আমি ভুলিতে পারি না সেই

বাণী

আমি ভুলিতে পারি না সেই দূর অমরার স্মৃতি।
যার আকাশে বিরাজে চির পূর্ণিমার তিথি।।
	আজও যেন শুনি ইন্দ্র সভায়
	দেবকুমারীরা ডাকে ‘আয় আয়’,
কেঁদে যেন ডাকে অলকানন্দা নন্দন-বন-বীথি।।

নাটক : ‘সুভদ্রা’ (উর্বশীর গীত)

শিউলি তলায় ভোর বেলায়

বাণী

শিউলি তলায় ভোর বেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লী-বালা।
শেফালি পুলকে ঝ’রে পড়ে মুখে খোঁপাতে চিবুকে আবেশ-উতলা।।
		ঘোম্‌টা খুলিয়া তার পিঠে লুটায়
		শিথিল কবরী লুটিছে পায়,
নৃত্যের ভঙ্গে ফুল তোলে রঙ্গে, আধো আঁধার বন তার রূপে উজালা।।
নিলাজ পাঁয়জোরে তার ওঠে ঝঙ্কার রিনিঝিনি, মন কয় চিনি চিনি
		এ কি গো বন-দেবীর সতিনী
শিশির ধরে’ পায় আল্‌তার রঙ্‌ চায় পাখি তারি গান গায় বনে নিরালা।।

আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল

বাণী

		আমরা শক্তি আমরা বল, আমরা ছাত্রদল।
মোদের	পায়ের তলায় মূর্চ্ছে তুফান
		ঊর্ধ্বে বিমান ঝড় বাদল!
				আমরা ছাত্রদল॥
মোদের	আঁধার রাতে বাধার পথে যাত্রা নাঙ্গা পায়,
আমরা		শক্ত মাটি রক্তে রাঙাই বিষম চলার ঘায়।
		যুগে যুগে রক্তে মোদারে সিক্ত হল পৃথ্বীতল।
				আমরা ছাত্রদল॥
মোদের	কক্ষচ্যুত ধূমকেতু-প্রায় লক্ষ্যহারা প্রাণ,
আমরা		ভাগ্যদেবীর যজ্ঞবেদীর নিত্য বলিদান।
যখন		লক্ষীদেবী স্বর্গে উঠেন আমরা পশি নীল অতল।
				আমরা ছাত্রদল॥
		আমরা ধরি মৃত্যু রাজার যজ্ঞ-ঘোড়ার রাশ,
		মোদের মৃত্যু লেখে মোদের জীবন-ইতিহাস।
		হাসির দেশে আমরা আনি সর্বনাশী চোখের জল।
				আমরা ছাত্রদল॥
		সবাই যখন বৃদ্ধি যোগায়, আমরা করি ভুল।
		সাবধানীরা বাঁধ বাঁধে সব, আমরা ভাঙি কূল।
		দারুণ রাতে আমরা তরুণ রক্তে করি পথ পিছিল।
				আমরা ছাত্রদল॥
মোদের	চক্ষে জ্বলে জ্ঞানের মশাল বক্ষে ভরা বাক্‌,
		কণ্ঠে মোদের কুণ্ঠা-বিহীন নিত্য-কালের ডাক।
আমরা		তাজা খুনে লাল করেছি সরস্বতীর শ্বেত-কমল।
				আমরা ছাত্রদল॥
ঐ		দারুণ উপপ্লবের দিনে আমরা দানি শির,
		মোদের মাঝে মুক্তি কাঁদে বিংশ-শতাব্দীর!
মোরা		গৌরবেরি কান্না দিয়ে ভরেছি মা’র শ্যাম আঁচল।
				আমরা ছাত্রদল॥
		আমরা রচি ভালোবাসার আশার ভবিষ্যৎ,
মোদের	স্বর্গ-পথের আভাস দেখায় আকাশ-ছায়াপথ!
		মোদের চোখে বিশ্ববাসীর স্বপ্ন দেখা হোক সফল।
				আমরা ছাত্রদল॥

জাগো অনশন-বন্দী ওঠ রে যত

বাণী

জাগো		অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত
		জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত!
যত		অত্যাচারে আজি বজ্র হানি’
হাঁকে		নিপীড়িত-জন-মন-মথিত বাণী,
নব		জনম লভি’ অভিনব ধরণী ওরে ঐ আগত।।
আদি		শৃঙ্খল সনাতন শাস্ত্র আচায়
মূল		সর্বনাশের, এরে ভাঙিব এবার।
ভেদি’		দৈত্য-কারা আয় সর্বহারা;
কেহ		রহিবে না আর পর-পদ-আনত।।
		নব ভিত্তি ‘পরে —
নব		নবীন জীবন হবে উত্থিত রে!
শোন্‌		অত্যাচারী! শোন্‌ রে সঞ্চয়ী!
		ছিনু সর্বহারা, হব সর্বজয়ী।
ওরে		সর্বশেষের এই সংগ্রাম-মাঝ।
নিজ		নিজ অধিকার জুড়ে দাঁড়া সবে আজ;
এই		‘জনগন-অন্তর-সংহতি’ রে
হবে		নিখিল মানব জাতি সমুদ্ধত।।

সাধ জাগে মনে পর-জীবনে

বাণী

		সাধ জাগে মনে পর-জীবনে
(আমি)		তব কপোলে যেন তিল হই।
		ভালবাসিয়া মোরে দিল্‌ দিবে তুমি
(যেন)		আমি তোমার মত বে-দিল্‌ হই।।
		মোর দেওয়া যে হার নিলে না অকরুণা
(যেন)		হয়ে সে হার তব বক্ষে রই।।
		যাহারে ভালবেসে তুমি চাহ না মোরে
		মরিয়া আসি যেন তাহারি রূপ ধ’রে
(তুমি)		হার মানিবে আমি হ’ব জয়ী।।
		হৃদি নিঙাড়ি মম আল্‌তা হব পায়ে
		অধরে হব হাসি রূপ-লাবনি গায়ে
		আমার যাহা কিছু তোমাতে হবে হারা
(প্রিয়)		তুমি জানিবে না আমা বৈ।।

এলো ঐ পূর্ণ শশী ফুল-জাগানো

বাণী

এলো ঐ		পূর্ণ শশী		ফুল-জাগানো
বহে বায়		বকুল-বনে	ঘুম-ভাঙানো।।
লাগিল		জাফরানি-রঙ	শিউলি-ফুলে
ফুটিল		প্রেমের কুঁড়ি	পাপড়ি খুলে,
খুশির আজ	আমেজ জাগে	মন-রাঙানো।।
চাঁদিনী		ঝিলমিলায়	ঝিলের জলে,
আবেশে		শাপলা ফুলের	মৃণাল টলে,
জাগে ঢেউ	দীঘির বুকে	দোল-লাগানো।।
এসো আজ	স্বপন-কুমার	নিরিবিলি
খুলিয়া		গোপন প্রাণের	ঝিলিমিলি,
এসো মোর	হতাশ প্রাণে	ভুল-ভাঙানো।।