আধুনিক

  • জানি জানি তুমি আসিবে ফিরে

    বাণী

    জানি জানি তুমি আসিবে ফিরে।
    আবার উঠিবে চাঁদ নিরাশার তিমিরে।।
    	নিঝুম কাননে থাকি
    	ডাকিবে গানের পাথি,
    দখিন-সমীরণ আবার বহিবে ধীরে।।
    আবার গাঙের জলে আসিবে জোয়ার
    জ্বলিবে আশায় দীপ, রবে না আঁধার।
    	তোমার পরশ লেগে
    	ঘুম মোর যাবে ভেঙে,
    একদা প্রভাতে প্রিয় আকুল নয়ন-নীরে।।
    

  • জানি জানি প্রিয় এ জীবনে মিটিবে না সাধ

    বাণী

    জানি	জানি প্রিয়, এ জীবনে মিটিবে না সাধ
    আমি	জলের কুমুদিনী ঝরিব জলে
    তুমি	দূর গগনে থাকি’ কাঁদিবে চাঁদ।।
    	আমাদের মাঝে বঁধু বিরহ বাতাস
    	চিরদিন ফেলে যাবে দীরঘ শ্বাস
    	পায় না বুকে কভু পায় না বুকে তবু মুখে মুখে
    	চাঁদ কুমুদীর নামে রটে অপবাদ।।
    তুমি	কত দূরে বঁধু, তবু বুকে এত মধু কেন উথলায়?
    	হাতের কাছে রহো রাতের চাঁদ গো
    	ধরা নাহি যায় তবু ছোঁওয়া নাহি যায়।
    	মরু-তৃষা ল’য়ে কাঁদে শূন্য হিয়া
    	সকলে বলে আমি তোমারি প্রিয়া
    সেই	কলঙ্ক-গৌরব সৌরভ দিল গো
    	মধুর হ’ল মোর বিরহ-বিষাদ।।
    

  • তব গানের ভাষায় সুরে

    বাণী

    তব গানের ভাষায় সুরে বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি
    এত দিনে পেয়েছি তারে আমি যারে খুঁজেছি।।
    ছিল পাষাণ হয়ে গভীর অভিমান
    সহসা, এলো সহসা আনন্দ-অশ্রুর বান।
    বিরহ-সুন্দর হয়ে সেই এলো
    দেবতা বলে যাঁরে পুজেছি
    			বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি।।
    তোমার দেওয়া বিদায়ের মালা পুন প্রাণ পেল প্রিয়
    হ’য়ে শুভদৃষ্টি মিলন-মালিকা বুকে ফিরে এলো — এলো প্রিয়।
    	যাহারে নিষ্ঠুর বলেছি
    	নিশীথে গোপনে কেঁদেছি
    নয়নের বারি হাসি দিয়ে মুছেছি
    			বুঝেছি বুঝেছি বুঝেছি।।
    
  • তব চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে

    বাণী

    তব	চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে।
    	হেরি মোরা অবিরল জলে ভাসে কমল
    	হেরি আজি কমলে উথলে জল হে।।
    	চিরদিন কাঁদায়েছে যে জল নিঠুর
    আজি	অশ্রু করেছে তারে একি সুমধুর
    বঁধু	সাধ যায় ধরি তব সমুখে মুকুর
    যেন	বরষিছে চাঁদ মুকুতাদল হে।
    কোন	অকরুণা ভাঙিল হে পাষাণের বাঁধ
    তব	কলঙ্ক লেখা গেল ধুয়ে যে হে চাঁদ।
    	কাঁদ কাঁদ হে বঁধু তবে বুঝিবে মনে
    কত	বেদনা পেলে জল ঝরে নয়নে
    আজি	কাঁদিয়া শ্যামল হ'লে নির্মল হে।।
    

  • তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী

    বাণী

    তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী (হে বন-লক্ষ্মী)।
    তব অপাঙ্গে হইব ভ্রুভঙ্গি।।
    মোরে জ্বালায়ে জ্বালো
    তব বাসরে আলো,
    মোরে নূপুর করি’ বাঁধ চরণে তারি —
    	নাচে তোমার সভায় যে কুরঙ্গী।।
    তব রূপের দেশে
    এনু বাউল বেশে,
    যেন ফিরে নাহি যাই
    আঁখি-প্রসাদ পাই —
    	হব কেশে তব বেণীর ভুজঙ্গী।।
    
  • তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো

    বাণী

    তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো সকল ফুলের মুখে
    ফুল ঝ'রে যায় তব স্মৃতি জাগে কাঁটার মতন বুকে।।
    	তব প্রিয় নাম ধ'রে ডাকি
    	ফুল সাড়া দেয় মেলি' আঁখি
    তোমার নয়ন ফুটিল না হায় ফুলের মতন সুখে।।
    তোমার বিরহে আমার ভুবনে ওঠে রোদনের বাণী,
    কানাকানি করে চাঁদ ও তারায় জানি গো তোমারে জানি।
    	খুঁজি বিজলি প্রদীপ জ্বেলে'
    	কাঁদি ঝঞ্ঝার পাখা মেলে'
    অন্ধ-গগনে আঁধার মেঘের ঢেউ ওঠে মোর দুখে।।
    

  • তুই কে ছিলি তাই বল

    বাণী

    তুই কে ছিলি তাই বল?
    কোন কাননের পুষ্পরানী কোন সরসীর জল।।
    তুই কি ছিলি কবিতা আর আমি চরণ তা'রি
    তুই কি ছিলি পিয়াসি শুক আমি আতুর সারী
    তুই কি দুঃখী দুয়োরানী আমি চোখের জল।।
    	কোন বরষার সিক্ত প্রাতে
    	কোন শরতের জোছনা রাতে
    কোন জগতের অরুণ ঊষার প্রথম দেখা বল।।
    নতুন মোদের নতুন ক'রে পরিচয়ের পালা
    কন্ঠে মোদের মিলন-বাণী হাতে মিলন-মালা
    মোরা এক বিরহীর দু'টি চোখের ঝরা দু'টি মুক্তাফল।।
    
  • তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে

    বাণী

    তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে এই কি তোমার আশা?
    আমার যে নাথ অনন্ত সাধ, অনন্ত পিপাসা॥
    	দাহন তুমি করবে যত
    	প্রেমের শিখা জ্বলবে তত
    সে যে আমার মন্ত্র পূজার তোমার কঠিন ভাষা॥
    ফুলমালী! ফুলের শাখা কাটো যত পার,
    আহত সেই ফুল-শাখাতে ধরবে কুসুম আরো।
    	হানলে আঘাত নিথর জলে,
    	অধীর বেগে ঢেউ উথলে,
    তোমার অবহেলায় বিপুল হ’ল ভীরু ভালোবাসা।
    		আমার ভীরু ভালোবাসা॥
    

  • তুমি আমায় যবে জাগাও গুণী

    বাণী

    তুমি	আমায় যবে জাগাও গুণী তোমার উদার সঙ্গীতে
    মোর	হাত দু'টি হয় লীলায়িত নমস্কারের ভঙ্গিতে।।
    	সিন্ধু জলের জোয়ার সম, ছন্দ নামে অঙ্গে মম
    	রূপ হলো মোর নিরুপম তোমার প্রেমের সুরের অমৃতে।।
    	আমার আঁখির পল্লবদল উদাস অশ্রুভারে,
    	ভোরের করুণ তারা মতো কাপেঁ বারেবারে।
    	আনন্দে ধীর বসুন্ধরা, হলো চপল নৃত্যপরা
    	ঝরে রঙের পাগল ঝোরা তোমার চরণ রঞ্জিতে।।
    

  • তুমি আমার সকাল বেলার সুর

    বাণী

    তুমি আমার সকালবেলার সুর
    হৃদয় অলস–উদাস–করা অশ্রু ভারাতুর।।
    ভোরের তারার মত তোমার সজল চাওয়ায়,
    ভালোবাসার চেয়ে সে যে কান্না পাওয়ায়
    রাত্রি–শেষের চাঁদ তুমি গো বিদায়–বিধুর।।
    তুমি আমার ভোরের ঝরা ফুল
    শিশির–নাওয়া শুভ্র–শুচি পূজারিণীর তুল।
    অরুণ তুমি, তরুণ তুমি, করুণ তারো চেয়ে
    হাসির দেশে তুমি যেন বিষাদ–লোকের মেয়ে
    তুমিইন্দ্র–সভার মৌন–বীণা নীরব নূপুর।।
    
  • তুমি আরেকটি দিন থাকো

    বাণী

    তুমি		আরেকটি দিন থাকো।
    		হে চঞ্চল, যাবার আগে মোর মিনতি রাখো।।
    আমি		ভালো ছিলাম ভুলে’ একা
    		কেন নিঠুর দিলে দেখা,
    তুমি		ঝরা-ফুলে গাঁথ্‌লে মালা গলায় দিলে না কো।।
    তোমার	কাজের মাঝে আমায় ভোলা সহজ হবে, স্বামী!
    		কেমন ক’রে এক্‌লা ঘরে থাক্‌বো ভুলে আমি।
    		নিবু নিবু প্রদীপ আশার
    তুমি		জ্বালিয়ে দিলে যদি আবার —
    প্রিয়		নিভ্‌তে তারে দিও না আর আদর দিয়ে রাখো।।
    
  • তুমি কি আসিবে না

    বাণী

    তুমি কি আসিবে না
    বলেছিলে তুমি আসিবে আবার ফুটিবে যবে হেনা।।
    	সেদিন ঘুমায়ে ছিল যে মূকুল
    	আজি সে পূর্ণ বিকশিত ফুল
    সেদিনের ভীরু অচেনা হৃদয় আজি হতে চায় চেনা।।
    ঘন পল্লব গুণ্ঠন ঢাকা ছিল সেদিন যে লতা
    আজিকে পুষ্প নিবেদন ল’য়ে কহিতে চায় যে কথা।
    	প্রদীপ জ্বালায়ে আজি সন্ধ্যায়
    	পথ চেয়ে আছি তোমারি আশায়
    পূর্ণিমা-তিথি আসিল, হে চাঁদ-অতিথি আসিলে না।।
    

  • তুমি কেন এলে পথে

    বাণী

    তুমি কেন এলে পথে
    ঝরা মল্লিকা ভাসাইতেছিনু
    	একাকিনী নদী-স্রোতে।।
    কলসি আমার অলস খেলায়
    ধীর তরঙ্গে যদি ভেসে' যায়
    তীরে সে কলসি তুলে' আনো তুমি
    	কেন নদী' জল হ'তে।।
    আমার নিরালা বনে
    আমি গাঁথি হার, তুমি গান গাহি'
    	ধ্যান ভাঙো অকারণে।
    আমি মুখ হেরি' আরশিতে একা
    তুমি সে মুকুরে কেন দাও দেখা
    	বাতায়নে চাহি' তুমি কেন হাসো
    	আসিয়া চাঁদের রথে।।
    

  • তুমি প্রভাতের সকরুণ ভৈরবী

    বাণী

    তুমি প্রভাতের সকরুণ ভৈরবী।
    শিশির-সজল ভোরের আকাশে ভাসে তোমারি উদাস ছবি।।
    	বিষাদ গভীর কার কল্পনা
    	রূপ ধ’রে তুমি ফের আনমনা,
    তোমারি মূরতি ধেয়ায় স্বপনে বিরহী সুরের কবি।।
    তুমি ধরা দিতে যেন আস নাই ধরণীতে,
    একা-একা খেলা খেল সারাবেলা সাথিহীন তরণীতে।
    	আঘাত হানিয়া সে-কোন্ নিঠুর
    	জাগাবে তোমাতে আশাবরি সুর,
    পাষাণ টুটিয়া গলিয়া পড়িবে অশ্রুর জাহ্নবী।।
    
  • তুমি ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে

    বাণী

    তুমি	ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে।
    তুমি	কান্না পাওয়াও কাননকে গো ফুল-ঝরা প্রভাতে॥
    তুমি	ভৈরবী সুর উদাস বিধুর
    	অতীত দিনের স্মৃতি সুদূর,
    তুমি	ফোটার আগে ঝরা মুকুল বৈশাখী হাওয়াতে॥
    তুমি	কাশের ফুলের করুণ হাসি মরা নদীর চরে
    তুমি	শ্বেত-বসনা অশ্রুমতী উৎসব-বাসরে।
    তুমি	মরুর বুকে পথ-হারা
    	গোপন ব্যথার ফল্গুধারা,
    তুমি	নীরব বীণা বাণীহীনা সঙ্গীত-সভাতে॥
    
  • তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়

    বাণী

    তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
    চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।।
    	চেয়ে’ চেয়ে’ দেখি ফোটে যবে ফুল
    	ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
    মেঘ হেরি’ ঝুরে’ চাতকিনী, মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।।
    জানে সূর্যেরে পাবে না তবু অবুঝ সূর্যমুখী
    চেয়ে’ চেয়ে’ দেখে তার দেবতারে দেখিয়াই সে যে সুখী।
    	হেরিতে তোমার রূপ–মনোহর
    	পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর।
    মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর নয়নের সেই সাধ।।
    
  • তোমার আঁখির মত আকাশের দুটি তারা

    বাণী

    তোমার আঁখির মত আকাশের দু’টি তারা
    চেয়ে থাকে মোর পানে নিশীথে তন্দ্রাহারা
    		সে কি তুমি? সে কি তুমি??
    ক্ষীণ আঁখি–দীপ জ্বালি’ বাতায়নে জাগি একা,
    অসীম অন্ধকারে খুঁজি তব পথ রেখা;
    সহসা দখিনা বায়ে চাঁপা–বনে জাগে সাড়া।
    		সে কি তুমি? সে কি তুমি??
    বৈশাখী–ঝড়ের রাতে চমকিয়া উঠি জেগে’
    বুঝি অশান্ত মম আসিলে ঝড়ের বেগে,
    ঝড় চ’লে যায় কেঁদে ঢালিয়া শ্রাবণ ধারা
    		সে কি তুমি? সে কি তুমি??
    

  • তোমার বিনা-তারের গীতি

    বাণী

    তোমার বিনা-তারের গীতি বাজে আমার বীণা-তারে
    রইল তোমার ছন্দ-গাথা গাঁথা আমার কণ্ঠ-হারে।।
    কি কহিতে চাও হে গুণী, আমি জানি আমি শুনি
    কান পেতে রই তারার সাথে তাই তো দূর গগন-পারে।।
    পালিয়ে বেড়াও উদাস হাওয়া গোপন কথার ফুল ফুটিয়ে গো
    আমি তারে মালা গেঁথে লুকিয়ে রাখি বক্ষে নিয়ে গো।
    হয়তো তোমার কথার মালা, কাঁটার মত করবে জ্বালা
    সেই জ্বালাতেই জ্বলবে আমার প্রেমের শিখা অন্ধকারে।।
    
  • তোমার মনে ফুট্‌বে যবে প্রথম মুকুল

    বাণী

    তোমার মনে ফুট্‌বে যবে প্রথম মুকুল
    প্রিয় হে প্রিয় আমারে দিও সে প্রেমের ফুল।।
    	দীরঘ বরষ মাস তাহারই আশে
    	জাগিয়া রব তব দুয়ার পাশে
    বহিবে কবে ফুল-ফোটানো দখিনা বাতাস অনুকূল।।
    আর কারে দাও যদি আমার সে ধ্যানের কুসুম
    ক্ষতি নাই, ওগো প্রিয়, ভাঙুক, এ অকরুণ ঘুম।
    	গুঞ্জরি’ গুঞ্জরি’ ভ্রমর সম
    	কাঁদিব তোমারে ঘিরি’, প্রিয়তম।
    হুতাস বাতাস সম কুসুম ফুটায়ে চলে যাব দূরে বেভুল।।
    

  • তোমার হাতের সোনার রাখি

    বাণী

    তোমার হাতের সোনার রাখি আমার হাতে পরালে।
    আমার বিফল বনের কুসুম তোমার পায়ে ঝরালে।।
    		খুঁজেছি তোমায় তারার চোখে
    		কত সে-গ্রহে কত সে-লোকে,
    আজ কি তৃষিত মরুর আকাশ বাদল-মেঘে ভরালে।।
    দূর অভিমানের স্মৃতি কাঁদায় কেন আজি গো!
    মিলন-বাঁশি সহসা ওঠে ভৈরবীতে বাজি’ গো!
    		হেনেছ হেলা, দিয়েছ ব্যথা
    		মনে পড়ে আজ কেন সে-কথা,
    মরণ-বেলায় কেন এ গলায় মালার মতন জড়ালে।।