রব না কৈলাশপুরে আই য়্যাম

বাণী

রব না কৈলাশপুরে আই য়্যাম ক্যালকাটা গোয়িং।
যত সব ইংলিশ ফ্যাশান আহা মরি কি লাইটনিং।।
	ইংলিশ ফ্যাশান সবই তার
	মরি কি সুন্দর বাহার,
	দেখলে বন্ধু দেয় চেয়ার —
		কাম-অন ডিয়ার গুড মর্নিং।।
	বন্ধু আসিলে পরে
	হাসিয়া হান্ডসেক করে,
	বসায় তারে রেসপেক্ট করে —
		হোল্ডিং আউট এ মিটিং।।
	তারপর বন্ধু মিলে
	ড্রিংকিং হয় কৌতুহলে,
	খেয়েছ সব জাতিকুলে —
		নজরুল এসলাম ইজ টেলিং।।

‘লেটো গান’

ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে

বাণী

(সখি) ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে
দেখা হ'লে রাতে ফুল-বনে।।
কে করে ফুল চুরি জেনেছে ফুলমালী
কে দেয় গহীন রাতে ফুলের কুলে কালি
জেনেছে ফুলমালী গোপনে।।
ও-পথে চোর-কাঁটা, সখি, তায় বলে দিও
বেঁধে না বেঁধে না লো যেন তার উত্তরীয়।
এ বনফুল লাগি' না আসে কাঁটা' দলি'
আপনি যাব চলি' বঁধুয়ার কুঞ্জ-গলি
বিনা মূলে বিকাইব ও-চরণে।।

ওমা নির্গুণেরে প্রসাদ দিতে

বাণী

ওমা	নির্গুণেরে প্রসাদ দিতে তোর মত কেউ নাই।
তোর	পায়ে মা তাই রক্তজবা গায়ে শ্মশান-ছাই।।
		দৈত্য-অসুর হনন ছলে
		ঠাঁই দিস্ তুই চরণ তলে,
আমি	তামসিকের দলে মা গো তাই নিয়েছি ঠাঁই।।
	কালো ব’লে গৌরী তোরে কে দিয়েছে গালি,
(ওমা)	ত্রিভুবনের পাপ নিয়ে তোর অঙ্গ হ’ল কালি।
		অপরাধ না করলে শ্যামা
		ক্ষমা যে তোর পেতাম না মা,
(আমি)	পাপী ব’লে আশা রাখি চরণ যদি পাই।।

নন্দলোক হতে আমি এনেছি

বাণী

নন্দলোক হতে (আনন্দলোক হতে) আমি এনেছি রে মহামায়ায়।
				এনেছি মা মহামায়ায়।
বন্ধ যথায় বন্দী যত কংসরাজার অন্ধকারায়।।
	বন্দী জাগো! ভাঙো আগল,
	ফেল রে ছিঁড়ে পায়ের শিকল;
বুকের পাষাণ ছুঁড়ে ফেলে মুক্তলোকে বেরিয়ে আয়।।
আমার বুকের গোপালকে রে রেখে এলাম ‘নন্দালয়ে’
সেইখানে সে বংশী বাজায় আনন্দ-গোপ-দুলাল হয়ে।
	মা’র আদেশে বাজাবে সে
	অভয় শঙ্খ দেশে দেশে,
(তোরা) নারায়ণী সেনা হবি, এবার নারায়ণীর কৃপায়।।

অ-মা! তোমার বাবার নাকে

বাণী

অ-মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং?
খাঁদা নাকে নাচ্‌ছে ন্যাদা-নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
ওঁর নাক্‌টাকে কে করল খ্যাঁদা র‍্যাঁদা বুলিয়ে?
চাম্‌চিকে-ছা ব’সে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে!
বুড়ো গুরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
ওঁর খ্যাঁদা নাকের ছেঁদা দিয়ে টুকিকে দেয় ‌‘টু’!
ছোড়্‌দি’ বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক্‌! থুঃ
কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
দাদু বুঝি চীনাম্যান মা, নাম বুঝি চ্যাংচু?
তাই বুঝি ওঁর মুখ্‌টা অমন চ্যাপ্টা সুধাংশু!
জাপান দেশের নোটিশ উনি নাকে এঁটেছেন!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়-নাক,
ঘুম দিলে ঐ চ্যাপ্টা নাকেই বাজ্‌তো সাতটা শাঁখ,
দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাব্‌ড়া করেছেন!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চ’লতে বেঁজির ছা,
দাড়ির জালে প’ড়ে যাদুর আটকে গেছে গা,
বিল্লি-বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙতে ‘আল্‌মানক্‌’
গজাল ঠুঁকে দেছেন ভেঙে বাঁকা নাকের কাঁখ?
মুচি এসে দাদুর আমার নাক ক’রেছে ‘ট্যান’!
অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে,
সেথায় নিয়ে চল দাদু দেখন-হাসিকে।
সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান,
খাঁদু-দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!

‘খাঁদু-দাদু’

[সঞ্চিতা, কাজী নজরুল ইসলাম, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা, ২০০৫]

আজিকে তনু মনে লেগেছে রঙ লেগেছে রঙ

বাণী

আজিকে তনু মনে লেগেছে রঙ লেগেছে রঙ
বঁধূর বেশে ধরা সেজেছে অভিনব ঢঙ।।
	কাননে আলো-ছায়া
	নয়নে রঙের মায়া
দোলে দোদুল কায়া পরানে বাজিছে সারঙ।।
	সে-রঙে সাগর-কোলে
	কত চাঁদ, রবি দোলে
বাজে গগন তলে জলদ তালে মেঘ-মৃদঙ।।