ত্রিতাল

  • নিরজন ফুলবন এসো প্রিয়া

    বাণী

    নিরজন ফুলবন, এসো প্রিয়া
    রহি’ রহি’ বলে কোয়েলিয়া।।
    পথ পানে চাহি, নাহি নিদ নাহি
    ঝরা ফুল জড়ায়ে ঝুরে হিয়া।।
    
  • নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে

    বাণী

    নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,
    হে প্রিয়, কোথা তুমি দূর প্রবাসে।।
    বিহগী ঘুমায় বিহগ–কোলে,
    ঘুমায়েছে ফুলমালা শ্রান্ত আঁচলে;
    ঢুলিছে রাতের তারা চাঁদের পাশে।।
    ফুরায় দিনের কাজ, ফুরায় না রাতি,
    শিয়রের দীপ হায় অভিমানে নিভে যায়
    নিভিতে চাহে না নয়নের বাতি।
    কহিতে নারি কথা তুলিয়া আঁখি
    বিষাদ–মাখা মুখ গুন্ঠনে ঢাকি’
    দিন যায় দিন গুণে, নিশি যায় নিরাশে।।
    

  • নীলাম্বরী শাড়ি পরি নীল যমুনায়

    বাণী

    নীলাম্বরী–শাড়ি পরি’ নীল যমুনায় কে যায়?
    যেন জলে চলে থল–কমলিনী ভ্রমর নূপুর হয়ে বোলে পায় পায়।।
    		কলসে কঙ্কনে রিনিঠিনি ঝনকে,
    		চমকায় উন্মন চম্পা বনকে,
    দলিত অঞ্জন নয়নে ঝলকে, পলকে খঞ্জন হরিণী লুকায়।।
    অঙ্গের ছন্দে পলাশ–মাধবী অশোক ফোটে,
    নূপুর শুনি’ বনতুলসীর মঞ্জরী উলসিয়া ওঠে।
    		মেঘ–বিজড়িত রাঙা গোধূলি
    		নামিয়া এলো বুঝি পথ ভুলি,
    তাহার অঙ্গ তরঙ্গ–বিভঙ্গে কুলে কুলে নদী জল উথলায়।।
    
  • নূপুর মধুর রুনুঝুনু বোলে

    বাণী

    নূপুর মধুর রুনুঝুনু বোলে।
    মন-গোকুলে রুনুঝুনু বোলে।।
    	কূলের বাঁধন টুটে,
    	যমুনা উথলি' ওঠে,
    পুলকে কদম ফোটে পেখম খোলে
    	শিখী পেখম খোলে।।
    ব্রজনারী কুল ভুলে'
    	লুটায় সে পদমুলে
    চোখে জল, বুকে প্রেম- তরঙ্গ দোলে।।
    	শ্রীমতি রাধারই সাথে
    	বিশ্ব ছুটেছে পথে,
    হরি হরি ব'লে মাতে ত্রিভুবন ভোলে।
    	নামে ত্রিভুবন ভোলে।।
    

  • পায়েলা বোলে রিনিঝিনি

    বাণী

    পায়েলা বোলে রিনিঝিনি।
    নাচে রূপ-মঞ্জরি শ্রীরাধার সঙ্গিনী।।
    	ভাব-বিলাসে
    	চাঁদের পাশে,
    ছড়ায়ে তারার ফুল নাচে যেন নিশীথিনী।।
    নাচে উড়ায়ে নীলাম্বরী অঞ্চল,
    মৃদু মৃদু হাসে আনন্দ রাসে শ্যামল চঞ্চল।
    কভু মৃদুমন্দ
    কভু ঝরে দ্রুত তালে সুমধুর ছন্দ,
    বিরহের বেদনা মিলন-আনন্দ —
    ফোটায় তনুর ভঙ্গিমাতে ছন্দ-বিলাসিনী।।
    
  • পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া

    বাণী

    পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া
    বুকে তারি পিয়ারে চাপিয়া।।
    বাতাবি নেবুর ফুলেলা কুঞ্জে
    মাতাল সমীরণ প্রলাপ গুঞ্জে
    ফুলের মহলায় চাঁদিনী শিহরায়
    নদীকূলে ঢেউ ওঠে ছাপিয়া।।
    এমনি নেবু ফুল এমনি মধুরাতে
    পরাতো বঁধু মোর বিনোদ খোঁপাতে,
    বাতায়নে পাখি করিত ডাকাডাকি
    মনে পড়ে তায় উঠি কাঁপিয়া।।
    
  • পিউ পিউ বিরহী পাপিয়া বোলে

    বাণী

    পিউ পিউ বিরহী পাপিয়া বোলে;
    কৃষ্ণচূড়া বনে ফাগুন সমীরণে
    ঝুরে ফুল বন পথতলে॥
    নিশি পোহায়ে যায় কাহার লাগি
    নয়নে নাহি ঘুম বসিয়া জাগি
    আমারই মত হায় চাহিয়া আশা পথ
    নিশীথের চাঁদ পড়ে গগনে ঢলে॥
    
  • পিউ পিউ বোলে পাপিয়া

    বাণী

    পিউ পিউ বোলে পাপিয়া
    ফাল্গুন উন্মন বন ব্যাপিয়া।।
    বিরহিনী মন বিহগী —
    ওরি সাথে কাঁদে,একা
    ঘরে নিশি জাগিয়া।।
    
  • পিয়াল ফুলের পিয়ালায় বঁধু

    বাণী

    পিয়াল ফুলের পিয়ালায় বঁধু অন্তর-মধু ঢেলে পিয়াব তোমায়।
    রচিব হৃদয়ে মাধবী-কুঞ্জ বাহিরে ফাগুন যদি যেতে চায়।।
    		বেল-ফুল যায় যদি ঝুরে
    		প্রেম-ফুল দিব ডালি ভ’রে,
    নিশি জেগে আমি গান শোনাব বনের বিহগ যদি মাগে বিদায়।।
    		আর যদি নাহি বহে দখিনা বাতাস
    	(বঁধু)	অঞ্চল আছে মোর, আছে কেশ-পাশ,
    যায় যদি যাক্ ডুবে চৈতালী চাঁদ আমার চাঁদ যেন চ’লে নাহি যায়।
    
  • প্রথম প্রদীপ জ্বালো মম ভবনে হে আয়ুষ্মতী

    বাণী

    প্রথম প্রদীপ জ্বালো মম ভবনে হে আয়ুষ্মতী
    আঁধার ঘিরে' আশার আলো আনুক তোমার গৃহের জ্যোতি।।
    	হেরিয়া তোমার আঁখির আলোক
    	বিষদিত সাঁঝ পুলকিত হোক,
    যেন দূরে যায় সব দুখ শোক, তব শঙ্খরব শুনি', হে সতী।।
    	কাঁকন পরা তব শুভ কর
    	মুখর করুক এ নীরব ঘর
    এ গৃহে আনুক বিধাতার বর তোমার মধুর প্রেম-আরতি।।
    
  • প্রদীপ কি জ্বলিল আবার

    বাণী

    প্রদীপ কি জ্বলিল আবার।
    দিন কি গো শেষ হল মোর নিরাশার।।
    বিরহ দাহন কি গো ফুরালো
    বৈকালি বায়ে তনু জুড়ালো,
    উঠিবে কি চাঁদ আর রবে না আঁধার।।
    সে কি গো রাধারে ত্যজিয়া ব্রজপথে
    আরোহিবে মথুরার রথে,
    যমুনায় আবার কি বহিবে জোয়ার।।
    
  • প্রাণে জাগে হিন্দোল

    বাণী

    প্রাণে জাগে হিন্দোল গানে জাগে হিল্লোল,
    প্রেমের চামেলি বনে জাগিল মুকুল্।
    মনের গোপন রাগে রঙিন স্বপন জাগে,
    ফুল-ভরা গুল্‌বাগে বুলে বুল্‌বুল্‌।।
    রূপে ধরা ঝলমল্ রসে ভরা টলমল্,
    ঢলো ঢলো অনুরাগে আঁখি ঢুলুঢুল্।
    পাপিয়ার কলগানে কোকিলের কুহুতানে,
    যৌবনে মৌবনে দিল্ মস্‌গুল।।
    

    রেকর্ড নাটিকাঃ কাফন-চোরা

  • ফিরিয়া যদি সে আসে

    বাণী

    ফিরিয়া যদি সে আসে আমার খোঁজে ঝরা গোলাবে।
    আনিয়া সমাধি পাশে আমার বিদায় বাণী শোনাবে।।
    	বলিও তারে এখানে এসে
    	ডাকে যেন মোর নাম ধ’রে সে,
    রবাব যবে কাঁদিবে রমলা সুরের কোমল রেখাবে।।
    	তৃষিত মরুর ধুসর গগন
    	যেমন হেরে মেঘের স্বপন,
    তেমনি দারুণ তিয়াসা লয়ে কাটিল আমার বিফল জীবন —
    একটি ফোঁটা আঁখি–জল ঝরে যেন তার হাতের শরাবে।।
    
  • ফিরে নাহি এলে প্রিয় ফিরে এলো বরষা

    বাণী

    ফিরে নাহি এলে প্রিয় ফিরে এলো বরষা।
    মুঞ্জরিল বনে বিরহিণী লতিকা —
    আমারি আশালতা হ'লো না গো সরসা।।
    
  • ফুলের জলসায় নীরব কেন কবি

    বাণী

    ফুলের জলসায় নীরব কেন কবি?
    ভোরের হাওয়ায় কান্না পাওয়ায় তব ম্লান ছবি
    		নীরব কেন কবি।।
    যে বীণা তোমার কোলের কাছে
    বুক-ভরা সুর ল’য়ে জাগিয়া আছে,
    তোমার পরশে ছড়াক্‌ হরষে
    আকাশে-বাতাসে তা’র সুরের সুরভি
    		নীরব কেন কবি।।
    তোমার যে প্রিয়া গেল বিদায় নিয়া অভিমানে রাতে —
    গোলাপ হয়ে কাঁদে তাহারই কামনা উদাস-প্রাতে।
    ফিরে যে আসিবে না ভোলো তাহারে
    চাহ তাহার পানে দাঁড়ায়ে যে দ্বারে,
    অস্ত-চাঁদের বাসনা ভুলাতে
    অরুণ-অনুরাগে উদিল রবি
    		নীরব কেন কবি।।
    
  • ব’লো না ব’লো না ওলো সই

    বাণী

    ব’লো না ব’লো না ওলো সই
    		আর সে কথা।।
    তরু কি লতার কাছে
    এসে কভু প্রেম যাচে
    তরু বিনা নাহি বাঁচে
    		অসহায় লতা।।
    ভুলিতে যার নাই তুলনা
    সখি তার কথা তুলো না
    প্রাণহীন পাষাণে গড়া
    		সে যে দেবতা।।
    
  • বন-কুন্তল এলায়ে বন শবরী ঝুরে

    বাণী

    বন-কুন্তল এলায়ে বন শবরী ঝুরে সকরুণ সুরে।
    বিষাদিত ছায়া তার চৈতালী সন্ধ্যার চাঁদের মুকুরে।।
    	চপলতা বিসরি যেন বন-যৌবন
    	বিরহ-ক্ষীণ আজি উদাস উন্মন,
    তোলে না ঝঙ্কার আর ঝরা পাতার মর্মর নূপুরে।।
    যে কুহু কুহরিত মধুর পঞ্চমে বিভোর ভাবে,
    ভগ্ন কণ্ঠে তার থেমে যায় সুর করুণ রেখাবে।
    	কোন বন-শিকারীর অকরুণ তীর
    	আলো হ’রে নিল ওই উজল আঁখির —
    ফেলে যাওয়া বাঁশি তা’র অঞ্চলে লুকায়ে —
    	গিরি–দরি–প্রান্তরে খোঁজে সে নিঠুরে।।
    
  • বনপথে কে যায়

    বাণী

    বনপথে কে যায়।
    মনে হয় যেন তারে চিনি আমি হায়।।
    ছন্দে জাগায়ে সে-নিশীথ নিঝুম
    বাজে নূপুর তার রুমা ঝুমা ঝুম্,
    জাগে নিশীথিনী এলোচুলে পাষাণ বুকে নির্ঝর জাগায়।।
    
  • বরষা ঐ এলো বরষা

    বাণী

    বরষা ঐ এলো বরষা
    আলোর ধারায় জল ঝরঝরি’ অবিরল
    ধূসর নীরস ধরা হলো সরসা।।
    ঘন দেয়া দমকে দামিনী চমকে
    ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর ঝমঝম ঝমকে
    মনে পড়ে সুদূর মোর প্রিয়তমকে
    মরাল মরালীরে হেরি সহসা।।
    
  • বসন্ত এলো এলো এলো রে

    বাণী

    বসন্ত এলো এলো এলো রে
    পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে
    মুহু মুহু কুহু কুহু তানে।
    মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে
    ভ্রমর গুঞ্জে গুনগুন গানে।।
    পিয়া পিয়া ডেকে ওঠে পাপিয়া
    মহুল, পলাশ বন-ব্যাপিয়া
    সুরভিত সমীরণ চঞ্চল উন্মন
    আনে নব-যৌবন প্রাণে।।
    বেণুকার বনে বাঁশি বাজে
    বনমালী এলো বন-মাঝে
    নাচে তরু-লতিকা যেন গোপ-গোপিকা
    রাঙা হয়ে রঙের বানে।।