বাণী
শ্রীরাধা : ওলো বিন্দে! গোবিন্দে আর দিস্নে ব্যথা, দিস্নে। ওর দু নয়নে লো অঝোর ধারে বারি ঝরে, চোখে কি দেখিস্ নে? চোখের মাথা খেলি নাকি? [ঐ সজল কাজল চোখ দেখে তুই ঐ ডাগর চোখের চাওয়া দেখে তুই] ওর অশ্রুত নিবেদন অশ্রুতে ঝরে, ওরে কাঁদিতে দেখিলে মন কেমন করে। আমি রেইতে নারি — [হ’য়ে নারী সইতে নারি ওর নয়ন-বারি]। মোর পায়ে ধরার সাধে পদে-পদে অপরাধে আপনারে বাঁধে, কলঙ্ক হতে, সখি অধিক জোছনা দেয় কলঙ্কী-চাঁদে। ওরে তাই ভালোবাসি গো — [ত্রিভুবন ভালোবাসে ওরে]। এ-কুলে ও-কুলে যত নারী আছে, বৃন্দে, গোবিন্দে সকলে চায় — ও সকলের প্রিয় তবু কারো সে নয় কভু, প্রেমময় প্রেম দিয়ে কেবলি কাঁদায়, ওরে কে ধ’রে রাখবে? [ঐ দুরন্তরে বল্ ঐ উড়ন্ত পাখির] আমারি প্রিয়তমে সকলে বাসে ভালো গরবিনী আমি সেই গরব-ভরে। নিন্দা করি’, ‘বৃন্দা, বৃন্দাবনে লো — মনে মনে ক্ষমা চাই চরণ ধ’রে। ওর মন যে জানি লো, [ও চন্দ্রা’র বুকে কাঁদে ‘রাধা, রাধা’ ব’লে] ওর মনে যদি থাকত কিছু আবেশে, এ বেশে কি আসত? [চোর কি নিজে দেয় ধরা সই? অ-ধরা, ধরায়, ধরা পড়ত না সই] ও অত মুখ্যু নয় লো’ [কোটি কোটি মুমুক্ষেরে মোক্ষ দেয় যে, সে অত মুখ্যু নয় লো] প্রাণ গোবিন্দে, আন্ লো বৃন্দে — জুড়াক এ বুকের জ্বালা। বনমালী-কণ্ঠে নাহি জড়ালে সখি, প্রাণ-হীন আমি বনমালা! মোর কৃষ্ণ প্রাণ লো কৃষ্ণ ধ্যান, কৃষ্ণ জ্ঞান, কৃষ্ণ অভিমান — কৃষ্ণ প্রাণ লো! মোর কৃষ্ণ বিরহ, কৃষ্ণ কলহ, কৃষ্ণ প্রাণ লো!
‘কলহ-কলহান্তরিতা’