বেহাগ মিশ্র

  • আকুল হলি কেন বকুল বনের

    বাণী

    আকুল হলি কেন বকুল বনের পাখি।
    দেখেছিস তুইও নাকি প্রিয়ার ডাগর আঁখি।।
    	মধু ও বিষ মেশা
    	সেই সে আঁখির নেশা
    তোরে ক’রেছে পাগল, তাই কি এ ডাকাডাকি।।
    চোখে পড়িলে বালি জ্বালাতে জ্বলিয়া মরি,
    চোখে যাহার পড়েছে চোখ, সে বাঁচে কেমন করি’।
    	ফিরাই আঁখি যেদিক পানে
    	তারি আঁখি মনে আনে,
    বলিস্ পাখি দেখা হ’লে প্রাণ শুধু আছে বাকি।।
    
  • আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে

    বাণী

    আধখানা চাঁদ হাসিছে আকাশে
    	আধখানা চাঁদ নিচে
    	প্রিয়া তব মুখে ঝলকিছে
    গগনে জ্বলিছে অগণন তারা
    	দু’টি তারা ধরণীতে
    	প্রিয়া তব চোখে চমকিছে।।
    তড়িৎ-লতার ছিঁড়িয়া আধেকখানি
    জড়িত তোমার জরীণ ফিতায় রানী!
    অঝোরে ঝরিছে নীল নভে বারি
    	দুইটি বিন্দু তারি
    	প্রিয়া তব আঁখি বরষিছে।।
    মধুর কণ্ঠে বিহগ বিলাপ গাহে,
    গান ভুলি’ তা’রা তব অঙ্গনে চাহে,
    তাহারও অধিক সুমধুর সুর তব
    	চুড়ি কঙ্কনে ঝনকিছে।।
    

  • আমি দেখন-হাসি

    বাণী

    আমি দেখন-হাসি
    আমায়দেখ্‌লে পরে হাসতে হাসতে পেয়ে যাবে কাশী।।
    আমিহাসির হাঁসলী ফিরি করি এলে আমার হাসির দেশে
    বুড়োরা সব ছোঁড়া হয়, আর ছোঁড়ারা যায় টেসে।
    আমারহাস-খালিতে বাড়ি, আমি হাস্নু হানার মাসি।।
    এলেআমার হাসির হেঁসেলে তার হাঁসফাঁসানি লেগে
    অন্তে শুধু দন্ত থাকে শরীরটা যায় ভেগে।
    (আমি)পাতি হাঁসির আন্ডা বেচি আর হাসির ময়দা খাঁসি।।
    সেদিন পথে যাচ্ছিল সব রাজার হাতি ঘোড়া উট
    তারা না আমায় দেখি হাসতে হাসতে
    ‘চোঁ চোঁ চোঁ’ এই না বলি’ অমনি দিলে ছুট
    হেসে পালিয়ে গেল দড়ি ছিঁড়ে মটরু মিঞার খাসি।।
    
  • এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায়

    বাণী

    এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী।
    ফুলে ও ফসলে কাদা মাটি জলে ঝলমল করে লাবনি॥
    রৌদ্রতপ্ত বৈশাখে তুমি চাতকের সাথে চাহ জল,
    আম কাঁঠালের মধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠে মাতাও তরুতল।
    ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে কভু খেল ল’য়ে অশনি॥
    কেতকী-কদম-যূথিকা কুসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা,
    পথে অবিরল ছিটাইয়া জল খেল চঞ্চলা বালিকা।
    তড়াগে পুকুরে থই থই করে শ্যামল শোভার নবনী॥
    শাপলা শালুক সাজাইয়া সাজি শরতে শিশির নাহিয়া,
    শিউলি-ছোপানো শাড়ি পরে ফের আগামনী-গীত গাহিয়া।
    অঘ্রাণে মা গো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনি॥
    শীতের শূন্য মাঠে তুমি ফের উদাসী বাউল সাথে মা,
    ভাটিয়ালি গাও মাঝিদের সাথে গো, কীর্তন শোনো রাতে মা।
    ফাল্গুনে রাঙা ফুলের আবিরে রাঙাও নিখিল ধরণী॥
    
  • এক্‌লা ভাসাই গানের কমল

    বাণী

    	এক্‌লা ভাসাই গানের কমল সুরের স্রোতে।
    	খেলার ছলে ওপার পানে এপার হ’তে।।
    	আসবে গো এই গাঙের কূলে হয়ত ভুলে আমার প্রিয়া
    	খোঁপায় নেবে আমার গানের কমল তুলে তামার প্রিয়া
    	খুঁজতে আমায় আসবে সুরের নদী-পথে।।
    	নাম-হারা কোন্ গাঁয়ে থাকে অচেনা সে,
    তারে	না-ই জানিলাম, গান ভেসে যাক্ তাহার আশে।
    	নদীর জলে আল্‌তা-রাঙা পা ডুবায়ে, রয় সে মেয়ে
    	গানের কমল লাগে গো তা’র কমল-পায়ে, উজান বেয়ে,
    	সেদিন অমর হয় মোর গান, যায় অমরায় পুষ্প-রথে।।
    
  • কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ

    বাণী

    কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ
    জাগালে জোয়ার ভাঙ্গিলে আবার সাগর-কুলের বাঁধ।।
    	তিথিতে তিথিতে সুদূর অতিথি
    	ভোলাও জাগাও ভুলে যাওয়া স্মৃতি
    এড়াইতে গিয়ে পরানে জড়াই তোমার রূপের ফাঁদ।।
    চাহি না তোমায় তবু তোমারেই ভাবি বাতায়নে বসি’
    আমার নিশীথে তুমি আনিয়াছ শুল্কা চতুর্দশী।
    	সুন্দর তুমি তবু হয় মনে
    	আছে কলঙ্ক জোছনার সনে
    মুখোমুখি বসে কাঁদে তাই বুকে সাধ আর অবসাদ।।
    
  • নাচিয়া নাচিয়া এসো নন্দদুলাল

    বাণী

    নাচিয়া নাচিয়া এসো নন্দদুলাল,
    মোর প্রাণে মোর মনে, এসো ব্রজগোপাল॥
    এসো নূপুর রুনুঝুনু পায়ে, এসো প্রেম যমুনা নাচায়ে
    এসো বেণু বাজায়ে, এসো ধেনু চরায়ে এসো কানাই রাখাল॥
    ঝুলনে হোরিতে রাসে, এসো কুরুক্ষেত্র রণে এসো প্রভাসে,
    (এসো) শিশু রূপে, এসো কিশোর বেশে
    এসো কংস, অরি, এসো মৃত্যুকরাল॥
    
  • নিশীথ রাতে ডাক্‌লে আমায়

    বাণী

    নিশীথ রাতে ডাক্‌লে আমায়, কে গো তুমি কে?
    কাঁদিয়ে গেলে আমার মনের বনভূমিকে,
    		কে গো তুমি কে।।
    	তোমার আকুল করুণ স্বরে
    	আজকে তা’রেই মনে পড়ে,
    এম্‌নি রাতে হারিয়েছি যে হৃদয়-মণিকে।।
    দুয়ার খু’লে চেয়ে আছি১ তারার পানে দূরে,
    আর একটিবার ডাকো ডাকো তেম্‌নি করুণ সুরে।
    	একটি কথা শুন্‌ব ব’লে
    	রাত কেটে যায় চোখের জলে,
    দাও সাড়া দাও, জাগিয়ে তোলো আঁধার পুরীকে।।
    

    ১. থাকি

  • মার্‌হাবা সৈয়দে মক্কী-মদনী

    বাণী

    মার্‌হাবা সৈয়দে মক্কী-মদনী আল্-আরবি।
    বাদ্‌শারও বাদশাহ্ নবীদের রাজা নবী।।
    ছিলে মিশে আহাদে, আসিলে আহমদ হয়ে
    বাঁচাতে সৃষ্টি খোদার, এলে খোদার সনদ ল’য়ে,
    মানুষে উদ্ধারিলে মানুষের আঘাত সয়ে —
    মলিন দুনিয়ায় আনিলে তুমি যে বেহেশ্‌তী ছবি।।
    পাপের জেহাদ-রণে দাঁড়াইলে তুমি একা
    নিশান ছিল হাতে ‘লা-শরীক আল্লাহ্’ লেখা,
    গেল দুনিয়া হতে ধুয়ে মুছে পাপের রেখা —
    বহিল খুশির তুফান উদিল পুণ্যের রবি।।
    
  • শিউলি তলায় ভোর বেলায়

    বাণী

    শিউলি তলায় ভোর বেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লী-বালা।
    শেফালি পুলকে ঝ’রে পড়ে মুখে খোঁপাতে চিবুকে আবেশ-উতলা।।
    		ঘোম্‌টা খুলিয়া তার পিঠে লুটায়
    		শিথিল কবরী লুটিছে পায়,
    নৃত্যের ভঙ্গে ফুল তোলে রঙ্গে, আধো আঁধার বন তার রূপে উজালা।।
    নিলাজ পাঁয়জোরে তার ওঠে ঝঙ্কার রিনিঝিনি, মন কয় চিনি চিনি
    		এ কি গো বন-দেবীর সতিনী
    শিশির ধরে’ পায় আল্‌তার রঙ্‌ চায় পাখি তারি গান গায় বনে নিরালা।।