নাই চিনিলে আমায় তুমি

বাণী

নাই চিনিলে আমায় তুমি রইব আধেক চেনা।
চাঁদ কি জানে কোথায় ফোটে চাঁদনি রাতে হেনা।।
	আধো আঁধার আধো আলোতে
	একটু চোখের চাওয়া পথে —
জানিতাম তা ভুলবে তুমি, আমার আঁখি ভুলবে না।।
আমার ঈষৎ পরিচয়ের এই সঞ্চার লয়ে
হয় না সাহস কোথায় যাব মনের কথা কয়ে।
	একটু জানার মধু পিয়ে
	বেড়াই কেন গুন্‌গুনিয়ে —
তুমি জান, আমি জানি, আর কেহ জানে না।।

এস হে সজল শ্যাম ঘন দেয়া

বাণী

এসো হে সজল শ্যাম-ঘন দেয়া 
বেণু-কুঞ্জ-ছায়ায় এসো তাল-তমাল বনে 
এসো শ্যামল ফুটাইয়া যূথী কুন্দ নীপ কেয়া।। 
বারিধারে এসো চারিধার ভাসায়ে 
বিদ্যুৎ ইঙ্গিতে দশদিক হাসায়ে 
বিরহী মনে জ্বালায়ে আশার আলেয়া 
ঘন দেয়া, মোহনীয়া, শ্যাম-পিয়া।। 
শ্রাবণ বরিষণ হরষণ ঘনায়ে 
এসো নব ঘন শ্যাম নূপুর শুনায়ে। 
হিজল তমাল ডালে ঝুলন ঝুলায়ে 
তাপিতা ধরার চোখে অঞ্জন বুলায়ে 
যমুনা স্রোতে ভাসায়ে প্রেমের খেয়া 
ঘন দেয়া, মোহনীয়া, শ্যাম-পিয়া।। 

যদি শালের বন হ’ত শালার বোন

বাণী

যদি	শালের বন হ’ত শালার বোন,
	ক’নে বউ হ’ত ঐ গৃহেরই কোণ,
ছেড়ে	যেতাম না গো শালার বোন,
আমি	থাকতাম পড়ে সদা, খেতাম না গো, শালার বোনথ —
	বনে হারিয়ে যেতাম,
	শালার বোন ঐ বৃন্দাবনে না হয় চারিয়ে যেতাম —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আর	মাকুন্দ হত যদি কুন্দবালা,
হ’ত	দাড়িম্ব সুন্দরী দাড়িওয়ালা,
আমি	ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	জয়নাথ তরকনাথ বলে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে,
বাবা	দুগ্‌গা ব’লে আমি ঝুলে যে পড়তাম দাড়ি ধ’রে তার —
	দাদা গো, ওগো দাদা —
আহা	বাচ্চা হইত যদি চৌবাচ্চায়
নিতি	পানকৌড়ি হ’য়ে ডুবে থাকিতাম তায়,
যদি	দামড়ার ল্যাজ হ’ত কুন্তল দাম
	বেণী রূপে ল্যাজ ধ’রে মাঠে দাঁড়াতাম — ঘুরে যে বেড়াতাম, তার
	আমি ল্যাজ ধ’রে ঘুরে যে বেড়াতাম, দাদা গো —
যদি	ভাগ্যগুণে এক মিলিল শালী —
বাবা	বিশাল বপু তার সে যে বিশালী,
ওযে	শালী নয় শালী নয়, শাল্মলী তরু সম
	সে যে বিশালী গো, শাল্মলী তরু সম সে যে বিশালী গো —
আহা	চিম্‌টি শালীর হ’ত বাবলা কাঁটা,
হ’ত	শর-বন তার খ্যাংড়া ঝ্যাঁটা
	খ্যাংড়া মেরে বিষ ঝেড়ে যে দিত গো —

বেলওয়ারি চুড়ি কে নিবি আয়

বাণী

বেলওয়ারি চুড়ি কে নিবি আয় পুর-নারী।
চুড়িওয়ালী আমি এনেছি চুড়ি রকমারি।।
যৌবন যা’র হ’ল বাসী
বঁধু যার পরবাসী,
	এই চুড়ি-কবচ তারি’।।
কে আছ বিরহিণী
এই রেশমি চুড়ি কিনি,
ভোলো বিরহ ভোলো ভোলো।
মিলনের রাখি কাঁচের এ চুড়ি
কালো মেয়ে হবে তাঁর স্বামীর প্যারী।।
যাদু জানে এই চুড়ি বশ হয় ননদ-শাশুড়ি,
এ চুড়ি পরলে হাতে রাঙা বর পায় যত আই-বুড়ি।
চাই চুড়ি চাই — আয় বধূ আয়,
আয় কিশোরী, আয় কুমারী।
নে ভোলা মনের এই চুড়ি মনোহারী।।

এ জনমে মোদের মিলন হবে না

বাণী

এ জনমে মোদের মিলন হবে না আর, জানি জানি।
মাঝে সাগর, এপার ওপার করি মোরা কানাকানি।।
	দুজনে দুকূলে থাকি’
	কাঁদি মোরা চখা-চখি,
বিরহের রাত পোহায় না আর বুকে শুকায় বুকের বাণী।।
	মোদের পূজা আরতি হায়
	চোখের জলে, গহন ব্যথায়,
মোদের বুকে বাজায় বীণা বেদনারি বীণাপাণি।।
	হেথায় মিলন-রাতের মালা
	ম্লান হয়ে যায় প্রভাত বেলা,
সকালে যার তরে কাঁদি, বিকালে তায় হেলাফেলা।
	মোদের এ প্রেম-ফুল না শুকায়
	নিঠুর হাতে কঠোর ছোঁওয়ায়,
ব্যথার মাঝে চির-অমর মোদের মিলন-কুসুমদানি।।

তোরা যারে এখনি হালিমার কাছে লয়ে

বাণী

তোরা যারে এখনি হালিমার কাছে লয়ে ক্ষীর সর ননী
আমি খোয়াবে দেখেছি কাঁদিছে মা বলে আমার নয়ন-মণি॥
	মোর শিশু আহমদে যেদিন কাঁদিয়া
	হালিমার হাতে দিয়াছি সঁপিয়া
সেই দিন হ’তে কেঁদে কেঁদে মোর কাটিছে দিন রজনী॥
পিতৃহীন সে সন্তান হায় বঞ্চিত মা’র স্নেহে
তারে ফেলে দূরে কোল খালি করে (আমি) থাকিতে পারি না গেহে।
	অভাগিনী তার মা আমিনায়
	মনে করে সে কি আজো কাঁদে হায়
বলিস তাহারি আসার আশায় দিবানিশি দিন গণি॥