বাণী

রুমু রুমু রুমু ঝুমু ঝুমু বাজে নূপুর
তালে তালে দোদুল দোলে নাচের নেশায় চুর।।
চঞ্চল বায়ে আঁচল উড়ায়ে
চপল পায়ে ও কে যায়
নাটনী কল তটিনীর প্রায়
চিনি বিদেশিনী চিনি গো তায়
শুনি’ ছন্দ তারি এ হিয়া ভরপুর।।
নাচন শিখালে ময়ুর মরালে
মরিচী-মায়া মরুতে ছড়ালে
বন-মৃগের মন হেসে ভুলালে
ডাগর আঁখির নাচে সাগর দুলালে।
গিরিদরি বনে গো দোল লাগে নাচনের শুনে তারি সুর।।

বাণী

রুম্ ঝুম্ রুম ঝুম্ কে বাজায় জল-ঝুম্‌ঝুমি।
চমকিয়া জাগে ঘুমন্ত বনভূমি ॥
		দুরন্ত অরণ্যা গিরি- নির্ঝরিণী
		রঙ্গে সঙ্গে ল’য়ে বনের হরিণী,
শাখায় শাখায় ঘুম ভাঙায় ভীরু মুকুলের কপোল চুমি’ ॥
কুহু-কুহু কুহরে পাহাড়ি কুহু পিয়াল-ডালে,
পল্লব-বীণা বাজায় ঝিরিঝিরি সমীরণ তা’রি তালে তালে।
		সেই জল-ছলছল সুরে জাগিয়া
		সাড়া দেয় বন-পারে বাঁশি রাখালিয়া১’,
পল্লীর প্রান্তর ওঠে শিহরি’ বলে —  ‘চঞ্চলা কে গো তুমি’ ॥

১. ‘বউ কথা কও কোকিল পাপিয়া’ পঙক্তিটি অতিরিক্ত আছে।

বাণী

দ্বৈত	:	রাধাকৃষ্ণ নামের মালা
		জপ দিবানিশি নিরালা॥
পুরুষ	:	অগতির গতি গোকুলের পতি
স্ত্রী	:	শ্রীকৃষ্ণে ভক্তি দেয় যে শ্রীমতী
পুরুষ	:	ভব-সাগরে কৃষ্ণ নাম ধ্রুবজ্যোতি
দ্বৈত	:	সেই কৃষ্ণের প্রিয়া ব্রজবালা॥
স্ত্রী	:	পাপ-তাপ হবে দুর হরির নামে
		শ্রীমতী রাধা যে হরির বামে
পুরুষ	:	ঐ নাম জপি’ যাবি গোলকধামে
দ্বৈত	:	সেই রাধা নাম হবে দুঃখ জ্বালা॥
স্ত্রী	:	সাধনে সিদ্ধ হবে রাধা ব’লে ডাকো
পুরুষ	:	কৃষ্ণ-মূরতি হৃদি-মন্দিরে রাখো
দ্বৈত	:	জপ রে যুগল নাম রাধাশ্যাম
		এই আঁধার জগৎ হবে আলো॥

বাণী

রাখ রাখ রাঙা পায়, হে শ্যামরায়!
ভুলে গৃহ স্বজন সবই সঁপেছি তোমায়॥
সংসার মরু ঘোর, নাহি তরু-ছায়া,
নব নীরদ শ্যাম, আনো মেঘ-মায়া;
আনন্দ-নীপবনে নন্দ-দুলাল এসো,
বাহও উজান, হরি, অশ্রুর যমুনায়॥
একা জীবন মোর গহন ঘন ঘোর,
এসো এ বনে বনমালী, গোপ কিশোর,
কুঞ্জ রচেছি দুখ-শোক তমাল-ছায় -  
প্রেম-প্রীতির গোপী চন্দন শুকায়ে যায়॥
দারা সুত প্রিয়জন, হরি হে, নাহি চাই,
পদ্মা-পলাশ-আঁখি যদি দেখিতে পাই;
রাখাল-রাজা এসো, এসো হে ঋষিকেশ,
গোকুলে লহ ডাকি’, অকূলে ভাসি হায়॥

বাণী

রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে
‘পিউ কাহাঁ পিউ কাহাঁ’ ডেকে ওঠে পাপিয়া।।
	আঙিনায় ফুল-গাছে
	প্রজাপতি নাচে,
ফেরে মুখের কাছে আদর যাচিয়া।।
	দুলে দুলে বনলতা
	কহিতে চাহে কথা,
বাজে তারি আকুলতা — কানন ছাপিয়া।।
	শ্যামলী-কিশোরী মেয়ে
	থাকে দূর নভে চেয়ে,
কালো মেঘ আসে ধেয়ে — গগন ব্যাপিয়া।।

বাণী

রাঙা পির্‌হান প'রে শিশু নবী খেলেন পথে।
দেখে হুর-পরীরা সব লুকিয়ে বেহেশ্‌ত হ'তে।।
মোহনী সুরত বাঁকা চাঁদে চন্দন মাখা।
নূরানী রওশনী তাঁর চমকে দিনের আলোতে।।
নাচের তালে তালে সোনার তাবিজ দোলে,
চরণ তলে ধূলি কাঁদে মোহাম্মদ ব'লে।
নীল রেশমি রুমাল বাঁধা তাঁর চাঁচর কেশে
রাঙা সালোয়ার প'রে নাচে সে হেসে হেসে,
খোদার আরশ টলে সে রূপ-সুধা-স্রোতে।।