আধুনিক

  • দিনের সকল কাজের মাঝে তোমায় মনে পড়ে

    বাণী

    দিনের সকল কাজের মাঝে
    		তোমায় মনে পড়ে।
    কাজ ভুলে যাই (আমি), মন চ’লে যায়
    		সুদূর দেশান্তরে।।
    	তুলসী তলায় দীপ জ্বালিয়ে
    	দূর আকাশে রই তাকিয়ে,
    সাঁঝের ঝরা ফুলের মতো অশ্রু বারি ঝরে।।
    আঁধার রাতে বাতায়নে একলা ব’সে থাকি,
    চাঁদকে শুধায় তোমার কথা ঘুমহারা মোর আঁখি।
    	প্রভাত বেলায় গভীর ব‍্যথায়
    	মন কেঁদে কয় তুমি কোথায়,
    শূন্য লাগে এ তিন ভুবন প্রিয় তোমার তরে।।
    
  • দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি

    বাণী

    দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি।
    কে যেন কহিছে কেঁদে মোর বুকে মুখ রাখি’
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    হারায়ে গিয়াছে চাঁদ জল-ভরা কালো মেঘে
    আঁচলে লুকায়ে ফুল বাতায়নে আছি জেগে’
    শূন্য গগনে দেয়া কহিতেছে যেন ডাকি’
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    ভাঙিয়া দুয়ার মম কাড়িয়া লইতে মোরে
    এলে কি ভিখারি ওগো প্রলয়ের রূপ ধ’রে?
    ফুরাইয়া যায় বঁধু শুভ-লগনের বেলা
    আনো আনো ত্বরা করি’ ওপারে যাবার ভেলা
    ‘পিয়া পিয়া’ ব’লে বনে ঝুরিছে পাপিয়া পাখি
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    
  • দেবতা গো দ্বার খোলো

    বাণী

    দেবতা গো, দ্বার খোলো।
    অভিসার নিশি বাহির দুয়ারে দাঁড়ায়ে প্রভাত হ’ল॥
    	পাষাণের আবরণে তুমি যদি
    	এমনি গোপন রবে নিরবধি,
    বেণুকার সুরে হৃদি যমুনায় কেন এ লহর তোলো॥
    আর	সহিতে পারি না একা,
    প্রাণে	কেন দিয়ে আশা এত ভালোবাসা
    যদি	নাহি দিবে দেখা।
    	বহিতে পারি না আর এই ভার,
    	এই ফুল সাজ পূজা-সম্ভার
    তুমি	দেখা দেও একবার দেখা দেও —
    দেখা	দিয়ে চিরতরে মোরে ভোলো॥
    
  • দোপাটি লো লো করবী

    বাণী

    দোপাটি লো, লো করবী, নেই সুরভি রূপ আছে
    রঙের পাগল রূপ পিয়াসি সেই ভালো আমার কাছে।।
    	গন্ধ ফুলের জলসাতে তোর
    	গুণীর সভায় নেইকে আদর
    গুল্ম বনে দুল হয়ে তুই, দুলিস একা ফুল গাছে।।
    লাজুক মেয়ে পল্লী বধূ জল নিতে যায় একলাটি
    করবী নেয় কবরীতে বেণীর শেষে দোপাটি
    	গন্ধ ল'য়ে স্নিগ্ধ মিঠে
    	আলো ক'রে থাকিস ভিটে,
    নেই সুবাস, আছে গায়ে কাঁটা, সেই গরবে মন নাচে।।
    
  • ধীরে বহ ভোরের হাওয়া ধীরে বহ ধীরে

    বাণী

    ধীরে বহ ভোরের হাওয়া ধীরে বহ ধীরে
    ঘুমায়ে রয়েছে প্রিয়া এই পিয়াল নদীর তীরে।।
    	যে ফুল ঝরিল ভোর রাতে
    	সে ঘুমায় তাহার সাথে
    	ঝরাপাতার মন্দিরে।।
    শান্ত উদাস আকাশ নীরবে আছে চেয়ে'
    ধীরে বহ নদী সকরুণ গান গেয়ে।
    	ছলছল চোখে শুকতারা
    	হেরিছে পলক-হারা
    	তার বিদায় বেলার সঙ্গীরে।।
    

  • নন্দন বন হতে কি গো ডাকো মোরে

    বাণী

    নন্দন বন হতে কি গো ডাকো মোরে আজো নিশীথে
    ক্ষণে ক্ষণে ঘুম হারা পাখি কেঁদে ওঠে করুন-গীতে।।
    	ভেঙে যায় ঘুম চেয়ে থাকি
    	চাহে চাঁদ ছলছল আখিঁ
    ঝরা চম্পার ফুল যেন কে ফেলে চলে যায় চকিতে।।
    সহিতে না তিলেক বিরহ ছিলে যবে জীবনের সাতি,
    ব'লে যাও আজ কোন অমরায় কেমনে কাটাও দিবারাতি।।
    	জীবনে ভুলিলে তুমি যারে
    	তারে ভুলে যাও মরনের ওপারে
    আঁধার ভুবনে মোরে একাকী দাও মোরে দাও ঝুরিতে।।
    
  • নবীন বসন্তের রানী তুমি

    বাণী

    পুরুষ		: 	নবীন বসন্তের রানী তুমি গোলাব-ফুলী রঙ।
    স্ত্রী		: 	তব অনুরাগের রঙে আমি উঠিয়াছি আজ রেঙে
    						প্রিয় এই অপরূপ ঢঙ।।
    পুরুষ		: 	পলাশ কৃষ্ণচূড়ার কলি
    			রাঙা ও-পায়ে এলে কি দলি’?
    স্ত্রী		:	বেয়ে প্রেমের পথের গলি
    			এলাম কঠোর হৃদয় দলি’,
    			হের পায়ে তাহারি রঙ।।
    পুরুষ		:	হায়, হৃদয়-হীনা হৃদয়-সাথি হয় না তা জানি,
    			অবুঝ হৃদয় তবু চাহে তায় জানে সে-পাষাণী।
    স্ত্রী		:	ধরিয়া পায়ে প্রেম জানায়ে
    			যাও পালায়ে শেষে কাঁদায়ে
    			কাঁদাই যতই, কাঁদি যে ততই;
    পুরুষ		:	বায়ু কেঁদে যায় ফুল ঝরায়ে।
    স্ত্রী		:	না, না, যাও যাও মন চেয়ো না
    			গন্ধ লহ, ফুল চেয়ো না;
    			আছে কাঁটা ফুলের সঙ্গ।।
    উভয়ে		:	যাই চল সেই কাননে
    			নাই কাঁটা ফুলের সনে
    			যথা নাই বিরহ, শুধু মিলন।।
    
  • নয়ন ভরা জল গো তোমার

    বাণী

    নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল
    ফুল নেব না, অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল।।
    	ফুল যদি নিই তোমার হাতে
    	জল রবে না নয়ন পাতে
    অশ্রু নিলে ফুটবে না আর প্রেমের মুকুল।।
    মালা যখন গাঁথ তখন পাওয়ার সাধ যে জাগে
    মোর বিরহে কাঁদ যখন আরও ভালো লাগে।
    	পেয়ে তোমায় যদি হারাই
    	দূরে দূরে থাকি গো তাই
    ফুল ফোটায়ে যায় গো চলে চঞ্চল বুলবুল।।
    

    ১. গো

  • নয়নে তোমার ভীরু মাধুরীর মায়া

    বাণী

    নয়নে তোমার ভীরু মাধুরীর মায়া
    বন-মৃগী সম উঠিছ চমকি' হেরিয়া আপন ছায়া।।
    	প্রাতে ঊষার প্রায়
    	রেঙে ওঠো লজ্জায়,
    এলায়িত লতিকায় ভঙ্গুর তব কায়া।।
    দৃষ্টিতে তব আরতি-দীপের দ্যুতি
    তুমি নিবেদিতা সন্ধ্যা-পূজা-আরতি।
    	ভূমি অবলুণ্ঠিতা
    	বনলতা কুণ্ঠিতা
    কোলাহল-শঙ্কিতা যেন গো তাপস-জায়া।।
    

  • না-ই পরিলে নোটন-খোঁপায় ঝুমকো জবার ফুল

    বাণী

    না-ই পরিলে নোটন-খোঁপায় ঝুমকো জবার ফুল (রানী)
    এমনি এসো (ওগো) লুটিয়ে পিঠে আকুল এলোচুল।।
    	সজ্জা-বিহীন লজ্জা নিয়ে
    	এমনি তুমি এসো প্রিয়ে
    গোলাপ ফুলের রঙ মাখাতে হয় যদি হোক ভুল।।
    গৌর দেহে নাই জড়ালে গৌরী চাঁপার শাড়ি
    ওগা ভূষণ পরে না-ই বা দিলে রূপের সাথে আড়ি।
    	যেমন আছ তেমনি এসো
    	নয়ন তুলে একটু হেসো
    সেই খুশিতে উঠবে দুলে আমার হৃদয় কুল।।
    
  • নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই

    বাণী

    	নিরুদ্দেশের পথে আমি হারিয়ে যাদি যাই
    	নিত্য নূতন রূপে আবার আসবো এই হেথাই।।
    	চাঁদনী রাতের বাতায়নে, রইবে চেয়ে উদাস মনে
    	বলবো আমি হারাইনি গো, নাই ভাবনা নাই
    	আকাশ থেকে তারার চোখে তোমার পানে চাই।।
    তুমি	আকুল হয়ে ফিরবে কেঁদে যে বনপথ বেয়ে'
    	ঝরা মুকুল হয়ে আমি সে পথ দেব ছেয়ে।
    ‌	তোমায়ভালোবেসে সাধ মেটেনি স্বামী
    	মরেও মরতে পারব না তাই আমি
    	দূরে গিয়ে দেখবো তোমায় কাছে যদি পাই।।
    

  • নিশি না পোহাতে যেয়ো না যেয়ো না

    বাণী

    নিশি না পোহাতে যেয়ো না যেয়ো না দীপ নিভিতে দাও।
    নিবু-নিবু প্রদীপ নিবুক হে পথিক ক্ষণিক থাকিয়া যাও॥
    ঢুলিয়া পড়িতে দাও ঘুমে অলস আঁখি ক্লান্ত করুণ কায়,
    সুদূর নহবতে বাঁশরি বাজিতে দাও উদাস যোগিয়ায়।
    	হে প্রিয় প্রভাতে ও-রাঙা পায়
    	বকুল ঝরিয়া মরিতে চায়,
    তব হাসির আভায় তরুণ অরুণ প্রায় দিক রাঙিয়ে যাও॥
    
  • নিশি-ভোরে অশান্ত ধারায় ঝরঝর বারি ঝরে

    বাণী

    নিশি-ভোরে অশান্ত ধারায় ঝরঝর বারি ঝরে।
    আকাশ-পারের বিরহীর বীণা যেন সুর ঝুরে আকুল স্বরে।।
    কাহার মদির নিঃশ্বাস আসে
    বকুলের বনে ঝরা ফুল বাসে
    কর হানি দ্বারে যেন বারে বারে
    খোল দুয়ার বলি ডাকে ঘুমঘোরে।।
    ডাকে কেয়া বনে ডাহুক কেকা
    বিরহের ভার বহি কত আর একা
    ম্লান হয়ে এলো চোখে কাজলের লেখা অশ্রু-লোরে।।
    

  • নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে

    বাণী

    নিশিদিন তব ডাক শুনিয়াছি মনে মনে
    শ্রবণে শুনিনি আহ্বান তব পবনে শুনেছি বনে বনে।।
    	হে বিরহী তব আতাস
    	পাণ্ডু করেছে তোমার আকাশ
    বিজনে তোমারে করিয়াছি ধ্যান শুধা যে ফিরিনি জনে জনে।।
    সকলে যখন ঘুমায়ে পড়েছে আধ রাতে
    স্মৃতি মঞ্জুষা খুলিয়া দেখেছি নিরালাতে।
    	যদি তব ছবি ম্লান হয়ে যায়
    	অশ্রু সলিলে ধুয়ে রাখি তায়
    দেবতা তোমারে মৌন পূজায় নীরবে ধেয়াই নিরজনে।।
    
  • পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে

    বাণী

    পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে।
    মন হয়েছে উতলা গো তোমার আসার পথ চেয়ে।।
    	আকাশ জুড়ে আলোর খেলা
    	বসুন্ধরায় ফুলের মেলা
    রঙিন মেঘের ভাসলো ভেলা তোমারই আসার আভাস পেয়ে।।
    সাধ জাগে ঐ পথে তোমার পেতে রাখি মন প্রাণ
    চলতে গিয়ে দলবে তা’রে চরণ ছোঁয়া করিবে দান।
    	তোমার ধ্যানে, হে রাজাধিরাজ
    	সাজ ভুলেছি ভুলেছি কাজ
    আসবে তুমি সেই খুশিতে আছে আমার মন ছেয়ে।।
    
  • পলাশ ফুলের গেলাস ভরি

    বাণী

    পলাশ ফুলের গেলাস ভরি’ পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া
    চাঁদিনী রাতের চাঁদোয়া তলে বুকের আঁচল দিব পাতিয়া।।
    নয়ন-মণির মুকুরে তোমার দুলিবে আমার সজল ছবি
    সবুজ ঘাসের শিশির ছানি মুকুতা মালিকা দিব গাঁথিয়া।।
    		ফিরোজা আকাশ আবেশে ঝিমায়
    		দীঘির বুকে কমল ঘুমায়
    নীরব যখন পাখির কূজন আমরা দু’জন রব জাগিয়া।।
    
  • পালিয়ে তুমি বেড়াবে কি এমনিভাবে

    বাণী

    পালিয়ে তুমি বেড়াবে কি এমনিভাবে
    এমনি ক'রে জনম কি মোর কেঁদেই যাবে।।
    	ওগো চপল বনের পাখি
    	ধরা তুমি দেবে না কি,
    অন্তরালে থাকি' শুধু গান শোনাবে।।
    কেন এলে নিঠুর তুমি পথিক হাওয়া
    তোমার স্বভাব ফুল ফুটিয়েই ঝরিয়ে যাওয়া
    	হে বিরহী, লীলা-চত্বর,
    	অশ্রু কি মোর এতই মধুর!
    কবে এসে আমার অভিমান ভাঙাবে।।
    

  • প্রিয় কোথায় তুমি কোন গহনে

    বাণী

    প্রিয় কোথায় তুমি কোন গহনে
    কোন ধ্রুবলোকে কোন দূর গগনে।।
    খোঁজে কানন তোমায় মেলি' কুসুম-আঁখি,
    'তুমি কোথায়' বলি' ডাকে বনের পাখি।
    আছ ঠকুর হয়ে কোন দেবালয়ে
    কোন শ্রাবন-মেঘে দখিনা পবনে।।
    সিন্ধু-বুকে মুখে লুকায়ে নদী
    'তুমি কোথায়' বলি' কাঁদে নিরবধি।
    	জ্বালি' তারার বাতি
    	খোঁজে আঁধার রাতি,
    তোমায় খুঁজিয়া নিভিল জ্যোতি মোর নয়নে।।
    

  • প্রিয় তব গলে দোলে যে হার কুড়িয়ে পাওয়া

    বাণী

    প্রিয়	তব গলে দোলে যে হার কুড়িয়ে পাওয়া
    সে যে	হার নহে, হৃদয় মোর হারিয়ে যাওয়া।।
    	তোমারি মতন যেন কাহার সনে
    	সেদিন পথে চোখাচোখি হল গোপনে
    মন	চকিতে হরিল যে সেই চকিত চাওয়া।।
    ছিল	চৈতালি সাঁঝ, তাহে পথ নিরালা
    ছিনু	একেলা আমি, চলে একেলা বালা
    বহে	ঝিরিঝিরি ধীরি-ধীরি চিতী হাওয়া
    	চাহিল সে মুখে মোর ঘোমটা তুলে
    তার	নয়নে ও ঘটে জল উঠিল দুলে
    	চেয়ে দেখি মোর আঁখি সলিল ছাওয়া।।
    
  • প্রিয়তম এত প্রেম দিও না গো সহিতে পারি না আর

    বাণী

    প্রিয়তম, এত প্রেম দিও না গো সহিতে পারি না আর
    তটিনীর বুকে ঝাঁপায়ে পড়িলে কেন মহা- পারাবার।।
    	তোমার প্রেমের বন্যায় বঁধু, হায়!
    	দুই কুল মোর ভাঙিয়া ভাসিয়া যায়;
    আমি নিজেরে হারাতে চাহিনি, বন্ধু; দিতে চেয়েছিনু হার।।
    তুমি চাহ বুঝি তুমি ছাড়া আর রহিবে না মোর কেউ,
    তাই কি পরানে তুফান তোলে গো এত রোদনের ঢেউ।
    	দেহ ও মনের সীমা ছাড়াইয়া মোরে
    	কোথায় নিয়ে যেতে চাও মোর হাত ধরে
    বলো কোন মধু বনে শেষ হবে বঁধু আমাদের অভিসার।।