আরক্ত কিংশুক কাঁপে
বাণী
আরক্ত কিংশুক কাঁপে, মালতীর বক্ষ ভরি’ চন্দ্রের অমৃত স্পর্শে উঠিতেছে শিহরি’ শিহরি’।। নীরব কোকিলের গুঞ্জন চৈত্র পূর্ণিমা রাত্রি, বাড়িয়াছে বক্ষের স্পন্দন, মোদের নাচের নূপুরের ছন্দ কভু চপল কভু মৃদুমন্দ, বসন্ত-উৎসব সজ্জা অন্তরাল হতে মৃদু ভাষে সুন্দর গুঞ্জন ধ্বনি কেন ভেসে আসে। মমতার মধু-বিন্দু ক্ষরিল মোরা মধু খেয়ে বলিলাম — আহা মরি।। ধরণীর অঙ্গ হতে বাসরের সজ্জা পড়ে খুলি’ গভীর আনন্দে মোরা চাহি দুটি আঁখি তুলি, চৈত্রের পূর্ণিমা রাত্রি এলো ফিরি প্রিয় তুমি কেন চ’লে গেলে ধীরি ধীরি। তুমি ফিরে এলে মোরা লভিতাম অমৃতের স্বাদ চন্দ্রের অমিয়া পান করি।।
নাটক : ‘মদিনা’
আজি এ শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে
বাণী
আজি এ শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে। গুরু দেয়া গরজন কাঁপে হিয়া ঘনঘন শনশন কাঁদে বায়ু নীপ-কাননে।। অন্ধ নিশীথ, মন খোঁজে কারে আঁধারে, অন্ধ নয়ন ঝরে শাওন-বারিধারে। ভাঙিয়া দুয়ার মম এসো এসো প্রিয়তম, শ্বসিছে বাহির ঘর ভেজা পবনে।। কার চোখে এত জল ঝরে দিক্ প্লাবিয়া, সহিতে না পারি’ কাঁদে ‘চোখ গেল’ পাপিয়া। কাহার কাজল-আঁখি চাহি’ মোর নয়নে ঝুরেছিল একা রাতে কবে কোন্ শাওনে, আজি এ বাদল ঝড়ে সেই আঁখি মনে পড়ে, বিজলি খুঁজিছে তারে নভ-আঙনে।।
আরে পঙ্খীরাজের বাচ্চা আমার
বাণী
ঘোড়া-পূজার মন্ত্র : ওঁ নমস্তে শ্রী বিলাতী অশ্ব সাহেব হর্স নমোহ নমঃ। চতুষ্পদ একপুচ্ছ শৃঙ্গহীন জীব আদর্শ — সাহেব হর্স নমো নমঃ।। অ্যাই, আরে পঙ্খীরাজের বাচ্চা আমার ঘোড়া ছুইট্যা যাও। ক্যাৎরাইয়া দুই চক্ষুরে ঘোড়া ছ্যাৎরাইয়া চাইর পাও।। স্বর্গপানে ল্যাজ উঠাইয়া, (ছোট) চিঁহি চুঁহু চিঁহি চুঁহু ডাইক্যা আমরা দুজন রাত্র জাগুম ছোলা ভিজাইয়া রাইখ্যা (রে) ফাস্টো যদি না হও ঘোড়া, (তোমার) ঘোড়ানীর মাথা খাও হালা কচ্মচাইয়া খাও।। তোমার ঘোড়ানীর মাথা কচ্মচাইয়া খাও।।
নাটিকা : ‘বিলাতী ঘোড়ার বাচ্চা’
আমার হাতে কালি মুখে কালি
বাণী
আমার হাতে কালি মুখে কালি, মা আমার কালিমাখা মুখ দেখে মা পাড়ার লোকে হাসে খালি।। মোর লেখাপড়া হ’ল না মা, আমি ‘ম’ দেখিতেই দেখি শ্যামা, আমি ‘ক’ দেখতেই কালী ব’লে নাচি দিয়ে করতালি।। কালো আঁক দেখে মা ধারাপাতের ধারা নামে আঁখি পাতে, আমার বর্ণ পরিচয় হ’লো না মা তোর বর্ণ বিনা কালী। যা লিখিস মা বনের পাতায় সাগর জলে আকাশ খাতায়, আমি সে লেখা তো পড়তে পারি মূর্খ বলে দিক্ না গালি মা, লোকে মূর্খ ব’লে দিক্ না গালি।।
আমি অলস উদাস আন্মনা
বাণী
আমি অলস উদাস আন্মনা। আমি সাঁঝ-আকাশে শান্ত নিথর রঙীন্ মেঘের আল্পনা।। অলস যেমন বনের ছায়া নীড়ের পাখি শ্রান্ত-কায়া, যেমন অলস তৃণের মুখে ভোরের শিশির হিম-কণা।। নদীর তীরে অলস রাখাল একলা ব’সে রয় যেমন, তেমনি অলস উদাস আমি রই ব’সে রই অকারণ। যেমন অলস দীঘির জলে থির হ’য়ে রয় কমল-দলে, নিতল ঘুমে স্বপন সম অলস আমি কল্পনা।।