ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর এমন গান!
সেদিন দুয়ার ভেঙে আসবে জোয়ার মরা গাঙে ডাকবে বান।।
তোরা স্বার্থ-পিশাচ যেমন কুকুর তেমনি মুগুর পাস রে মান।
সেই কলজে চুঁয়ে গলছে রক্ত দলছে পায়ে ডলছে কান।।
ওরে তোরা করিস লাঠালাঠি সিন্ধু-ডাকাত লুটছে ধান!
তাই গোবর-গাদা মাথায় তোদের কাঁঠাল ভেঙে খায় শেয়ান।।
ছিলি সিংহ ব্যাঘ্র, হিংসা-যুদ্ধে আজকে এমন ক্ষিন্ন প্রাণ।
মুখের গ্রাস ঐ গিলছে শেয়াল, তোমরা শুয়ে নিচ্ছ ঘ্রাণ।।
তোরা বাঁদর ডেকে মানলি সালিশ ভাইকে দিতে ফাটলো প্রাণ!
সালিশ নিজেই, ‘খা ডালা সব’, বোকা তোদের এই দেখান।।
তোরা নাক কেটে নিজ পরের যাত্রা ভঙ্গ করিস বুদ্ধিমান
তোদের কে যে ভালো কে যে মন্দ সব শিয়ালই এক সমান।।
শুনি আপন ভিটের কুকুর রাজা, তার চেয়েও হীন তোদের প্রাণ।
তাই তোদের দেশ এই হিন্দুস্থানে নাই তোদেরই বিন্দু স্থান।।
আজ সাধে ভারত-বিধাতা কি চোখ বেঁধে ঐ মুখ লুকান!
তোরা বিশ্বে যে তার রাখিসনে ঠাঁই কানা গরুর ভীন বাথান।।
তোরা করলি কেবল অহরহ নীচ কলহের পরল পান।
আজ বুঝলি নে হায় নাড়ি-ছেড়া মায়ের পেটের ভায়ের টান।।
মাগো আমি তান্ত্রিক নই তন্ত্র মন্ত্র জানি না মা।
আমার মন্ত্র যোগ-সাধনা ডাকি শুধু শ্যামা শ্যামা।।
যাই না আমি শ্মশান মশান
দিই না পায়ে জীব বলিদান,
খুঁজতে তোকে খুজি না মা অমাবস্যা ঘোর ত্রিযামা।।
ঝিল্লী যেমন নিশীথ রাতে একটানা সুর গায় অবিরাম
তেমনি করে নিত্য আমি জপি শ্যামা তোমারি নাম।
শিশু যেমন অনায়াসে
জননীরে ভালোবাসে,
তেমনি সহজ সাধনা মোর তাতেই পাব তোর দেখা মা।।
এসো শঙ্কর ক্রোধাগ্নি হে প্রলয়ঙ্কর।
রুদ্রভৈরব! সৃষ্টি সংহর, সংহর।।
জ্ঞান-হীন তমসায় মগ্ন পাপ-পঙ্কিলা
বিশ্ব জুড়ি’ চলে শিবহীন যজ্ঞের লীলা,
শক্তি যথায় করে আত্ম-বিসর্জন ঘৃণায় —
ধ্বংস কর সেই অশিব-যজ্ঞ — অসুন্দর।।
যথা দেবী শক্তি — নারী অপমান সহে
গ্লানিকর হানাহানি চলে ধরমের মোহে,
হানো সংঘাত, অভিসম্পাৎ সেথা নিরন্তর।।
আমার নয়নে কৃষ্ণ-নয়নতারা হৃদয়ে মোর রাধা-প্যারী।
আমার প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা শ্যাম-সোহাগী গোপ-নারী।।
আমার স্নেহে জাগে সদা
পিতা নন্দ মা যশোদা,
ভক্তি আমার শ্রীদাম-সুদাম আঁখি-জল যমুনা-বারি।।
আমার সুখের কদম-শাখায়
কিশোর হরি বংশী বাজায়
আমার দুখের তমাল ছায়ায় — লুকিয়ে খেলে বন-বিহারী।।
মুক্ত আমার প্রাণের গোঠে চরায় ধেনু রাখাল-কিশোর,
আমার প্রিয়জনে নেয় সে হরি’, সেই ত ননী খায় ননী-চোর।
রাধা-কৃষ্ণ-কথা শুনায় — দেহ ও মন শুক-শারী।।