বাণী

সুনয়না চোখে কথা ক’য়ে যায়
বনের রানী, দুটি ফুলে শুনি
নয়ন ফাঁকে প্রাণ লুকিয়ে চায়॥
দেহ দেউলে, দুটি দীপ দুলে
হেরি সারা অন্তর তায়॥

বাণী

নন্দকুমার বিনে সই আজি বৃন্দাবন অন্ধকার
				নাহি ব্রজে আনন্দ আর।
যমুনার জল দ্বিগুণ বেড়েছে ঝরি’ গোকূলে অশ্রুধার।।
শীতল জানিয়া মেঘ-বরণ শ্যামের শরণ লইয়া সই
তৃষিতা চাতকী জ্বলে মরি হায় বিরহ-দাহনে ভস্ম হই।
শীতল মেঘে অশনি থাকে
কে জানিত সখি সজল কাজল শীতল মেঘে অশনি থাকে।
ব্রজে বাজে না বেণু আর চরে না ধেনু
(আর) পড়ে না গোকুলে শ্যাম চরণ রেণু
তার ফেলে যাওয়া বাঁশি নিয়ে শ্রীদাম সুদাম
ধায় মথুরার পথে আর কাঁদে অবিরাম।
কৃষ্ণে না হেরি দূর বন পার উড়ে গেছে শুক সারি
কৃষ্ণ যেথায় সেই মথুরায় চলো যাই ব্রজনারী।।

বাণী

সজল-কাজল-শ্যামল এসো তমাল-কানন-ঘেরি,
কদম-তমাল-কানন ঘেরি।
মনের ময়ূর কলাপ মেলিয়া নাচুক তোমারে হেরি’।।
ফোটাও নীরস চিত্তে সরস মেঘমায়া,
আনো তৃষিত নয়নে মেঘল ছায়া,
বাজাও কিশোর বাঁশের বাঁশরি ব্যাকুল বিরহেরই।।
দাও পদরজঃ হে ব্রজবিহারী, মনের ব্রজধামে —
রুমু-ঝুমু ঝুমু বাজুক নূপুর চরণ ঘেরি,
কদম-তমাল-কানন ঘেরি।।

বাণী

জাগো হে রুদ্র, জাগো রুদ্রাণী,
কাঁদে ধরা দুখ-জরজর!
জাগো গৌরী, জাগো হর।।
আজি শস্য-শ্যামা তোদের বন্যা
অন্নবস্ত্র হীনা অরণ্যা
সপ্ত সাগর অশ্রু-বন্যা,
কাঁপিছে বুক থর থর।।
আর সহিতে পারি না অত্যাচার,
লহ এ অসহ ধরার ভার।
গ্রাসিল বিশ্ব লোভ-দানব,
হা হা স্বরে কাঁদিছে মানব,
জাগো ভৈরবী জাগো ভৈরব
ত্রিশূল খড়গ ধর ধর।।

বাণী

পথ চলিতে যদি চকিতে কভু দেখা হয়, পরান-প্রিয়!
চাহিতে যেমন আগের দিনে তেমনি মদির চোখে চাহিও।।
		যদি গো সেদিন চোখে আসে জল,
		লুকাতে সে জল করিও না ছল,
যে-প্রিয় নামে ডাকিতে মোরে সে-নাম ধরে বারেক ডাকিও।।
		তোমার বঁধু পাশে (হায়) যদি রয়,
		মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়,
কহিব তা’রে, ‘আমার প্রিয়ারে আমারো অধিক ভালোবাসিও’।।‌
		বিরহ-বিধুর মোরে হেরিয়া,
		ব্যথা যদি পাও যাব সরিয়া,
রব না হ’য়ে পথের কাঁটা, মাগিব এ বর মোরে ভুলিও।।

বাণী

মালা যদি মোর ধূলায় মলিন হয়
ব'সে আছি তাই অঞ্চলে নিয়ে কুসুমেরি সঞ্চয়।।
	ফুলহার যদি কর অবহেলা
	তাই ভাবি আর ব'য়ে যায় বেলা
হৃদয়ে থাকুক লুকানো আমার হৃদয়ের পরিচয়।।
বিফল যদি গো হয় পূজা নিবেদন
মন্দির-দ্বারে দাঁড়াইয়া তাই পাষাণেরই নারায়ণ।।
	কেন কাছে আসি, এসে ফিরে যাই
	যদি ফেল জেনে ভয় মানি তাই
সকলি সহিব, সহিতে নারিব হৃদয়ের পরাজয়।।