বাণী

খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই প’ড়ে
ছেড়ে’ মস্‌জিদ আমার মুর্শিদ এল যে এই পথ ধ’রে।।
দুনিয়াদারির শেষে আমার নামাজ রোজার বদ্‌লাতে
চাইনে বেহেশ্‌ত্‌ খোদার কাছে নিত্য মোনাজাত ক’রে।।
কায়েস যেমন লাইলী লাগি’ লভিল মজনু খেতাব
যেমন ফরহাদ শিঁরির প্রেমে হ’ল দিওয়ানা বেতাব।
বে–খুদীতে মশ্‌গুল্‌ আমি তেমনি মোর খোদার তরে।।

বাণী

খড়ের প্রতিমা পূজিস্‌ রে তোরা, মাকে ত’ তোরা পূজিস্‌নে!
প্রতি মা’র মাঝে প্রতিমা বিরাজে (ঘরে ঘরে ওরে)
			হায় রে অন্ধ, বুঝিস্‌নে।।
বছর বছর মাতৃ পূজার ক’রে যাস্‌ অভিনয়
ভীরু সন্তানে হেরি লজ্জায় মাও যে পাষাণময়,
মাকে জিনিতে সাধন-সমরে সাধক ত’কেহ বুঝিস্‌নে।
মাটির প্রতিমা গ’লে যায় জলে, বিজয়ায় ভেসে যায়,
আকাশে-বাতাসে মা’র স্নেহ জাগে অতন্দ্র করুণায়।
তোরই আশে-পাশে তাঁর কৃপা হাসে —
			কেন সেই পথে তাঁরে খুঁজিস্‌নে।।

নাটিকাঃ ‌‘বিজয়া’

বাণী

খেলি আয় পুতুল-খেলা ব’য়ে যায় খেলার বেলা সই।
বাবা ঐ যান আপিসে ভাবনা কিসের খোকারা দোলায় ঘুমোয় ঐ।।
দাদা যান ইস্কুলেতে, মা খুড়ি মা রান্না করেন ঐ হেঁসেলে
ঠানদি দাওয়ায় ঝীমায় ব’সে ফোকলা বদন মেলে।
আয় লো ভুলি পঞ্চি টুলি পটলি খেঁদি কই।।

নাটিকাঃ ‘পুতুলের বিয়ে’

বাণী

খর রৌদ্রের হোমানল জ্বালি’ তপ্ত গগনে জাগি।
রুদ্র তাপস সন্ন্যাসী বৈরাগী।।
	সহসা কখন বৈকালি ঝড়ে
	পিঙ্গল মম জটা খু’লে পড়ে,
যোগী শঙ্কর প্রলয়ঙ্কর জাগে চিত্তে ধেয়ান ভাঙি’।।
	শুষ্ক কণ্ঠে শ্রান্ত ফটিক জল
	ক্লান্ত কপোত কাঁদায় কানন-তল,
চরণে লুটায় তৃষিতা ধরণী আমার শরণ মাগি’।।

১. মম চিত্তে মাতে নৃত্যে যোগী শঙ্কর ধ্যান ভাঙি।

বাণী

খেলে নন্দের-আঙিনায় আনন্দ দুলাল।
রাঙা চরণে মধুর সুরে বাজে নূপুর-তাল॥
	নবীন নাটুয়া বেশে
	নাচে কভু হেসে হেসে,
যাশোমতীর কোলে এসে দোলে কভু গোপাল॥
‘ননী দে’ বলিয়া কাঁদে কভু রোহিণী-কোলে,
জড়ায়ে ধ’রে কদম তরু তমাল-ডালে দোলে।
	দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গ হ’য়ে
	বাজায় মুরলী ল’য়ে,
কভু সে চরায় ধেনু বনের রাখাল॥

বাণী

খেলা শেষ হল, শেষ হয় নাই বেলা।
কাঁদিও না, কাঁদিও না — তব তরে রেখে গেনু প্রেম-আনন্দ মেলা।।
খেলো খেলো তুমি আজো বেলা আছে
খেলা শেষ হলে এসো মোর কাছে,
প্রেম-যমুনার তীরে ব’সে রব লইয়া শূন্য ভেলা।।
যাহারা আমার বিচার করেছে — ভুল করিয়াছে জানি,
তাহাদের তরে রেখে গেনু মোর বিদায়ের গানখানি।
	হই কলঙ্কী, হোক মোর ভুল
	বালুকার বুকে ফুটায়েছি ফুল,
তুমিও ভুলিতে নারিবে সে-কথা — হানো যত অবহেলা।।

পাঠান্তর

খেলা শেষ হল, শেষ হয় নাই বেলা।
কাঁদিও না, কাঁদিও না — তব তরে রেখে গেনু প্রেম-আনন্দ মেলা।।
খেলো খেলো তুমি আজো বেলা আছে
খেলা শেষ হলে এসো মোর কাছে,
প্রেম-যমুনার তীরে ব’সে রব লইয়া শূন্য ভেলা।।
যাহারা আমার বিচার করেছে আর তাহাদের কেহ,
দেখিতে পাবে না কলঙ্ক কালিমাখা মোর এই দেহ।
	হই কলঙ্কী, হোক মোর ভুল
	পৃথিবীতে আমি এনেছি গোকুল,
তুমিও ভুলিতে নারিবে সে-কথা — হানো যত অবহেলা।।

[গানটি ১৯৬৫ সালে জগন্ময় মিত্রের কণ্ঠে রেকর্ডের সময় প্রশিক্ষক কমল দাশগুপ্ত বাণীর কিছু পরিবর্তন করেছিলেন।
যথা: ১. খেলা শেষ হলে যেয়ো, যেয়ো মোর কাছে, ২. হোক অপরাধ হোক মোর ভুল]