বাণী

আজি দোল্-পূর্ণিমাতে দুল্‌বি তোরা আয়।
দখিনার দোল্ লেগেছে দোলন্-চাঁপায়।।
	দোলে আজ দোল্-ফাগুনে	
	ফুল-বাণ আঁখির তূণে,
দুলে আজ বিধুর হিয়া মধুর ব্যথায়।।
দুলে আজ শিথিল বেণী, দুলে বধূর মেখলা
দুলে গো মালার পলা জড়াতে বঁধুর গলা!
	মাধবীর দোলন্-লতায়
	দোয়েলা দোল্ খেয়ে যায়,
দুলে যায় হল্‌দে পাখি সোঁদাল-শাখায়।।
বিরহ-শীর্ণা নদীর আজিকে আঁখির কূলে
ভরে জল কানায় কানায় জোয়ারে উঠ্‌ল দু’লে।
	দুলে বসন্ত-রানী
	কুসুমিতা বনানী
পলাশ রঙন দোলে নোটন-খোঁপায়।।
দোলে হিন্দোল-দোলায় ধরণী শ্যাম-পিয়ারী,
দুলিছে গ্রহ-তারা আলোক-গোপ-ঝিয়ারি।
	নীলিমার কোলে বসি’
	দুলে কলঙ্কী-শশী,
দোলে ফুল-উর্বশী ফুল-দোলায়।।

বাণী

আর অনুনয় করিবে না কেউ কথা কহিবার তরে
আর দেখিবে না স্বপন রাতে গো কেহ কাদেঁ হাত ধ'রে।
	তব মুখ ঘিরে আর মোর দু' নয়ন
	ভ্রমরের মত করিবে না জ্বালাতন
তব পথ আর পিছল হবে না আমার অশ্রু ঝরে'।
তোমার ভুবনে পড়িবে না আর কোনদিন ছায়া মম
তোমার পূর্ণ-চাদেঁর তিথিতে আসিব না রাহু-সম।
	আর শুনিবে না করুণ কাতর
	এই ক্ষুধাতুর ভিখারির স্বর
শুনিবে না আর কাহারও রোদন রাতের আকাশ ভ'রে।।

বাণী

আমি		কালি যদি পেতাম কালী রইত না এ মনে কালি।
মোর		সাদা মনের পদ্মপাতায় লিখ্তাম তোর শ্রীনাম খালি।।
		(মা)	কালী পেলে সকল কালো
			এই নিমিষে হ’ত আলো,
(মা)		কালো পাতার কোলে যেমন ফুটে থাকে ফুলের ডালি।।
(তোর)		কালো রূপের নীল যমুনা বইত যদি মনের মাঝে,
(শ্যামা!)		দেখ্‌তে পেত এই ত্রিভুবন, কোথায় শ্যামের বেণু বাজে।
		তোর কালো রূপের কৃষ্ণ আকাশ পেলে,
(আমি)		ময়ূর হয়ে নাচতাম মা তারার পেখম মেলে।
		দুঃখে কালো কপালে মোর হাস্‌ত শিশু-চাঁদের ফালি।।

বাণী

আয় ইরানি মেয়ে জংলা-পথ বেয়ে আয় লো।
	নদী যেমন চাঁদে
	ঢেউ-এর মালায় বাঁধে,
তেমনি চাঁদে বাঁধব চিরুনির মত এলো খোঁপায় লো।।
দুপুর রাতে ঝিঁ ঝিঁ ঝিল্লি-নূপুর বাজে
বেদের বাঁশি কাঁদে বৌ-এর বুকের মাঝে,
কাঁটা দিয়ে ওঠে গোলাপ-লতার গায়ে বুলবুলি কোথায় লো।।
বেদে গেছে বনে গো হরিণী শিকারে,
হরিণ-আঁখি তার প্রেয়সী তাঁবুতে কাঁদে মনের বিকারে।
আমাদের জল্‌সায় সাকি-শিরাজি নাই
আসমানের তারা-ফুল নিঙ্‌ড়ে তাই১ মধু খাই,
	বঁধূ যখন আসবে
	চেয়ে চেয়ে হাসবে,
কবরীর যুঁই ছুঁড়ে ফেলে দিব পায় লো।।

১. তারই

বাণী

আজকে না হয় একটি কথা কইলে আবার মোর সাথে।
ওগো একটু না হয় বসলে এসে এই পাথরের পৈঠাতে।।
	শুধুই কি গো আমার আঁখি
	ঝিমায় মদির স্বপ্ন মাখি’,
ওগো তোমার কি চোখ ধরে নাকো ঢুলতে নেশার মৌতাতে।।
আজকে তোমার নয়ন আমার নয়ন হেরি’ লজ্জা পায়,
আজকে তোমার মুখের কথা শুধু্ই কি গো মুখ রাঙায়?
	ফাগুন হাওয়ার দোদুল দোলায়
	এই যে এসে দোল দিয়ে যায় —
ওগো মোরাই কি গো দুল্‌ব শুধু মান বিরহের দোল্‌নাতে।।

বাণী

(আমায়)		আর কতদিন মহামায়া রাখ্‌বি মায়ার ঘোরে।
(মোরে)		কেন মায়ার ঘূর্ণিপাকে ফেল্‌লি এমন করে।।
		(ওমা) কত জনম করেছি পাপ
			কত লোকের কুড়িয়েছি শাপ,
		তবু মা তার নাই কি গো মাফ ভুগব চিরতরে।।
		এমনি ক’রে সন্তানে তোর ফেল্‌লি মা অকূলে,
		তোর নাম যে জপমালা তাও যাই হায় ভুলে’।
			পাছে মা তোর কাছে আসি
		তাই	বাঁধন দিলি রাশি রাশি,
কবে		মুক্ত হ’ব মুক্তকেশী (তোর) অভয় চরণ ধ’রে।।