প্রণমি তোমায় বনদেবতা

বাণী

প্রণমি তোমায় বনদেবতা।
শাখে শাখে শুনি তব ফুল-বারতা — দেবতা।।
তোমার ময়ূর তোমার হরিণ
লীলা-সাথী রয় নিশিদিন,
বিলায় ছায়া বাণী-বিহীন —
		তরু ও লতা — দেবতা।।

এসো চির-জনমের সাথি

বাণী

এসো চির-জনমের সাথি।
তোমারে খুঁজেছি দূর আকাশে জ্বালায়ে চাঁদের বাতি।।
	খুঁজেছি প্রভাতে গোধূলি-লগনে
	মেঘ হয়ে আমি খুঁজেছি গগনে,
ঢেকেছে ধরণী আমার কাঁদনে অসীম তিমির রাতি।।
ফুল হয়ে আছে লতায় জড়ায়ে মোর অশ্রুর স্মৃতি,
বেণু বনে বাজে বাদল-নিশীথে আমারি করুণ-গীতি।
	শত জনমের মুকুল ঝরায়ে
	ধরা দিতে এলে আজি মধু-বায়ে,
ব’সে আছি আশা-বকুলের ছায়ে বরণের মালা গাঁথি’।।

বাগিচায় বুলবুলি তুই

বাণী

বাগিচায়		বুলবুলি তুই ফুল শাখাতে দিসনে আজি দোল
আজো তার		ফুল কলিদের ঘুম টুটেনি তন্দ্রাতে বিলোল।।
আজো হায়		রিক্ত শাখায় উত্তরী বায় ঝুরছে নিশি-দিন
আসেনি		দখনে হাওয়া গজল গাওয়া মোমাছি বিভোল।।
কবে সে		ফুল কুমারী ঘোমটা চিরি', আসবে বাহিরে (রে)
শিশিরের		স্পর্শ-সুখে ভাঙবে রে ঘুম রাঙবে রে কপোল।
ফাগুনের		মুকুল-জাগা দু'কূল ভাঙা আসবে ফুলেল বান
কুঁড়িদের		ওষ্ঠ পুটে লুটবে হাসি ফুটবে গালে টোল।।
কবি তুই		গন্ধে ভুলে ' ডুবলি জলে কূল পেলিনে আর
ফুলে তোর		বুক ভ'রেছিস আজকে জলে ভররে আঁখির কোল।।

যাহা কিছু মম আছে প্রিয়তম

বাণী

যাহা কিছু মম আছে প্রিয়তম সকলি নিয়ো হে স্বামী
যত সাধ আশা প্রীতি ভালোবাসা সঁপিনু চরণে আমি॥
	ধ’রে যা’রে রাখি আমার বলিয়া
	সহসা কাঁদায়ে যায় সে চলিয়া
অনিমেষ, আঁখি তুমি ধ্রুবতারা জাগো দিবসযামী॥
	মায়ারি ছলনায় পুতুল খেলায়
	ভুলাইয়া প্রভু রেখেছিলে আমায়
ভুলেছি সে খেলা আজি অবেলায় তোমারই দুয়ারে থামি॥

নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে

বাণী

নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,
হে প্রিয়, কোথা তুমি দূর প্রবাসে।।
বিহগী ঘুমায় বিহগ–কোলে,
ঘুমায়েছে ফুলমালা শ্রান্ত আঁচলে;
ঢুলিছে রাতের তারা চাঁদের পাশে।।
ফুরায় দিনের কাজ, ফুরায় না রাতি,
শিয়রের দীপ হায় অভিমানে নিভে যায়
নিভিতে চাহে না নয়নের বাতি।
কহিতে নারি কথা তুলিয়া আঁখি
বিষাদ–মাখা মুখ গুন্ঠনে ঢাকি’
দিন যায় দিন গুণে, নিশি যায় নিরাশে।।

কে পাঠালে লিপির দূতী

বাণী

কে পাঠালে লিপির দূতী গোপন লোকের বন্ধু গোপন।
চিন্‌তে নারি হাতের লেখা মনের লেখা চেনে গো মন।।
	গান গেয়ে যাই আপন মনে
	সুরের পাখি গহন বনে,
সে সুর বেঁধে কার নয়নে — জানে শুধু তা’রি নয়ন।।
	কে গো তুমি গন্ধ-কুসুম
	গান গেয়ে কি ভেঙেছি ঘুম,
তোমার ব্যথার নিশীথ নিঝুম — হেরে’ কি মোর গানের স্বপন।।
	নাই ঠিকানা নাই পরিচয়
	কে জানে ও-মনে কি ভয়,
গানের কমল ও-চরণ ছোঁয় — তাইতে মানি ধন্য জীবন।।
	সুরের গোপন বাসর-ঘরে
	গানের মালা বদল করে,
সকল আঁখির অগোচরে — না দেখাতে মোদের মিলন।।