নৃত্য-সম্বলিত

  • আঁখি ঘুম-ঘুম-ঘুম নিশীথ নিঝুম ঘুমে ঝিমায়

    বাণী

    আঁখি ঘুম-ঘুম-ঘুম নিশীথ নিঝুম ঘুমে ঝিমায়।
    বাহুর ফাঁদে স্বপন-চাঁদে বাঁধিতে কারে চায়।।
    আমি কারো লাগি একা নিশি জাগি বিরহ-ব্যথায়
    কোথায় কাহার বুকে বঁধু ঘুমায়
    কাঁদি চাতকিনী মরে তৃষায়
    কুসুম-গন্ধ আজি যেন বিষ-মাখা হায়।।
    	কেন এ ব্যথা এ আকুলতা
    	পরের লাগি এ পরান পুড়ে?
    মরুভূমিতে বারি কি ঝুরে
    আমি যেন ম’রে তোরি রূপ ধ’রে আসি সে যাহারে চায়।।
    
  • আজি নতুন এ চাঁদের তিথিতে

    বাণী

    আজি নতুন এ চাঁদের তিথিতে
    কোন্ অতিথি এলো ফুল-বীথিতে॥
    যদি বেদনা পায় বঁধু পথ চলিতে
    তাই চেয়েছি বনপথ ফুল কলিতে
    জানি ভাল জান হে বঁধু ফুল দলিতে
    এসো বঁধু সুমধুর প্রীতিতে॥
    এসো মনের মন্দিরে দেবতা আমার
    লহ প্রেমের চন্দন আঁখি জলহার
    আজি সফল করো সাধ আমার পূজার
    চির জনম রহ মোর স্মৃতিতে॥
    
  • আজো ফোটেনি কুঞ্জে মম কুসুম

    বাণী

    আজো ফোটেনি কুঞ্জে মম কুসুম ভোমরাকে যেতে বল।
    সখি	গুঞ্জরি ফেরে কেন কুঞ্জে বৃথাই এত ছল।।
    	কত কি শুনিয়ে যায়, গুনগুনিয়ে হায়-
    	পাতার ঝরকায়, ঘোরে সে অবিরল।।
    আমার প্রাণের ভেতর কেন উঠায় সে ঝড়
    তারে	ফেরালে ফেরে না হাসে কেবল,
    সে	ফিরিয়া গেলে চোখে আসে জল।
    	একি হল দায়, আঁখি নাহি চায়
    	না দেখিলে তায়, প্রাণ পাগল।।
    

  • ও কে চলিছে বন-পথে

    বাণী

    ও কে চলিছে বন-পথে একা নূপুর পায়ে রন ঝন ঝন।
    তারি চপল চরণ-আঘাতে দুলিছে নদী-দোলে ফুলবন।।
    ঝরে ঝর ঝর গিরি -নির্ঝর তার ছন্দ চুরি করে,
    'এলো সুন্দর-এলো সুন্দর'’বাজে বনের মর্মরে।
    	গায় পাখি মেলি আঁখি
    	বলে,বন-দেবী এলো নাকি?
    মধুর রঙ্গে অঙ্গে-ভঙ্গে জাগে শিহরণ।।
    সন্ধ্যায় ঝিল্লির মঞ্জির হতার
    ঝির ঝির শির শির তোলে ঝঙ্কার।
    মধুভাষিণী সুচারু-হাসিনী সে মায়াহরিণী' —
    ফোটালো আঁধারে মরি মরি
    দুলিছে অলকে আঁখির পলকে দোলন-চাঁপার নাচের মতন।।
    
  • ও কে বিকাল বেলা ব’সে

    বাণী

    ও কে বিকাল বেলা ব’সে নিরালা বাঁধিছে কেশ।
    হেরি’ আর্শিতে নিজেরই চারু-মুখ (চোখে) জাগে আবেশ।।
    বসনের শাসন নাই অঙ্গে তাহার
    উথ্‌লে পড়ে মুক্ত-দেহে যৌবন-জোয়ার,
    খুলে’ খুলে’ পড়ে কেশের কাঁটা বেণীর লেশ।।
    আঙুলগুলি নাচের ভঙ্গিতে,
    খেলে বেড়ায় বেণীর বিনুনিতে।
    কভু বাঁকায় ভুরু কভু বাঁকায় গ্রীবা
    ঠিক্‌রে পড়ে আয়নায় রূপের বিভা,
    জাগে সহসা গালে তা’র সিঁদুর-ডিবার রঙের রেশ।।
    
  • ও তুই কারে দেখে ঘোমটা দিলি নতুন বউ বল গো

    বাণী

    ও তুই কারে দেখে ঘোমটা দিলি নতুন বউ বল গো
    তুই উঠলি রেঙে যেন পাকা কামরাঙ্গার ফল গো।।
    তোর মন আইঢাই কি দেখে কে জানে
    তুই চুন বলে দিস হলুদ বাটা পানে
    তুই লাল নটে শাক ভেবে কুটিস শাড়ির আঁচল গো।।
    তুই এ ঘর যেতে ও ঘরে যাস পায়ে বাধে পা
    বউ তোর রঙ্গ দেখে হাসছে ননদ জা।
    তুই দিন থাকিতে পিদিম জ্বালিস ঘরে
    ওলো রাত আসিবে আরো অনেক পরে
    কেন ভাতের হাঁড়ি মনে ক'রে উনুনে দিস জল গো।।
    
  • ও বৌদি তোর কি হয়েছে চোখে কেন জল

    বাণী

    ও	বৌদি তোর কি হয়েছে চোখে কেন জল
    	দাদার তরে মন বুঝি তোর হয়েছে উতল।।
    তোর	দিব্যি দেখেছি স্বপনে
    যেন	দাদা কথা কইতেছে তোর সনে
    	দেখিস তোরা আমার স্বপন হবে না বিফল।।
    তোর	কান্নার সাগরে যখন উঠেছে জোয়ার
    	বৌদি লো তোর চাঁদ উঠিবার নাই রে দেরি আর।
    ও	বৌদি তোর চোখের জলের টানে
    	আমার দাদার সোনার তরী  আসতেছে উজানে
    দেখ	বাটনা ফেলে হাসছে দিদি চল ও ঘরে চল।।
    
  • ওকে ট'লে ট'লে চলে একলা গোরী

    বাণী

    ওকে ট'লে ট'লে চলে একলা গোরী
    নব-যৌবনা নীল-বাসনা কাঁখে গাগরি।।
    মদির মন্দ বায় অঞ্চল দোলে
    খোঁপা খুলে দোলে আকুল কবরী।
    তারে ছল ছল দূরে ডাকে নদী
    তা'রিনাম যপে পাপিয়া নিরবধি
    ডাকে বনের কিশোর বাজায়ে বাঁশরি।।
    
  • ওকে নাচের ঠমকে দাঁড়ালো থমকে সহসা চমকে পথে

    বাণী

    ও কে	নাচের ঠমকে দাঁড়ালো থমকে সহসা চমকে পথে
    	যেন তার নাম ধ'রে ডাকিল কে বাঁশের বাঁশিতে
    		মাঠে ওপার হতে।
    তার	হঠাৎ থেমে যাওয়া দেহ দোদুল
    	নাচের তালে যেন ছন্দের ভুল
    	সে রহে চাহি' অনিমেষে পটে আঁকা ছবিতুল
    	গেছে হারায়ে সে যেন কোন জগতে।।
    তার	ঘুম জড়িত চোখে জাগালো কী নতুন ঘোর
    	অকরুণ বাঁশির কিশোর;
    	উদাসী মুরতি প্রভাতী রাগিণী কাননে যেন
    	এলো নামিয়া অরুণ-কিরণ রথে।।
    
  • ওগো চৈতী রাতের চাঁদ যেয়ো না

    বাণী

    ওগো	চৈতী রাতের চাঁদ, যেয়ো না
    	সাধ না মিটিতে যেতে চেয়ো না।।
    হের	তরুলতায় কত আশার মুকুল,
    ওগো	মাধবী-চাঁদ আজো ফোটেনি ফুল,
    তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না —
    ঝরা	মুকুলে বনবীথি ছেয়ো না
    তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না, ওগো যেয়ো না।।
    আজো	ফুলের নেশায় পাগল দখিন হাওয়া
    আজো	বোলেনি পাপিয়া 'পিয়া পিয়া' গাওয়া
    তুমি	এখনি বিদায়-গীতি গেয়ো না
    তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না।।
    

  • কিশোরী মিলন-বাঁশরি

    বাণী

    	কিশোরী, মিলন-বাঁশরি
    শোন	বাজায় রহি’ রহি’ বনের বিরহী —
    	লাজ বিসরি’ চল জল্‌কে।
    তার	বাঁশরি শুনি’ কথার কুহু
    	ডেকে ওঠে কুহুকুহু - মুহুমুহু;
    	রস-যমুনা-নীর হ’ল অধীর, রহে না থির;
    ও তার 	দু-কূল ছাপায়ে তরঙ্গদল ওঠে ছল্‌কে॥    
    	কেন লো চম্‌কে দাঁড়ালি থম্‌কে —
    পেলি	দেখতে কি তোর প্রিয়তম্‌কে!
    পেয়ে	তারি কি দেখা নাচিছে কেকা,
    হ’ল	উতলা মৃগ কি দেখে চপল্‌কে॥
    

    নাটকঃ ‘চক্রব্যূহ’

  • কৃষ্ণা নিশীথ নাচে ঝিল্লির নূপুর

    বাণী

    কৃষ্ণা নিশীথ নাচে ঝিল্লির নূপুর বাজে।
    রিমিঝিমি রিমিঝিমি মৃদু আওয়াজে।।
    আঁধারের চাঁচর চিকুর খুলিয়া
    আপন মনে নাচে হেলিয়া দুলিয়া,
    মুঠি মুঠি হিম-কণা তারা-ফুল তুলিয়া
    ছুঁড়ে ফেলে ধরণী মাঝে।।
    তার	মণি-হার খুলে পড়ে উল্কা-মানিক,
    তার	নাচের নেশায় ঝিমায় দশ্‌দিক।
    	আধো-রাতে আমি শুনি স্বপনে
    তার	গুঞ্জন-গীত কানে-কথা গোপনে,
    	কালো-রূপের শিখা, ওকি শ্যামা বালিকা
    	নাচে নাচে জাগাইতে নটরাজে।।
    
  • কে নিবি ফুল কে নিবি ফুল

    বাণী

    		কে নিবি ফুল, কে নিবি ফুল —
    		টগর যূথী, বেলা মালতী
    		চাঁপা, গোলাপ, বকুল, নার্গিস ইরানি-গুল।।
    		আমার যৌবন-বাগানে
    		হাওয়া লেগেছে ফুল-জাগানে,
    		চ'লে যেতে ঢ'লে পড়ি, খুলে পড়ে এলো চুল;
    		তনু-মন আকুল আঁখি ঢুলুঢুল্‌।।
    (ওগো) 	ফুটেছে এত ফুল, ফুলমালী কই?
    		গাঁথিবে মালা কবে? সেই আশে রই;
    		এ মালা দেব কা'রে ভেবে সারা হই,
    		সহিতে পারি না এ ফুল-ঝামেলা, চামেলি-পারুল।।
    
  • কে নিবি মালিকা এ মধু যামিনী

    বাণী

    		কে নিবি মালিকা এ মধু যামিনী,
    		আয় লো যুবতী কুল কামিনী॥
    আমার		বেল ফুলের মালা গুণ জানে গো,
    		পরবাসী বঁধুকে ঘরে আনে গো।
    আমার		মালার মায়ায় ভালোবাসা পায়
    কেঁদে		কাটায় রাতি যে অভিমানিনী॥
    আমি		রূপের দেশের মায়া পরী,
    (সেই)		আমার মালার গুণে কুরূপা যে সে হয় সুন্দরী।
    যে		চঞ্চলে অঞ্চলে বাঁধিতে চায়,
    যার		নিঠুর বঁধু সদা পালিয়ে বেড়ায়।
    আমার		মালার মোহে ঘরে রহে সে
    ফোটে		মলিন মুখে হাসির সৌদামিনী॥
    
  • কে হেলে দুলে চলে এলোচুলে

    বাণী

    কে হেলে দুলে চলে এলোচুলে
    হেসে নদীকুলে এলো হেলে দুলে!
    	নূপুর রিনিকি ঝিনি বাজে রে
    	পথ-মাঝে রে, বাজে রে।।
    দূরে মন উদাসি বাজে বাঁশের বাঁশি,
    	বকুল-শাখে পাপিয়া ডাকে —
    হেরিয়া বুঝি এই বন-বালিকায়
    	রঙিন সাজে রে, বাজে রে।।
    	এ বুঝি নদীর কেউ
    তাই অধীর হলো জলে ঢেউ।
    	চন্দন-মাখা যেন চাঁদের পুতলি,
    	যত চলে তত রূপ ওঠে উথলি
    মেঘে লুকালো পরী লাজে রে, বাজে রে
    	পথ-মাঝে রে, বাজে রে।।
    

  • ক্ষীণ তনু যৌবন ভার বইতে নারি

    বাণী

    ক্ষীণ তনু যৌবন ভার বইতে নারি
    ধীরে চল গোরী ধীরে ধীরে
    টলে চিকন কাঁখে ভরা গাগরি
    	ভরে তায় ঘাঘরি।
    দেহ টুটে না যায় যেন নাগরি
    	নীল চোলি ভিজিয়া না যায় নীরে।।
    কঠিন ধরা হানে বেদনা কোমল পায়ে
    মুছায়ে দিব ব্যথা ব’স এ বকুল ছায়ে
    ‘না’বলি মুচকিয়া হেসো না ফিরে ফিরে।।
    দাঁড়ায়ে কত পথিক বহিতে সই ভার তব
    যদি চাহ গো সখি ভার তব আমি লব
    দাও আমারে ঠাঁই, তব ঐ তনুর তীরে।।
    
  • ক্ষ্যাপা হাওয়াতে মোর আঁচল উড়ে যায়

    বাণী

    ক্ষ্যাপা হাওয়াতে মোর আঁচল উড়ে যায়।
    খুলে পড়ে গো বাজুবন্দ ধরিতে আঁচল
    কোন ঘূর্ণি বাতাস এলো ছন্দ-পাগল
    লাগে নাচের ছোঁয়া দেহের কাঁচ মহলায়
    হয়ে পায়েলা উতলা সাধে ধরিয়া পায়।।
    খুলিয়া পড়ে খোঁপায়, কবরীর ফুলহার
    হাওয়ার এই রূপে গো এলো কি বঁধু আমার
    এমনি দুরন্ত আদর সোহাগ তার
    একি পুলক-শিহরেণে পরান মূরছায়।।
    

  • খেলিছে জলদেবী সুনীল সাগর জলে

    বাণী

    খেলিছে জলদেবী সুনীল সাগর জলে।
    তরঙ্গ - লহর তোলে লীলায়িত কুন্তলে।।
    ছল-ছল উর্মি-নূপুর
    স্রোত-নীরে বাজে সুমধুর,
    চল-চঞ্চল বাজে কাঁকন কেয়ূর
    ঝিনুকের মেখলা কটিতে দোলে।।
    আনমনে খেলে জল-বালিকা
    খুলে পড়ে মুকুতা মালিকা
    হরষিত পারাবারে উর্মি জাগে
    লাজে চাঁদ লুকালো গগন তলে।।
    

  • গলে টগর মালা কাদের ডাগর মেয়ে

    বাণী

    গলে টগর মালা কাদের ডাগর মেয়ে
    যেন রূপের সাগর চলে উজান বেয়ে॥
    তার সুডোল তনু নিটোল বাহুর পরে
    চাঁদের আলো যেন পিছ্‌লে পড়ে
    ও কি বিজলি পরী এলো মেঘ পাসরি’
    চাঁদ ভুলে যায় লোকে তার নয়নে চেয়ে॥
    যেন রূপকথার দেশের সে রাজকুমারী
    রামধনুর রঙ ঝরে অঙ্গে তারি
    মদন রতি করে তার আরতি
    তার রূপের মায়া দুলে ভুবন ছেয়ে॥
    
  • চলো সাম্‌লে পিছল পথ

    বাণী

    	চলো সাম্‌লে পিছল পথ গোরী।
    	ভরা যৌবন তায় ভরা গাগরি।।
    	নীর ভরণে এসে সখি নদী-তীর
    	তীর খেয়ো না হৃদয়ে ডাগর আঁখির,
    	জলে ভাসিবে নয়ন কিশোরী।।
    	হৃদি নিঙাড়ি এ পথে প্রেমিক কত
    সখি	করেছে রুধির-পিছল এ পথ,
    	কেহ উঠিল না এ পথে পড়ি’।।
    	তব ঘটের সলিল চাহিয়া সই
    কত	তৃষ্ণা-আতুর পথিক দাঁড়ায়ে ঐ,
    	মরুভূমে তুমি মেঘ-পরী।।