ফুল-ফাগুনের এলো মরশুম

বাণী

ফুল-ফাগুনের এলো মরশুম বনে বনে লাগল দোল্।
কুসুম-সৌখিন দখিন হাওয়ার চিত্ত গীত-উতরোল।।
অতনুর ঐ বিষ-মাখা শর নয় ও-দোয়েল শ্যামার শিস্,
ফোটা ফুলে উঠ্‌ল ভ’রে কিশোরী বনের নিচোল।।
গুল্‌বাহারের উত্তরী কার জড়াল তরু-লতায়,
মুহু মুহু ডাকে কুহু তন্দ্রা-অলস, দ্বার খোল।
রাঙা ফুলে ফুল্ল-আনন দোলে কানন-সুন্দরী,
বসন্ত তার এসেছে আজ বরষ পরে পথ-বিভোল্।

তোমার দেওয়া ব্যথা সে যে

বাণী

তোমার দেওয়া ব্যথা, সে যে তোমার হাতের দান।
তাই তো সে দান মাথায় তুলে নিলাম, হে পাষাণ।।
	তুমি কাঁদাও তাই ত বঁধু
	বিরহ মোর হল মধু,
সে যে আমার গলার মালা তোমার অপমান।।
আমি বেদীমূলে কাঁদি, তুমি পাষাণ অবিচল,
জানি হে নাথ, সে যে তোমার পূজা নেওয়ার ছল।
	তোমার দেবালয়ে মোরে
	রাখলে পূজারিণী ক’রে,
সেই আনন্দে ভুলেছি নাথ সকল অভিমান।।

তোমায় দেখি নিতুই চেয়ে চেয়ে

বাণী

স্ত্রী	:	তোমায় দেখি নিতুই চেয়ে চেয়ে
		ওগো অচেনা বিদেশি নেয়ে॥
পুরুষ	:	যেতে এই পথে তরী বেয়ে
		দেখি নদীর ধারে তোমায় বারে বারে
		সজল কাজল বরণী মেয়ে॥
স্ত্রী	:	তোমার তরণীর আসার আশায়
		বসে থাকি কূলে কলস ভেসে যায়।
পুরুষ	:	তুমি পরো যে শাড়ি ভিন গাঁয়ের নারী
		আমি নাও বেয়ে যাই তারি সারি গান গেয়ে।
স্ত্রী	:	গাগরির গলায় মালা জড়ায়ে
		দিই তোমার তরে বঁধু স্রোতে ভাসায়ে॥
পুরুষ	:	সেই মালা চাহি’, নিতি এই পথে গো
		আমি তরী বাহি।
উভয়ে	:	মোরা এক তরীতে একই নদীর স্রোতে
		যাব অকূলে ধেয়ে॥

পরদেশী বঁধু ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি

বাণী

পরদেশী বঁধু! ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি
যদি গো নিশীথে গো ঘুমাইয়া থাকি।
	আমি ঘুমাইয়া থাকি
	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
যদি দীপ নেভে গো কুটিরে
বাতায়ন-পানে চাহি' যেয়ো না গো ফিরে',
নিভেছে আঁখি শিখা প্রাণ আছে বাকি
	আজো প্রাণ আছে বাকি
	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।

ও কে উদাসী বেণু বাজায়

বাণী

ও কে উদাসী বেণু বাজায়
ডাকে করুণ সুরে আয় আয়।।
ও সে বাঁধন হারা বাহির বিলাসী
	গৃহীরে করে সে পরবাসী
	রস যমুনায় উজান বহায়।।
মম মনের ব্রজে ওসে কিশোর রাখাল
যেন বাজায় বাঁশি শুনি অনাদিকাল
তার সরল বাঁশি তার তরল তাল
	অন্তরে গরল-সুধা মেশায়।।

কাহার তরে হায় নিশিদিন কাঁদে মন-প্রাণ

বাণী

কাহার তরে হায় নিশিদিন কাঁদে মন-প্রাণ।
জানে শুধু সেই, জানে মোর হৃদি ব্যথা-ম্লান।।
কমল-পাতে যেন জল, — প্রণয় তার সই
বুলবুলি চপল দ'লে যায় লতিকা বিতান।।
জানে শুধু সে নিতে মন, দিতে জানে না
ছলিয়া চলে সে-মুকুল, বারণ মানে না।
জীবন ল'য়ে সে খেলে মরণ-খেলা,
সকালে যারে চাহে তাহে বিকালে হেলা।
কুসুম-সমাধি রচে সে নিঠুর পাষাণ।।
চাহি শুধু এই, — যেন সে বাসিয়া ভালো
এমনি ব্যথা পায় সে ওগো ভগবান।।