গৌড় সারং

  • চম্পক-বরণী চলমল তরণী

    বাণী

    চম্পক-বরণী
    চলমল তরণী,
    চলে শ্যামা তরুণী
    		যৌবন-গরবী।।
    ডাকে দূর পারাবার
    ডাকে তা’রে বন-’পার,
    লালসে ঝরে তার —
    		পায়ে রাঙা করবী।।
    চলে বালা দুলে দুলে
    এলো-খোঁপা পড়ে খুলে,
    চাহে ভ্রমর কুসুম ভুলে’ —
    		তনুর তার সুরভি।।
    নাচের ছন্দে দোদুল
    টলে তা’র চরণ চটুল,
    হরিণী চায় পথ-বেভুল —
    মায়া-লোক-বিহারিণী রচি’
    		চলে ছায়া-ছবি।।
    
  • দুঃখ সাগর মন্থন শেষ ভারতলক্ষ্মী আয় মা আয়

    বাণী

    দুঃখ সাগর মন্থন শেষ ভারতলক্ষ্মী আয় মা আয়
    কবে সে ডুবিলি অতল পাথারে উঠিলি না আর হায় মা হায়॥
    	মন্থনে শুধু উঠে হলাহল
    	শিব নাই পান কে করে গরল
    অমৃত ভান্ড লয়ে আয় মাগো জ্বলিয়া মরি বিষের জ্বালায়॥
    হরিৎ ক্ষেত্রে সোনার শস্যে দুলে না আর তোর আঁচল
    শুকায়েছে মাগো মায়ের স্তন্য গাভীর দুগ্ধ নদীর জল।
    	চাই না মোক্ষ চাই মা বাঁচিতে
    	অক্ষয় আয়ু লয়ে ধরণীতে
    চাই প্রাণ চাই ক্ষুধায় অন্ন মুক্ত আলোকে মুক্ত বায়॥
    
  • নিশীথ নিশীথ জাগি’ গোঁয়ানু

    বাণী

    নিশীথ নিশীথ জাগি’ গোঁয়ানু রাতি।
    জ্বলিয়া জ্বলিয়া নেভে শিয়রের বাতি।।
    সারাদিন গাঁথি মালা তুলিয়া কুসুম
    পথ চাহি চাহি ক’রে চোখে আসে ঘুম,
    রহে পড়ি’ নব শেজ কুসুমের পাঁতি।।
    আমার কাননে আসি’ অলি যায় ফিরে
    গাহি গান ফেরে সাঁঝে পাখি সব নীড়ে,
    একেলা রহি গো শুধু আমি বিনা সাথি।।
    
  • বন-ফুলে তুমি মঞ্জরি গো

    বাণী

    	বন-ফুলে তুমি মঞ্জরি গো
    	তোমার নেশায় পথিক-ভ্রমর ব্যাকুল হ'ল গুঞ্জরি' গো।।
    তুমি	মায়ালোকের নন্দিনী ন্দনের আনন্দিনী
    তুমি	ধূলির ধরার বন্দিনী, যাও গহন কাননে সঞ্চরি গো।।
    	মৃদু পরশ-কুঞ্চিতা তুমি বালিকা
    	বল্লভ-ভীতা পল্লব অবগণি্ঠিতা মুকুলিকা।
    তুমি	প্রভাত বেলায় মঞ্জরি লাজে সন্ধ্যায় যাও ঝরি'
    	অরণ্যা-বল্লরি শোভা, পুণ্য পল্লী-সুন্দরী।।
    
  • ভবনে আসিল অতিথি সুদূর

    বাণী

    ভবনে আসিল অতিথি সুদূর।
    সহসা উঠিল বাজি রুমু রুমু ঝুম
    	নীরব অঙ্গনে চঞ্চল নূপুর।।
    মুহু-মুহু বন-কুহু বোলে
    দোয়েল ধ্যান ভুলি চমকি আঁখি খোলে
    	কে গো কে বলে বন-ময়ূর।।
    দগ্ধ হিয়ার জ্বালা জুড়ায়ে
    সজল মেঘের শীতল চন্দন কে দিল বুলায়ে?
    বকুল কেয়া বীথি হ'তে
    ছুটে এলো সমীরণ চঞ্চল স্রোতে
    চাঁদিনী নিশীথের আবেশ আনে
    	মিলন তন্দ্রাতুর অলস-দুপুর।।
    
  • ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি

    বাণী

    ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি’।
    ভোল মোর সে অপরাধ, আজি যে লগ্ন গোধূলি।।
    এমনি রঙিন বেলায় খেলেছি তোমায় আমায়,
    খুঁজিতে এসেছি তাই সেই পুরানো দিনগুলি।।
    তুমি যে গেছ ভুলে – ছিল না আমার মনে,
    তাই আসিয়াছি তব বেড়া–দেওয়া ফুলবনে।
    গেঁথেছি কতই মালা এই বাগানের ফুল তুলি’—
    আজও সেথা গাহে গান আমার পোষা বুলবুলি।।
    

  • রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ বরষা এলো

    বাণী

    রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ বরষা এলো
    আমারি আশালতা সজল হলো॥
    কুসুম কলি মুঞ্জরিল
    বিরহী লতিকা সহসা ফুটিল
    মন এলোমেলো মেদুর ছাইলো॥
    
  • রেশমি চুড়ির তালে

    বাণী

    রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে
    ‘পিউ কাহাঁ পিউ কাহাঁ’ ডেকে ওঠে পাপিয়া।।
    	আঙিনায় ফুল-গাছে
    	প্রজাপতি নাচে,
    ফেরে মুখের কাছে আদর যাচিয়া।।
    	দুলে দুলে বনলতা
    	কহিতে চাহে কথা,
    বাজে তারি আকুলতা — কানন ছাপিয়া।।
    	শ্যামলী-কিশোরী মেয়ে
    	থাকে দূর নভে চেয়ে,
    কালো মেঘ আসে ধেয়ে — গগন ব্যাপিয়া।।
    
  • শুক্লা জোছনা তিথি ফুল্ল পুষ্পবীথি

    বাণী

    শুক্লা জোছনা তিথি, ফুল্ল পুষ্পবীথি গন্ধ-বন-গীতি আকুল উপবন।
    চিত্ত স্মপ্নাতুর, তঙ্গ চুর চুর মাগে হৃদি-পুর সুন্দর-পরশন।।
    	চন্দন-গন্ধিত মন্দ দখিনা-বায়
    	নন্দন-বাণী ফুলে ফুলে ক’য়ে যায়,
    তনুমন জাগে রাঙা অনুরাগে, মনে লাগে আজ (আজি মাধবী) বাসর-জাগরণ।।
    

    নাটকঃ ‘সাবিত্রী’