হায় হায় উঠিল মাতম আকাশ পবন ভুবন ভরি

বাণী

হায় হায় উঠিল মাতম আকাশ পবন ভুবন ভরি’।
আখেরি নবী দ্বীনের রবি বিদায় নিল বিশ্ব-নিখিল আঁধার করি’।।
অসীম তিমিরে পুণ্যের আলো
আনিল যে চাঁদ, সে কোথায় লুকালো
আকাশে ললাট হানি’ কাঁদিছে মরুভূমি
শোকে গ্রহ-তারকা পড়িছে ঝরি’।।
তৃণ নাহি খায় উট, মেষ নাহি মাঠে যায়;
বিহগ-শাবক কাঁদে জননীরে ভুলি হায়!
বন্ধুর বিরহ কি সহিল না আল্লার,
তাই তারে ডাকিয়া নিল কাছে আপনার’;
হায় কান্ডারি গেল চ’লে রাখিয়া পারের তরী।।

বৈতালিক

ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী

বাণী

ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী নামলো আমার সাহারায়।
বক্ষে কাঁদার বান ডেকেছে, আজ হিয়া কূল না হারায়।।
কণ্ঠে চেপে শুষ্ক তৃষা
মরুর সে-পথ তপ্ত সীসা,
চ’লতে একা পাইনি দিশা ভাই,
বন্ধ নিঃশ্বাস — একটু বাতাস্!
এক ফোঁটা জল জহর-মিশা! মিথ্যা আশা, নাই সে নিশানা’ই
হঠাৎ ও-কার ছায়ার মায়া রে —
যেন ডাক-নাম আজ গাল্-ভরা ডাক ডাকছে কে ঐ মা-হারায়।।
লক্ষ যুগের বক্ষ-ছায়া তুহিন্ হ’য়ে যে ব্যথা আর কথা ছিল ঘুমা,
কে সে ব্যথায় বুলায় পরশ রে?
ওরে গলায় তুহিন্ কাহার কিরণ-তপ্ত সোহাগ-চুমা?
ওরে ও-ভূত, লক্ষ্মী-ছাড়া
হতভাগা বাঁধন-হারা,
কোথায় ছুটিস্! একটু দাঁড়া, হায়!
ঐ ত তোরে ডাক্‌ছে স্নেহ
হাতছানি দেয় ঐ ত গেহ,
কাঁদিস্ কেন পাগল-পারা তায়?
এত ডুক্‌রে’ কিসের তিক্ত কাঁদন তোর?
অভিমানী! মুখ ফেরা দেখ্ যা পেয়েছিস্ তা’ও হারায়!
হায়, বুঝ্‌বে কে যে স্নেহের ছোঁওয়ায় আমার বাণী রা’ হারায়।।

ব্রজ-দুলাল ঘন শ‍্যাম

বাণী

ব্রজ-দুলাল ঘন শ‍্যাম
মোর হৃদে কর বিহার হে।।
নব অনুরাগের জ্বালায়ে বাতি
অঙ্গে অঙ্গে রাখি তব শেজ পাতি’
গাঁথি অশ্রু-মোতিহার হে।।
আরতি-প্রদীপ আঁখিতে জ্বালায়ে রাখি
পথ-পানে চাহি বার বার হে।।
নিবেদন করি নাথ তব চরণে
নিত্য পূজা-উপচার হে
বিরহ-গন্ধ ধূপ বেদনা চন্দন
পূজাঞ্জলি আঁখি-ধার হে
দেবতা এসো, খোল দ্বার হে।।

একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে

বাণী

একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
যেন কাহার ভাঙা কলস আকাশ গাঙে ভাসে।।
	সেই কলসি হতে ধরার ’পরে
	অঝোর ধারায় মধু ঝরে রে
দলে দলে তাই কি তারার মৌমাছিরা আসে।।
সেই মধু পিয়ে ঘুমের নেশায় ঝিমায় নিশীথ রাতি
বন-বধূ সেই মধু ধরে ফুলের পাত্র পাতি’।
	সেই মধু এক বিন্দু পিয়ে
	সিন্ধু ওঠে ঝিলমিলিয়ে রে
সেই চাঁদেরই আধখানা কি তোমার মুখে হাসে।।

আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে

বাণী

আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে কৃষ্ণ কানাই খেলে হোলি।
হোরির মাতনে চুড়ি ও কাঁকনে উঠিছে কল-কাকলি।।
শ্যামল তনু হ’ল রাঙা আবিরে রেঙে,
ইন্দ্রধনু-ছটা যেন কাজল মেঘে,
				রাঙিল রঙে নীল চোলি।।
লহু লহু হাসে মুহু মুহু ভাসে রাঙা কুঙ্কুম ফাগের রাগে,
দোঁহে দুহু ধরি’ মারে পিচকারি চাঁদ-মুখে কলঙ্ক জাগে।
অঙ্গে অপাঙ্গে অনঙ্গ-রঙ্গিমা ইঙ্গিতে উঠিছে উছলি’।।

ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি

বাণী

ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি ঘুম দিয়ে যেয়ো,
বাটা ভ’রে পান দেবো গাল ভ’রে খেয়ো।
		ঘুম আয় রে, ঘুম আয় ঘুম।।
ঘুম আয় রে, দুষ্টু খোকায় ছুঁয়ে যা
চোখের পাতা লজ্জাবতী লতার মত নুয়ে যা,
		ঘুম আয় রে, ঘুম আয় ঘুম।।
মেঘের মশারিতে রাতের চাঁদ পড়ল ঘুমিয়ে,
খোকার চোখের পাপড়ি পড়ুক ঘুমে ঝিমিয়ে।
শুশুনি শাক খাওয়াব, ঘুম পাড়ানি আয়
ঝিঁঝিঁ পোকার নূপুর খোল, খোকা ঘুম যায়,
		ঘুম আয় রে, ঘুম আয় ঘুম।।

চলচ্চিত্র : ‘চৌরঙ্গী’