ভৈরবী

  • অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা

    বাণী

    অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা
    শ্বশুর-বাড়ির ফেরত নয়।
    দশভুজার করিস পূজা
    		ভুলরূপে সব জগতময়।।
    নয় গোরী নয় এ উমা
    মেনকা যার খেতো চুমা
    রুদ্রাণী এ, এযে ভূমা
    		এক সাথে এ ভয়-অভয়।।
    অসুর দানব করল শাসন এইরূপে মা বারে বারে,
    রাবণ-বধের বর দিল মা এইরূপে রাম-অবতারে।
    দেব-সেনানী পুত্রে লয়ে মা
    এই বেশে যান দিগ্বিজয়ে
    সেই রূপে মা’র কর্‌রে পূজা
    		ভারতে ফের আসবে জয়।।
    
  • আঁখি ঘুম-ঘুম-ঘুম নিশীথ নিঝুম ঘুমে ঝিমায়

    বাণী

    আঁখি ঘুম-ঘুম-ঘুম নিশীথ নিঝুম ঘুমে ঝিমায়।
    বাহুর ফাঁদে স্বপন-চাঁদে বাঁধিতে কারে চায়।।
    আমি কারো লাগি একা নিশি জাগি বিরহ-ব্যথায়
    কোথায় কাহার বুকে বঁধু ঘুমায়
    কাঁদি চাতকিনী মরে তৃষায়
    কুসুম-গন্ধ আজি যেন বিষ-মাখা হায়।।
    	কেন এ ব্যথা এ আকুলতা
    	পরের লাগি এ পরান পুড়ে?
    মরুভূমিতে বারি কি ঝুরে
    আমি যেন ম’রে তোরি রূপ ধ’রে আসি সে যাহারে চায়।।
    
  • আঁখি তোল আঁখি তোল না

    বাণী

    	আঁখি তোল আঁখি তোল না,
    	দানো করুণা, ওগো অরুণা,
    	মেলি’ নয়ন জীর্ণ কানন কর তরুণা।।
    	আঁখি যে তোমার বনের পাখি —
    	ঘুম যে ভাঙায় আঁধারে ডাকি’,
    	আলোর-সাগর জাগাও বরুণা।।
    তব 	আনত আঁখির পাতার কোলে
    	তরুণ আলোর মুকুল দোলে।
    	রঙের কুমার দুয়ারে জাগে,
    	তোমার আঁখির প্রসাদ মাগে,
    	পাণ্ডুর ভোর হোক তরুণারুণা।।
    
  • আঁচলে হংস-মিথুন আঁকা

    বাণী

    আঁচলে হংস-মিথুন আঁকা
    		বলাকা-পে’ড়ে শাড়ি দুলায়ে।
    চলিছে কিশোরী শ্যামা একা
    		রুমুঝুমু বাজে নূপুর মৃদু পায়ে।।
    ভয়ে ভয়ে চলে আধো-আঁধারে
    বিরহী বন্ধুর দূর অভিসারে,
    পথ কাঁদে যেয়ো না যেয়ো না যেয়ো না ওগো
    		থামো ক্ষণেক এ ঠাঁয়ে।।
    
  • আজ ভারতের নব আগমনী

    বাণী

    আজ ভারতের নব আগমনী জাগিয়া উঠেছে মহাশ্মশান
    জাগরণী গায় প্রভাতের পাখি ফুলে ফুলে হাসে গোরস্থান॥
    	ট’লেছে অটল হিমালয় আজি
    	সাগরে শঙ্খ উঠিয়াছে বাজি’
    হলাহল শেষে উঠেছে অমৃত বাঁচাইতে মৃত মানব-প্রাণ॥
    	আঁধারে ক’রেছে হানাহানি যারা
    	আলোকে চিনেছে আত্মীয় তা’রা
    এক হয়ে গেছে খ্রিস্টান, শিখ, হিন্দু, পারসি, মুসলমান।
    	এই তাপসীর চরণের তলে
    	লভিয়াছে জ্ঞান শিক্ষা সকলে 
    আবার আসিবে তারা দলে দলে করিতে পুণ্য-তীর্থ-স্নান॥
    
  • আনো সাকি শিরাজি আনো আঁখি-পিয়ালায়

    বাণী

    আনো সাকি শিরাজি আনো আঁখি-পিয়ালায়
    অধীর করো মোরে নয়ন-মদিরায়।।
    পান্‌সে জোছনাতে ঝিম্‌ হয়ে আসে মন
    শরাব বিনে, হের গুল্‌বন উচাটন,
    মদালসা আঁখি কেন ঘোম্‌টা ঢাকা এমন
    			বিষাদিত নিরালায়।।
    তরুণ চোখে আনো অরুণ রাগ-ছোঁওয়া
    আঁখির করুণা তব যাচে ভোরের হাওয়া।
    জীবন ভরা কাঁটা-রি জ্বালা
    ভুলিতে চাহি শরাব পিয়ালা
    তোমার হাতে ঢালা —
    দুলাইয়া দাও মোরে আনন্দের হিন্দোলায়
    			ভুলাইয়া বেদনায়।।
    

  • আমার বুকের ভেতর জ্বলছে আগুন

    বাণী

    আমার বুকের ভেতর জ্বলছে আগুন, দমকল ডাক ওলো সই।
    শিগ্‌গির ফোন কর বঁধুরে, নইলে পুড়ে ভস্ম হই॥
    	অনুরাগ দিশ্‌লাই নিয়ে
    	চোখের লম্প জ্বালতে গিয়ে,
    আমার প্রাণের খোড়ো ঘরে লাগল আগুন ওই লো ওই॥
    	প্রেমের কেরোসিন যে এত
    	অল্পে জ্বলে জানিনে তো,
    কি দাবানল জ্বলছে বুকে জানবে না কেউ আমা বই॥
    	প্রণয় প্রীতির তোষক গদি
    	রক্ষে করতে চায় সে যদি
    মনে ক’রে আনতে বলিস (তারে) আদর সোহাগ বালতি মই॥
    
  • আমি বাঁধন যত খুলিতে চাই

    বাণী

    আমি	বাঁধন যত খুলিতে চাই জড়িয়ে পড়ি তত।
    	শুভদিন এলো না দিনে দিনে দিন হল হায় গত।।
    		শত দুঃখ অভাব নিয়ে
    		জগৎ আছে জাল বিছিয়ে
    	অসহায় এ পরান কাঁদে জালে মীনের মত।।
    	বোঝা যত কমাতে চাই ততই বাড়ে বোঝা,
    	শান্তি কবে পাব কবে চল্‌ব হয়ে সোজা।
    		দাও ব’লে হে জগৎ-স্বামী
    		মুক্তি কবে পাব আমি?
    কবে	উঠবে ফুটে জীবন আমার ভোরের ফুলের মত।।
    
  • আয় বিজয়া আয় রে জয়া

    বাণী

    আয় বিজয়া আয় রে জয়া উমার লীলা যা রে দেখে।
    সেজেছে সে মহাকালী চোখের কাজল মুখে মেখে।।
    	সে ঘুমিয়েছিল আমার কোলে
    	জেগে উঠে কেঁদে বলে,
    আমায় কালী সাজিয়ে দে মা ছেলেরা মোর কাঁদছে ডেকে।।
    চেয়ে দেখি মোর উমা নাই নাচে কালী দিগম্বরী,
    হুঙ্কার দেয় কোটি গ্রহের মুণ্ডমালা গলায় পরি’।
    	আমি শুধু উমায় চিনি
    	এ কোন্ মহামায়াবিনী,
    কালোরূপে বিশ্বভুবন আকাশ-পবন দিল ঢেকে।।
    
  • আল্লাহ্ আমার প্রভু আমার নাহি

    বাণী

    আল্লাহ্ আমার প্রভু, আমার নাহি নাহি ভয়।
    আমার নবী মোহাম্মদ, যাঁহার তারিফ জগৎময়।।
    	আমার কিসের শঙ্কা
    	কোরআন আমার ডঙ্কা
    ইসলাম আমার ধর্ম, মুসলিম আমার পরিচয়।।
    কলেমা আমার তাবিজ, তৌহীদ্ আমার মুর্শিদ্,
    ঈমান্ আমার বর্ম, হেলাল আমার খুর্শিদ্।
    	‘আল্লাহ্ আকবর’ ধ্বনি
    	আমার জেহাদ-বাণী,
    আখের মোকাম ফেরদৌস্ খোদার আরশ যথায় রয়।।
    
  • ইসলামের ঐ সওদা লয়ে এলো নবীন

    বাণী

    ইসলামের ঐ সওদা লয়ে এলো নবীন সওদাগর।
    বদনসীব আয়, আয় গুনাহগার নূতন করে সওদা কর।।
    জীবন ভ'রে করলি লোকসান আজ হিসাব তার খতিয়ে নে;
    বিনিমূলে দেয় বিলিয়ে সে যে বেহেশতী নজর।।
    কোরানের ঐ জাহাজ বোঝাই হীরা মুক্তা পান্নাতে,
    লুটে নে রে, লুটে নে সব, ভরে তোল তোর শূন্য ঘর।
    কেয়ামতের বাজারে ভাই মুনাফা যে চাও বহুৎ —
    এই ব্যাপারীর হও খরিদ্দার লও রে ইহার সিল-মোহর।।
    আরশ হতে পথ ভুলে এ এলো মদিনা শহর,
    নামে মোবারক মোহাম্মদ — পুঁজি 'আল্লাহু আকবর'।।
    
  • ঈদজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ

    বাণী

    ঈদজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ এলো আবার দুস্‌রা ঈদ
    কোর্‌বানি দে কোর্‌বানি দে শোন্‌ খোদার ফর্‌মান তাকিদ।।
    এমনি দিনে কোর্‌বানি দেন পুত্রে হজরত ইব্‌রাহীম,
    তেমনি তোরা খোদার রাহে আয় রে হবি কে শহীদ্।।
    মনের মাঝে পশু যে তোর আজকে তা’রে কর্ জবেহ,
    পুল্‌সেরাতের পুল হ’তে পার নিয়ে রাখ্ আগাম রসিদ্।।
    গলায় গলায় মিল্ রে সবে ভুলে যা ঘরোয়া বিবাদ,
    মিলনের ঈদগাহ্‌ গড়ে তোল্‌ প্রাণ দিয়ে তার তোল্‌ বুনিয়াদ।।
    মিলনের আর্‌ফাত ময়দান হোক আজি গ্রামে গ্রামে,
    হজের অধিক পাবি সওয়াব এক হ’লে সব মুসলিমে।
    বাজবে আবার নূতন ক’রে দ্বীনি ডঙ্কা, হয় উমীদ্।।
    ইসমাইলের মতন যদি কোর্‌বানি পারিস হতে
    দেখব আবার তোদের মাঝে দিশারি মুসা, খালিদ।।
    
  • এ আঁখি জল মোছ পিয়া

    বাণী

    এ আঁখি জল মোছ পিয়া ভোলো ভোলো আমারে।
    মনে কে গো রাখে তারে (ওগো) ঝরে যে ফুল আঁধারে।।
    ফোটা ফুলে ভরি’ ডালা গাঁথ বালা মালিকা,
    দলিত এ ফুল লয়ে, (ওগো) দেবে গো বল কারে।।
    স্বপনের স্মৃতি প্রিয় জাগরণে ভুলিও,
    ভুলে যেয়ো দিবালোকে রাতের আলেয়ারে।
    ঘুমায়েছ সুখে তুমি সে কেঁদেছে জাগিয়া,
    তুমি জাগিলে গো যবে সে ঘুমায়ে ওপারে।।
    
  • এই দেহেরই রঙমহলায় খেলিছেন

    বাণী

    এই দেহেরই রঙমহলায় খেলিছেন লীলা-বিহারী।
    মিথ্যা মায়া নয় এ কায়া কায়ায় হেরি ছায়া তাঁরি।।
    	রূপের রসিক রূপে রূপে
    	খেলে বেড়ায় চুপে চুপে,
    মনের বনে বাজায় বাঁশি মন-উদাসী বন-চারী।।
    	তার খেলা-ঘর তোর এ দেহ
    	সে ত নহে অন্য কেহ
    সে যে রে তুই, — তবু মোহ ঘুচল না তোর হায় পূজারি।।
    	খুঁজিস্ তারে ঠাকুর-পূজায়
    	উপাসনায় নামাজ রোজায়,
    চাল কলা আর সিন্নি দিয়ে ধর্‌বি তারে হায় শিকারি!
    পালিয়ে বেড়ায় মন-আঙিনায় সে যে শিশু প্রেম-ভিখারি।।
    
  • এসো এসো রস-লোক বিহারী

    বাণী

    এসো এসো রস-লোক বিহারী এসো মধুকর-দল।
    এসো নভোচারী — স্বপন-কুমার এসো ধ্যান-নিরমল।।
    	এসো হে মরাল কমল-বিলাসী,
    	বুলবুল পিক সুর-লোক-বাসী,
    এসো হে স্রষ্টা এসো অ-বিনাশী এসো জ্ঞান-প্রোজ্জ্বল।।
    	দীওয়ানা প্রেমিক এসো মুসাফির —
    	ধূলি-ম্লান তবু উন্নত শির,
    আমরা-অমৃত-জয়ী এসো বীর আনন্দ বিহ্বল।।
    	মাতাল মানব করি’ মাতামাতি
    	দশ হাতে যবে লুটে যশ খ্যাতি,
    তোমরা সৃজিলে নব দেশ জাতি অগোচর অচপল।।
    	খেল চির-ভোলা শত ব্যথা স’য়ে
    	সংঘাত ওঠে সঙ্গীত হ’য়ে,
    শত বেদনার শতদল ল’য়ে লীলা তব অবিরল।।
    	ভুলি’ অবহেলা অভাব বিষাদ
    	ধরণীতে আনো স্বর্গের স্বাদ,
    লভি’ তোমাদের পুণ্য প্রসাদ পেনু তীর্থের ফল।।
    
  • এসো প্রাণে গিরিধারী বন-চারী

    বাণী

    এসো প্রাণে গিরিধারী বন-চারী
    	গোপীজন-মনোহরী।
    	চঞ্চল গোকুল-বিহারী।।
    লহ নব প্রীতির কদম-মালা
    আনন্দ-চন্দন, প্রেম-ফুল-ডালা
    নয়নে আরতি-প্রদীপ জ্বালা
    	অঞ্জলি লহ আঁখি-বারি।।
    প্রণয়-বিহ্বলা প্রাণ-রাধিকা
    পরেছে তব নাম কলঙ্ক-টিকা।
    অথির অনুরাগ গোপ-বালিকা
    	চাহে পথ তোমারি।।
    
  • ঐ জল্‌কে চলে লো কার ঝিয়ারি

    বাণী

    ঐ জল্‌কে চলে লো কার ঝিয়ারি। 
    রূপ চাপে না তার নীল শাড়ি।। 
    এমন মিঠি বিজলি দিঠি শেখালে তায় কে গো? 
    রূপে ডুবু ডুবু রবির রঙ-ভরা ছবির, ছোঁয়াচ লেগেছে গো। 
    মন মানে না, আর কি করি ! 
    চলে পিছনে ছুটে’ তারি।। 
    নাচে বুলবুলি ফিঙে ঢেউয়ে নাচে ডিঙে 
    মাঠে নাচে খঞ্জন; 
    তার দু’টি আঁখি-তারা নেচে হতো সারা —
    দেখেছে বল কোন জন? 
    আঁখি নিল যে মোর মন্‌ কাড়ি’ —
    ঘরে থাকিতে আর নারি লো।। 
    গোলাপ বেলী যুঁই-চামেলি - কোন্‌ ফুল তারি তুল্‌ গো
    তার যৌবন-নদী বয় নিরবধি ভাসায়ে দু’ কূল গো 
    নিল ভাসায়ে প্রাণ আমারি 
    রূপে দু’কূল–ছাপা গাঙ্‌ তারি।।
    
  • কত জনম যাবে তোমার বিরহে

    বাণী

    কত	জনম যাবে তোমার বিরহে
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    	শূন্য গেহ মোর শূন্য জীবনে,
    একা	থাকারি ব্যথা কত সহে (ওগো)
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    	দিয়েছি যে জ্বালা জীবন ভরি' হায়
    	গলি নয়ন -ধারায় সে ব্যথা বহে
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    

  • কি হবে জানিয়া বল

    বাণী

    কি হবে জানিয়া বল কেন জল নয়নে
    তুমি তো ঘুমায়ে আছ সুখে ফুল-শয়নে।।
    তুমি কি বুঝিবে বালা কুসুমে কীটের জ্বালা,
    কারো গলে দোলে মালা কেহ ঝরে পবনে।।
    আকাশের আঁখি ভরি’ কে জানে কেমন করি’
    শিশির পড়ে গো ঝরি’, ঝরে বারি শাওনে।
    নিশীথে পাপিয়া পাখি এমনি তো ওঠে ডাকি’
    তেমনি ঝুরিছে আঁখি বুঝি বা অকারণে।।
    কে শুধায়, আঁধার চরে চখা কেন কেঁদে মরে,
    এমনি চাতক-তরে মেঘ ঝুরে গগনে।।
    কারে মন দিলি কবি, এ যে রে পাষাণ-ছবি
    এ শুধু রূপের রবি নিশীথের স্বপনে।।
    
  • কে ডাকিলে আমারে আঁখি তুলে

    বাণী

    কে	ডাকিলে আমারে আঁখি তুলে'।
    	এই প্রভাতে তটিনী-কূলে কূলে।।
    ঐ	ঘুমায়ে সকলি, জাগেনি কেউ 
    	জল নিতে এখনো আসেনি বউ, 
    	শুধু তব নদীতে জেগেছে ঢেউ — 
    	মেলেছ নয়ন কানন-ফুলে।।
    	যে সুবাস ঝরে ও-এলোকেশে 
    	কমলে তা' দিলে নাহিতে এসে', 
    	তব তনু-মন দীঘিতে ভেসে' —
    	মাতাইছে, মধুপ পথ ভুলে।
    ও	শিশির-কপোল-স্বেদ বারি 
    	পড়িল ঝরি' নয়নে আমারি, 
    	জাগিয়া হেরি রূপ-মনোহারী —
    	দাঁড়ায়ে উষসী তোরণ-মূলে।।