বাণী

বকুল ছায়ে ছিনু ঘুমায়ে গোপন পায়ে আসিলে তুমি।
রাতের শেষে ভোরের মতন ভাঙিলে স্বপন নয়ন চুমি’॥
ফুলের বুকে মধুর সম আসিলে তুমি আামার প্রাণে
মরুর বুকে উঠিল ফুটে রঙিন কুসুম বেদন ভুলি’॥
জাগিয়া হেরি পরান ভরি উঠিতেছে ঢেউ এ কি এ ব্যথার
বেদনা যত মধুও তত হিয়াতে শরম নয়নে আশার।
অকালে ফাগুন আগুন শিখায় রাঙিল মনের কানন-ভূমি॥

বাণী

বন-বিহঙ্গ যাও রে উড়ে মেঘ্‌না নদীর পাড়ে
দেখা হলে আমার কথা কইয়ো গিয়া তারে।
কোকিল ডাকে বকুল-ডালে, যে-মালঞ্চে সাঁঝ-সকালে রে,
আমার বন্ধু কাঁদে সেথায় গাঙেরি কিনারে।।
গিয়া তারে দিয়া আইস আমার শাপ্‌লা-মালা
আমার তরে লইয়া আইস তাহার বুকের জ্বালা।
সে যেন রে বিয়া করে, সোনার কন্যা আনে ঘরে রে,
আমার পাটের জোড় পাঠাইয়া দিব সে-কন্যারে।।

বাণী

বহে শোকের পাথার আজি সাহারায়।
নবীজী নাই-উঠ্‌ল মাতম মদিনায়।।
	আঁখি-প্রদীপ এই ধরনীর
	গেল নিভে ঘির্‌ল তিমির,
দীনের রবি মোদের নবী চায় বিদায়।
সইল না রে বেহেশ্‌তী দান দুনিয়ায়।।
	না পূরিতে সাধ-আশা
	না মিটিতে তৌহিদ-পিপাসা,
যায় চ’লে দীনের শাহানশাহ্ — হায় রে হায়,
সেই শোকেরি তুফান বহে ‘লু’ হাওয়ায়।।
বেড়েছে আজ দ্বিগুণ পানি দজ্‌লা ফোরাত নদীতে,
তূর ও হেরা পাহাড় ফেটে অশ্রু-নিঝর ব’য়ে যায়।
ধরার জ্যোতি হরণ ক’রে উজল হ’ল ফের বেহেশত্
কাঁদে পশু-পাখি ও তরুলতায়,
সেই কাঁদনের স্মৃতি দোলে দরিয়ায়।।

বাণী

বসিয়া বিজনে		কেন একা মনে
পানিয়া ভরণে		চলো লো গোরী
চলো জলে চলো		কাঁদে বনতল
ডাকে ছলছল		জল-লহরি।।
দিবা চ’লে যায়		বলাকা-পাখায়
বিহগের বুকে		বিহগী লুকায়।
কেঁদে চখা-চাখি		মাগিছে বিদায়
বারোয়াঁর সুরে		ঝুরে বাঁশরি।।
ওগো বে-দরদি		ও রাঙা পায়ে
মালা হয়ে কে গো		গেল জড়ায়ে।
তব সাথে কবি		পড়িল দায়ে
পায়ে রাখি তারে		না গলে পরি।।

বাণী

বল্ সই বসে কেনে একা আনমনে
চল সই সই পাতাবি গাঁদা ফুলের সনে।।
নিয়ে পাথর কুচি, আউস ধানের গুছি
অজয় নদীর ধারে খেল্‌ব নিরজনে।।
দেখিস্‌ আস্‌বে ফিরে তোর চাঁদ নতুন চাঁদে,
চাঁদ-মুখ রেখে ঘরে কে সই রইতে পারে 
		আঁধার কয়লা খাদে!
আস্‌বে পোষা কোকিল, ডাকবে মহুল বনে।।
কিন্‌বে ধেনো জমি এবার টাকা এনে,
সে আর যেন গয়না কাপড় না কেনে
তোর বলতে যদি লাজে বাধে মুখে
আমি বল্‌ব তারে যা তুই ভাবিস মনে।।

বাণী

বেদনার সিন্ধু-মন্থন শেষ, হে ইন্দ্রানী,
জাগো, জাগো করে সুধা-পাত্রখানি।।
রোদন-সায়রে ধুয়ে পুষ্পতনু
এসো অশ্রুর বরষার ইন্দ্র-ধনু,
হের কুলে অনুরাগে জীবন-দেবতা জাগে
	ধরিবে বলিয়া তব পদ্মপাণি।।
তব দুখ-রাত্রির তপস্যা শেষ- এলো শুভ দিন,
অতল-তমসা-লক্ষ্মী গো তুমি অমরার
এসো এসো পার হ'য়ে ব্যথার পাথার।
অশ্রুত অশ্রুর নীরবতা কর দূর
	কূলে কূলে হাসির তরঙ্গ হানি।।