দেশ

  • আমি বেলপাতা জবা দেব না

    বাণী

    আমি	বেলপাতা জবা দেব না মাগো দেব শুধু আঁখিজল।
    	মাগো হাত দিয়ে যাহা দেওয়া যায়, পাই হাতে শুধু তার ফল।।
    	হাত দিয়ে ফল দিতে যাই
    	(মাগো) হাতে হাতে তার ফল পাই,
    	পাই অর্থ বিভব যশ
    	পাই না অমৃত আনন্দ মাগো, পাই না হৃদয়ে রস।
    	তাই আঁখিতে রাখিব ব’লে মা আনিয়াছি আঁখি ছলছল।।
    	এবার রাখিব চোখে চোখে তোরে ছাড়িয়া দেব না আর,
    	মাগো তুই চ’লে গেলে হয়ে যায় মোর ত্রিলোক অন্ধকার।
    		এবার দেখিবে নিত্য হৃদয়
    		তোর রাঙা চরণের অরুণ উদয়,
    	তাই জবা ফেলে দিয়ে মেলিয়াছি তাই হৃদয়ের শতদল।।
    
  • কেন করুণ সুরে হৃদয়পুরে বাজিছে বাঁশরি

    বাণী

    কেন করুণ সুরে হৃদয় পুরে বাজিছে বাঁশরি
    ঘনায় গহন নীরদ সঘন নয়ন মন ভরি॥
    বিজলি চমকে পবন দমকে পরান কাঁপে রে
    বুকের বঁধুরে বুকে বেঁধে ঝুরে বিধুরা কিশোরী॥
    
  • ঘন গগন ঘিরিল ঘন ঘোর

    বাণী

    ঘন গগন ঘিরিল ঘন ঘোর।
    শাওন-ধারা ঘন-শ্যাম-বরণ চরণ লাগি’ ঝর ঝরে অঝোর্‌।।
    		কুহু কেকা গাছে চম্পা শাখে (গো)
    		বিরহী বেণু ডাকে প্রিয়তমাকে (গো),
    মেঘ-মাঝে খুঁজে ফিরে সৌদামিনী কোথা লুকালো প্রিয়-ঘন চিতচোর।।
    		রহে না মন ঘরে অন্ধকারে
    		অভিসারে যেতে চায় বন-‘পারে,
    ঝুরে মৌন ব্যথায় কাননে কেতকী কাঁদে চিত-চাতকী কোথা শ্যাম কিশোর।।
    

    ১. কাহাকে

  • ঘন-ঘোর-মেঘ-ঘেরা দুর্দিনে ঘনশ্যাম

    বাণী

    ঘন-ঘোর-মেঘ-ঘেরা দুর্দিনে ঘনশ্যাম ভূ-ভারত চাহিছে তোমায়।
    ধরিতে ধরার ভার নাশিতে এ হাহাকার আরবার এসো এ ধরায়।।
    		নিখিল মানবজাতি কলহ ও দ্বন্দ্বে
    		পীড়িত শ্রান্ত আজি কাঁদে নিরানন্দে,
    শঙ্খপদ্ম হাতে এ ঘোর তিমির-রাতে তিমির-বিদারী এসো অরুণ-প্রভায়।।
    বিদূরিত কর এই নিরাশা ও ভয়, মানুষে মানুষে হোক প্রেম অক্ষয়।
    কলিতে দলিতে এসো এই দুখ-পাপ-তাপ আন বর সুন্দর, শেষ হোক অভিশাপ,
    গদা ও চক্র করে অরিন্দম এসো, হত-মার দুর্বল মাগিছে সহায়।।
    
  • ঘুমায়েছে ফুল পথের ধূলায়

    বাণী

    ঘুমায়েছে ফুল পথের ধূলায় (ওগো)
    	জাগিয়ো না উহারে ঘুমাইতে দাও।
    বনের পাখী ধীরে গাহ গান
    	দখিনা হাওয়া ধীরে ধীরে বয়ে যাও।।
    এখনো শুকায়নি চোখে তারই জল
    	এখনো আঁধারে হাসি ছলছল
    প্রভাত রবি শুকায়ো না তায়
    	ধীরে কিরণে তাহারি নয়নে চাও।।
    সামলে পথিক ফেলিয়ো চরন
    	ঝরেছে হেথায় ফুলেরও জীবন।
    ভুলিয়া দল না ঝরা পাতাগুলি
    	ফুল সমাধি থাকিতে পারে হেথাও।।
    

  • ঝরে বারি গগনে ঝুরু ঝুরু

    বাণী

    ঝরে বারি গগনে ঝুরু ঝুরু।
    জাগি একা ভয়ে নিদ্‌ নাহি আসে,
    ভীরু হিয়া কাঁপে দুরু দুরু।।
    দামিনী ঝলকে, ঝনকে ঘোর পবন
    ঝরে ঝর ঝর নীল ঘন।
    রহি’ রহি’ দূরে কে যেন কৃষ্ণা মেয়ে
    মেঘ পানে ঘন হানে ভুরু।।
    অতল তিমিরে বাদলের বায়ে
    জীর্ণ কুটীরে জাগি দীপ নিভায়ে,
    দূরে দেয়া ডাকে গুরু গুরু।।
    
  • তুমি সুন্দর হতে সুন্দর মম

    বাণী

    তুমি সুন্দর হতে সুন্দর মম মুগ্ধ মানস-মাঝে।।
    ধ্যানে, জ্ঞানে, মম হিয়ার মাঝারে তোমারি মূরতি রাজে।।
    	তোমারি বিহনে হৃদয় আঁধার
    	তোমারি বিরহে বহে আঁখি-ধার,
    আকাশে বাতাসে নিখিল ভুবনে বেদনার বাঁশি বাজে — 
    পাব কি গো দেখা বারেকের তরে আমার জীবন-সাঁঝে।।
    
  • তোমাদের দান তোমাদের বাণী

    বাণী

    তোমাদের দান, তোমাদের বাণী পূর্ণ করিল অন্তর।
    তোমাদের রস-ধারায় সিনানি’ হ’ল তনু শুচি-সুন্দর।।
    	শান্ত উদার আকাশের ভাষা
    	মলিন মর্তে অমৃত পিপাসা,
    দিলে আনি’, দিলে অভিনব আশা — গগন-পবন-সঞ্চর।।
    	বুলায়ে মায়ার অঞ্জন চোখে
    	ল’য়ে গেলে দূর কল্পনা-লোকে,
    রাঙাল কানন পলাশে অশোকে — তোমাদের-মায়া-মন্তর।।
    	ফিরদৌসের পথ-ভোলা পাখি
    	আনন্দ-লোকে গেলে সবে ডাকি’,
    ধূলি-ম্লান মন গেলে রঙে মাখি’ — ছানিয়া সুনীল অম্বর।।
    
  • দুপুর বেলাতে একলা পথে

    বাণী

    দুপুর বেলাতে একলা পথে,
    	ও কে হেলিয়া দুলিয়া চলিয়া যায়।
    ক্ষ্যাপা হাওয়াতে উড়িছে আঁচলা,
    খোঁপা খুলিয়া খুলিয়া খুলিয়া যায়।।
    	ছল ক’রে জল যায় সে আনিতে
    	দেখিয়া গুরুজন ঘোমটা দিতে,
    ও সে ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া যায়।।
    	কাহার গলার মালার তরে
    	আপন মনে আঁচল ভ’রে,
    ফুল তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া যায়।।
    	কার বিরহে পরান দহে
    	কিসের নেশায় মদির মোহে,
    ও সে ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া যায়।।
    
  • ফিরিয়া এসো এসো হে ফিরে

    বাণী

    ফিরিয়া এসো এসো হে ফিরে
    বঁধু এ ঘোর বাদলে নারি থাকিতে একা।
    হায় গগনে মনে আজি মেঘের ভিড়
    	যায় নয়ন-জলে মুছে কাজল-লেখা।।
    ললাটে কর হানি’ কাঁদিছে আকাশ
    শ্বসিছে শন-শন হুতাস বাতাস।
    তোমারি মত ঝড় হানিছে দ্বারে কর,
    	খোঁজে বিজলি তোমারি পথ-রেখা।।
    মেঘেরে সুধাই তুমি কোথায়
    কাঁদন আমার বাতাসে ডুবে যায়!
    ঝড়ের নূপুর পরি’ রাঙা পায়
    	শ্যামল-সুন্দর দাও দেখা।।
    
  • বহিছে সাহারায় শোকেরই 'লু' হাওয়া

    বাণী

    বহিছে সাহারায় শোকেরই 'লু' হাওয়া
    দোলে অসীম আকাশ আকুল রোদনে।
    নূহের প্লাবন আসিল ফিরে যেন,
    ঘোর অশ্রু-শ্রাবণ ধারা ঝরে সঘনে।।
    'হায় হোসেনা' 'হায় হোসেনা' বলি'
    কাঁদে গিরি নদী, কাঁদে বনস্থলী
    কাঁদে পশু ও পাখী তরুলতার সনে।।
    ফকির বাদশাহ গরীব ওমরাহে
    কাঁদে তেমনি আজো তাঁরি মর্সিয়া গাহে,
    বিশ্বে যাবে মুছে মুছিবে না এ আঁসু,
    চিরকাল ঝরিবে কালের নয়নে।।
    সেই সে কারবালা সেই ফোরাত নদী
    কুল-মুসলিম-হৃদে গাহিছে নিরবধি,
    আসমান জমীন রহিবে যতদিন
    সবে কাঁদিবে এমনি আকুল কাঁদনে।।
    
  • মোরা ছিনু একেলা হইনু দু’জন

    বাণী

    	মোরা ছিনু একেলা, হইনু দু’জন।
    	সুন্দরতর হ’ল নিখিল ভুবন।।
    আজি	কপোত-কপোতী শ্রবণে কুহরে,
    	বীণা বেণু বাজে বন-মর্মরে।
    	নির্ঝর-ধারে সুধা চোখে মুখে ঝরে,
    	নূতন জগৎ মোরা করেছি সৃজন।।
    	মরিতে চাহি না, পেয়ে জীবন-অমিয়া!
    	আসিব এ কুটিরে আবার জনমিয়া।
    	আরো চাই আরো চাই অশেষ জীবন।।
    আজি	প্রদীপ-বন্দিনী আলোক-কন্যা,
    	লক্ষ্মীর শ্রী লয়ে আসিল অরণ্যা,
    	মঙ্গল-ঘটে এলো নদীজল-বন্যা,
    	পার্বতী পরিয়াছে গৌরী-ভূষণ।।
    
  • সজল-কাজল-শ্যামল এসো তমাল-কানন-ঘেরি

    বাণী

    সজল-কাজল-শ্যামল এসো তমাল-কানন-ঘেরি,
    কদম-তমাল-কানন ঘেরি।
    মনের ময়ূর কলাপ মেলিয়া নাচুক তোমারে হেরি’।।
    ফোটাও নীরস চিত্তে সরস মেঘমায়া,
    আনো তৃষিত নয়নে মেঘল ছায়া,
    বাজাও কিশোর বাঁশের বাঁশরি ব্যাকুল বিরহেরই।।
    দাও পদরজঃ হে ব্রজবিহারী, মনের ব্রজধামে —
    রুমু-ঝুমু ঝুমু বাজুক নূপুর চরণ ঘেরি,
    কদম-তমাল-কানন ঘেরি।।