পল্লীগীতি

  • দূরের বন্ধু আছে আমার

    বাণী

    দূরের বন্ধু আছে আমার ঐ গাঙের পারের গাঁয়ে।
    ঝরা পাতার পত্র আমার যায় ভেসে তার পায়ে।।
    জানি জানি আমার দেশে আমার নেয়ে আসবে ভেসে,
    চির-ঋণী আছে সে যে আমার প্রেমের দায়ে।।
    নতুন আশার পাল তুলে সে আসবে ফিরে ঘরে,
    ফুটেছে তাই কাশ-কুসুমের হাসি শুকনো চরে।
    পিদিম জ্বেলে তা'রি আশায় গহীন গাঙের সোঁতে ভাসাই
    ঐ পিদিমের পথ ধরে সে আসবে সোনার নায়ে।।
    
  • নিশি-পবন নিশি-পবন

    বাণী

    নিশি-পবন! নিশি-পবন! ফুলের দেশে যাও
    ফুলের বনে ঘুমায় কন্যা তাহারে জাগাও — যাও যাও যাও।।
    মৌ-টুস্‌টুস্‌ মুখখানি তার ঢেউ-খেলানো চুল
    (ওরে) ভোমরার ঝাঁক-ঘেরা যেন ভোরের পদ্ম-ফুল
    হাসিতে তার মাঠের সরল বাঁশির আভাস পাও
    				যাও যাও যাও।।
    চাঁপা ফুলের পুত্‌লি-ঘেরা চাঁপা রঙের শাড়ি
    তারেই দেখতে আকাশ-গাঙে (ওরে) চাঁদ দেয় রে পাড়ি।
    তার একটুখানি চোখের আদল বাদল-মেঘে পাও।
    				যাও যাও যাও।।
    	ধীরে ধীরে জাগাইয়ো তায়
    	ঝরা-কুসুম ফেলিয়া গায়
    জাগলে কন্যা যেন রে মোর পত্রখানি দাও —
    				যাও যাও যাও।।
    

  • পদ্মার ঢেউ রে

    বাণী

    পদ্মার ঢেউ রে —
    মোর শূণ্য হৃদয়–পদ্ম নিয়ে যা, যা রে।
    এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙ্গা পা
    আমি হারায়েছি তারে।।
    মোর পরান–বঁধু নাই, পদ্মে তাই মধু নাই (নাই রে)
    বাতাস কাঁদে বাইরে, সে সুগন্ধ নাই রে
    মোর রূপের সরসীতে আনন্দ–মৌমাছি নাহি ঝঙ্কারে রে।।
    ও পদ্মারে —
    ঢেউয়ে তোর ঢেউ ওঠায় যেমন চাঁদের আলো
    মোর বঁধুয়ার রূপ তেমনি ঝিল্‌মিল করে কৃষ্ণ–কালো।
    সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশি বাজায়
    যদি দেখিস্‌ তারে, দিস্‌ এই পদ্ম তার পায়
    বলিস্‌, কেন বুকে আশার দেয়ালি জ্বালিয়ে
    ফেলে গেল চির–অন্ধকারে।
    
  • বন-বিহঙ্গ যাও রে উড়ে

    বাণী

    বন-বিহঙ্গ যাও রে উড়ে মেঘ্‌না নদীর পাড়ে
    দেখা হলে আমার কথা কইয়ো গিয়া তারে।
    কোকিল ডাকে বকুল-ডালে, যে-মালঞ্চে সাঁঝ-সকালে রে,
    আমার বন্ধু কাঁদে সেথায় গাঙেরি কিনারে।।
    গিয়া তারে দিয়া আইস আমার শাপ্‌লা-মালা
    আমার তরে লইয়া আইস তাহার বুকের জ্বালা।
    সে যেন রে বিয়া করে, সোনার কন্যা আনে ঘরে রে,
    আমার পাটের জোড় পাঠাইয়া দিব সে-কন্যারে।।
    

  • মেঘলা নিশি ভোরে

    বাণী

    মেঘলা নিশি ভোরে মন যে কেমন করে
    তারি তরে গো মেঘ-বরণ যার কেশ।
    বুঝি তাহারি লাগি’ হয়েছে বৈরাগী
    গেরুয়া রাঙা গিরিমাটির দেশ।।
    মৌরি ফুলের ক্ষেতে, মৌমাছি ওঠে মেতে
    এলিয়েছিল কেশ কি গো তার এই পথে সে যেতে।
    তার ডাগর চোখের ঝিলিক লেগে রাত হয়েছে শেষ (গো)।।
    শিরিষ পাতায় ঝিরিঝিরি, বাজে নূপুর তারি
    সোনাল ডালে দোলে তাহার কামরাঙা রঙ শাড়ি।
    হয়েছি মন-ভিখারি কোন্‌ শিকারি আমি
    উঠি পাহাড় চূড়ায়, ঝর্না জলে নামি
    কালো পাথর দেখে জাগে কার চোখের আবেশ গো।।