগে ঝরা মুকুল বৈশাখী হাওয়াতে॥ তুমি কাশের ফুলের করুণ হাসি মরা নদীর চরে তুমি শ্বেত-বসনা অশ্রুমতী উৎসব-বাসরে। তুমি মরুর বুকে পথ-হারা গোপন ব্যথার ফল্গুধারা, তুমি নীরব বীণা বাণীহীনা সঙ্গীত-সভাতে॥
তুমি নামো হে নামো শামো
বাণী
[কেডারে? কেডা? উ-কেলিকদম্ব গাছে এই ডাল ঐ ডাল কইরা লাফ দিয়া বেড়াইত্যাছ? ও — ঘোষ পাড়ার হেই বখাইট্রা পোলাটা না?
উ-হুঁ-হুঁ, আবার পিরুক কইরা বাঁশি বাজান হইত্যাছে ? নাম্যা, আসো। ভরদুপুর বেলা মাইয়াগো সান ঘাটের কাছে — অ্যাঁ-হ্যাঁ-হ্যাঁ আবার কিষ্ট সাজাছেন?
বলি কেষ্ট সাজছো? নামো শিগগিরে নামো পোড়া কপাইল্যা নামো —]
তুমি নামো হে নামো শামো হে শামো কদম্ব ডাল ছাইড়া নামো। দুপরি রৌদ্রে বৃথাই ঘামো ব্যস্ত রাধা কাজে, ওহে শামো হে শামো॥ আরে তোমার ললিতাদেবী কি করতেয়াছে জাননি? তোমার ললিতাদেবী? আরে ললিতাদেবী সলিতা পাকায়, বিশাখা ঝোলে হিজল শাখায়। আর বৃন্দাদুতী কি করছে জান? বৃন্দাদুতী? বৃন্দাদুতী পিন্দা ধুতি গোষ্টে গেছেন তোমার ‘পোস্টে’ সাজিয়া রাখাল সাজে আর চন্দ্রা গ্যাছেন অন্ধ্র দেশে মান্দ্রাজী জাহাজে॥ আবার ইতি উতি চাও ক্যা? ইতি উতি চাইবার লাগছ ক্যা? এ্যা? আমি কমুনা কোন্খানে তোমার যমুনা - তা আমি কমু না? আরে (তুমি) ইতি উতি চাও বৃথাই আমি কমু না কোথায় তোমার যমুনা কইলকাতা আর ঢাকা রমনার লেকে পাবে তার নমুনা। আরে তোমার যমুনা লেক হইয়া গ্যাছে গিয়া! বুঝ্লা? হালার যমুনা ল্যাক হইয়া গ্যাছে গিয়া। কলেজে ফিরিছে শ্রীদাম সুদাম শ্রীদাম সুদাম কলেজে যাইতেয়াছে, আর তুমি এখানে বাঁশি বাজাইতেয়াছ অ্যাঁ! পোড়া কপাইল্যা — কলেজে ফিরিছে শ্রীদাম সুদাম, মেরে মাল কোঁচা খুলিয়া বোতাম লাঙ্গল ছাড়িয়া বলরাম ডাম্বেল মুঘার ভাঁজে। ওহে শামো হে শামো আরে তুমি নামো, পোড়া কপাইল্যা নামো॥
তোর রূপে সই গাহন ক’রে জুড়িয়ে গেল গা
বাণী
তোর রূপে সই গাহন ক’রে জুড়িয়ে গেল গা তোর গাঁয়েরি নদীর ঘাটে বাঁধলাম এ মোর না।। তোর চরণের আলতা লেগে পরান আমার উঠল রেঙে (রে) ও তোর বাউরি কেশের বিনুনীতে জড়িয়ে গেল পা। তোর বাঁকা ভুরু বাঁকা আঁখি বাঁকা চলন, সই, দেখে পটে আঁকা ছবির মতন দাঁড়িয়ে পথে রই। উড়ে এলি’ দেশান্তরী তুই কি ডানা-কাটা পরী (রে) তুই শুকতারারি সতিনী সই সন্ধ্যাতারার জা’।।
তুমি আমারে কাঁদাও নিজেরে আড়াল রাখি
বাণী
তুমি আমারে কাঁদাও নিজেরে আড়াল রাখি', তুমি চাও আমি নিশি-দিন যেন তব নাম ধরে ডাকি।। হে লীলা-বিলাসী অন্তরতম, অন্তর-মধু চাও বুঝি মম গোপনে করিতে পান, ওগো বঁধু, অন্তরালে সে থাকি।। বিরহ তোমার ছল, কেন নাহি বুঝি! আমাতে রহিয়া কাঁদাও আমারে তবু কেন মরি খুঁজি'। ভুলিয়া থাকি সুখের মোহে তাই বুঝি প্রিয় কাঁদাও বিরহে — বন্ধু, ওগো বন্ধু; তুমি অন্তরে এলে রাজ-সমারোহে নয়নেরে দিয়ে ফাঁকি।।