সেই রবিয়ল আউয়ালেরই চাঁদ এসেছে ফিরে

বাণী

সেই রবিয়ল আউয়ালেরই চাঁদ এসেছে ফিরে
		ভেসে আকুল অশ্রুনীরে।
আজ মদিনার গোলাপ বাগে বাতাস বহে ধীরে
		ভেসে আকুল অশ্রুনীরে।।
	তপ্ত বুকে আজ সাহারার
	উঠেছে রে ঘোর হাহাকার
মরুর দেশে এলো আঁধার শোকের বাদল ঘিরে।।
চবুতরায় বিলাপ করে কবুতরগুলি খোঁজে নবীজীরে।
কাঁদিছে মেষশাবক, কাঁদে বনের বুলবুলি গোরস্থান ঘিরে।।
	মা ফাতেমা লুটিয়ে প’ড়ে
	কাঁদে নবীর বুকের পরে
আজ দুনিয়া জাহান কাঁদে কর হানি শিরে।।

প্রেমের হাওয়া বইল যখন

বাণী

প্রেমের হাওয়া বইল যখন মুকুল গেল ঝ’রে।
প্রদীপ নিভে রইল, যখন তুমি এলে ঘরে।।
	তোমার আসার লগ্ন এলো
	যে-দিন আশা ফুরিয়ে গেল,
মন গিয়াছে ম’রে যখন পেলাম মনোহরে।।
আঘাত দিয়ে দিয়ে যে-দিন করলে পাষাণ মোরে,
সেদিন নিয়ে বসালে হায়! তোমার ঠাকুর ঘরে।
	তোমার শুভ দৃষ্টি লাগি’
	বহু সে-যুগ ছিলাম জাগি’
আজি কি বেলা-শেষে তুমি এলে স্বয়ম্বরে।।

নাইয়া ধীরে চালাও তরণী

বাণী

	নাইয়া! ধীরে চালাও তরণী
	একে ভরা ভাদর তায় বালা মাতোয়ালা মেঘলা রজনী।।
	হায় পারে নেওয়ার ছলে নিলে মাঝ নদীতে
	যৌবন-নদী টলমল নারি রোধিতে
ঐ	ব্যাকুল বাতাস হরি’ নিল লাজ বাস
তায়	চঞ্চল-চিত যে তুমি চাহ বধিতে
	পায়ে ধরি ছাড়, বঁধু আমি পরের ঘরের ঘরণী।।
	তরঙ্গ ঘোর রঙ্গ করে, অঙ্গে লাগে দোল্
	একি এ নেশার ঘোরে তনু মন আঁখি লোল্।
	দুলিছে নদী দুলে বায়ু দুলিছে তরী
	কেমনে থির রাখি মোর চিত উতরোল ।
	ওঠে ডিঙি পান্‌সি ভরি’ বারি কি করি কিশোরী রমণী।।

আয় বিজয়া আয় রে জয়া

বাণী

আয় বিজয়া আয় রে জয়া উমার লীলা যা রে দেখে।
সেজেছে সে মহাকালী চোখের কাজল মুখে মেখে।।
	সে ঘুমিয়েছিল আমার কোলে
	জেগে উঠে কেঁদে বলে,
আমায় কালী সাজিয়ে দে মা ছেলেরা মোর কাঁদছে ডেকে।।
চেয়ে দেখি মোর উমা নাই নাচে কালী দিগম্বরী,
হুঙ্কার দেয় কোটি গ্রহের মুণ্ডমালা গলায় পরি’।
	আমি শুধু উমায় চিনি
	এ কোন্ মহামায়াবিনী,
কালোরূপে বিশ্বভুবন আকাশ-পবন দিল ঢেকে।।

পথ চলিতে যদি চকিতে

বাণী

পথ চলিতে যদি চকিতে কভু দেখা হয়, পরান-প্রিয়!
চাহিতে যেমন আগের দিনে তেমনি মদির চোখে চাহিও।।
		যদি গো সেদিন চোখে আসে জল,
		লুকাতে সে জল করিও না ছল,
যে-প্রিয় নামে ডাকিতে মোরে সে-নাম ধরে বারেক ডাকিও।।
		তোমার বঁধু পাশে (হায়) যদি রয়,
		মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়,
কহিব তা’রে, ‘আমার প্রিয়ারে আমারো অধিক ভালোবাসিও’।।‌
		বিরহ-বিধুর মোরে হেরিয়া,
		ব্যথা যদি পাও যাব সরিয়া,
রব না হ’য়ে পথের কাঁটা, মাগিব এ বর মোরে ভুলিও।।

শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা

বাণী

শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা, আয় রে আয়
গিরি–দরি, বনে–মাঠে, প্রান্তরে রূপ ছাপিয়ে যায়।।
ধানের ক্ষেতে, বনের ফাঁকে, দেখে যা মোর কালো মা–কে
ধূলি–রাঙা পথের বাঁকে বৈরাগিনী বীণ বাজায়।।
ভীরু মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় পল্লীগ্রামে এক্‌লাটি
বিজনমাঠে গ্রাম সে বসায় নিয়ে কাদা, খড়, মাটি
কালো মেঘের ঝারি নিয়ে করুণা–বারি ছিটায়।।
কাজলা–দীঘির পদ্মফুলে যায় দেখা তার পদ্ম–মুখ
খেলে বেড়ায় ডাকাত–মেয়ে বনে লয়ে বাঘ–ভালুক
ঝড়ের সাথে নৃত্যে মাতে বেদের সাথে সাপ নাচায়।।
নদীর স্রোতে পাথর নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে তার
সাঁঝের বারান্দাতে দাঁড়ায় টীপ প’রে সন্ধ্যা–তারার।
ঊষার গাঙে ঘট ভরিতে যায় সে মেয়ে ভোর বেলায়।
হরিত শস্যে লুটায় আঁচল ঝিল্লিতে নূপুর বাজে
ভাটিয়ালি গায় ভাটির স্রোতে গায় বাউল মাঠের মাঝে (মা)।
গঙ্গা–তীরে শ্মশান–ঘাটে কেঁদে কভু বুক ভাসায়।।