কেন প্রাণ ওঠে কাঁদিয়া

বাণী

কেন		প্রাণ ওঠে কাঁদিয়া
		কাঁদিয়া কাঁদিয়া কাঁদিয়া গো।
আমি		যত ভুলি ভুলি করি, তত আঁকড়িয়া ধরি
		শ্যামের সে রূপ ভোলা কি যায়, নিখিল শ্যামল যার শোভায়
		আকাশে সাগরে বনে কান্তারে লতায় পাতায় সে রূপ ভায়।
আমার		বঁধুর রূপের ছায়া বুকে ধরি’ আকাশ-আরশি নীল গো
বহে		ভুবন প্লাবিয়া কালারে ভাবিয়া কালো সাগর-সলিল গো। সখি গো —
		যদি ফুল হয়ে ফুটি তরু-শাখে, সে যে পল্লব হয়ে ঘিরে থাকে। সখি গো —
আমি		যেদিকে তাকাই হেরি ও-রূপ কেবল
সে যে		আমারি মাঝারে রহে করি’ নানা ছল
সে যে		বেণী হয়ে দোলে পিঠে চপল চতুর।
সে যে		আঁখির তারায় হাসে কপট নিঠুর।
		তারে কেমনে ভুলিব, সখি কেমনে ভুলিব।
থাকে		কবরী-বন্ধে কালো ডোর হয়ে কাল্‌ফণী কালো কেশে গো
থাকে		কপালের টিপে, চোখের কাজলে কপোলের তিলে মিশে’ গো!
আমার 	এ-কূল ও-কূল দু’কূল গেল।
		কূলে সই পড়িল কালি সেও কালো রূপে এলো।
রাখি		কি দিয়া মন বাঁধিয়া, বাঁধিয়া বাঁধিয়া বাঁধিয়া গো।।

হেমন্তিকা এসো এসো হিমেল শীতল বন-তলে

বাণী

হেমন্তিকা এসো এসো হিমেল শীতল বন-তলে
শুভ্র পূজারিণী বেশে কুন্দ-করবী-মালা গলে।।
	প্রভাত শিশির নীরে নাহি'
	এসো বলাকার তরণী বাহি'
সারস মরাল সাথে গাহি' চরণ রাখি' শতদলে।।
ভরা নদীর কূলে কূলে চাহিছে সচকিতা চখি —
মানস-সরোবর হ'তে-অলক -লক্ষ্মী এলো কি?
	আমন ধানের ক্ষেতে জাগে
	হিল্লোল তব অনুরাগে,
তব চরণের রঙ লাগে কুমুদে রাঙা কমলে।।

কৃষ্ণ-প্রিয়া লো কেমনে যাবি

বাণী

কৃষ্ণ-প্রিয়া লো! কেমনে যাবি অভিসারে?
সে বিরহী রসে মানস সুরধুনী ’পারে।।
সে এ পারে রহে না
পারাপারের অতীত সে, এ পারে রহে না,
এ পারে না, ও পারেও রহে না, কোন পারে রহে না।।
গগনে গুরু গুরু মেঘ গরজে অবিরল বাদল ঝর ঝর ঝরে,
আঁখি-জলে আঁখি তোর টলমল সই অন্তর দুরুদুরু করে।
পথ দেখিবি কেমনে
আঁখি-জলে পিছল আঁখি, পথ দেখিবি কেমনে।
তোর আঁখি পিছল পথও পিছল পথে যাবি কেমনে,
তোর অন্তরে মেঘ, বাহিরে মেঘ পথ দেখিবি কেমনে।
একে কুহু-যামিনী তাহে কুল-কামিনী পথে পথে কালনাগিনী (লো),
আছে আড় পেতে শাশুড়ি ননদিনী লো।
তুই চাতকীর মত কেতকীর মত রাই
মেঘ দেখে মত্ত হইলি ভয় নাই,
যার প্রেমের পথে বাধা বিধির অভিশাপ — সাপেরে সে ভয় করে না।।

ফিরে এলো সেই কৃষ্ণাষ্টমী তিথি

বাণী

ফিরে এলো সেই কৃষ্ণাষ্টমী তিথি, হে শঙ্খচক্রধারী!
তোমার মাভৈঃ অভয় আকাশবাণী, কেন নাহি শুনি? হে মুরারি!!
	সেই ঘনঘটা দুর্যোগ-নিশি
	নিরাশা-আঁধারে ঢাকা দশদিশি;
গগনে তেমনি ঘোর দুন্দুভি বাজে, ঝরে তেমনি অশ্রু-বারি।।
আজো মানুষের আত্মা তেমনি কাঁদে আশা-যমুনার দুই পারে,
এ-পারে দেবকী ও-পারে যশোদা আজো ডাকে মুক্তির বিধাতারে।
	আবার প্রেমের বংশী বাজাও,
	এই হানাহানি হিংসা ভুলাও,
আর্ত-কলির গানের এ শেষ-কলি দাও শেষ করে ব্যথাহারী।।

চোখের বাঁধন খুলে দে মা

বাণী

		চোখের বাঁধন খুলে দে মা খেলব না আর কানামাছি।
আমি		মার খেতে আর পারি না মা এবার বুড়ি ছুঁয়ে বাঁচি।।
			তুই পাবি অনেক মেয়ে ছেলে
			যাদের সাধ মেটেনি খেলে খেলে,
তুই		তাদের নিয়েই খেল না মা গো শ্রান্ত আমি রেহাই যাচি।
		দুঃখ-শোক-ঋণ-অভাব ব্যাধি মায়ার খেলুড়িরা মিলে,
		শত দিকে শত হাতে আঘাত হানে তিলে তিলে।
			চোর হয়ে মা আর কত দিন 
			ঘুরব ভবে শান্তিবিহীন,
তোর		অভয় চরণ পাই না কেন মা তোর এত কাছে আছি।।

ব্যথার উপরে বঁধু ব্যথা দিও না

বাণী

ব্যথার উপরে বঁধু ব্যথা দিও না
দলিত এ হৃদি মম দ’লে যেয়ো না ॥
		ল’য়ে কত সাধ আশা
		তোমার দুয়ারে আসা
(বঁধু) দিলে যদি আলোবাসা ফিরে নিয়ো না॥
স্রোতের কুসুম প্রায় ভাসিতাম অসহায়
তুলে নিয়ে বুকে তারে ফেলে দিলে পুনরায়।
		নিরদয় এ কি খেলা
		প্রাণ নিয়ে হেলাফেলা
খেলার লাগিয়া ভালবাসিও না॥