বাণী

কৃষ্ণ	: হের আহিরিণী মানস-গঙ্গা দুকূল পাথার।
রাধা	: হরি ভয়ে মরি একা নারী কিসে হব পার।।
কৃষ্ণ	: পারের কাণ্ডারি আমি প্যারী এসো আমার নায়।
রাধা	: ওগো একেলা গোপের কুলবধু আমি, তুমিও তরুণ মাঝি তায়।।
কৃষ্ণ	: যৌবন ভার ভারি পসার রাধে! তবু নাহি ভয়।
রাধা	: ওইটুকু তরী, ভয়ে মরি হরি, ভার যদি নাহি সয়।
উভয়ে	: হের মানস-গঙ্গায় উঠিয়াছে ঢেউ ঝড় বহে অনিবার।।
রাধা	: নাই পারের কড়ি পারে যাব কি করি,
কৃষ্ণ	: দিয়ে মন বাঁধা পারে চল কিশোরী।
উভয়ে	: মোরা ভেসেছি অকূলে প্রেমের গোকুলে কুলের ভয় কি আর।।

বাণী

হার মানি ননদিনী
মুখর মুখের বাণী শুনি তোর লজ্জাও লাজ সখি ভোলে
			পুলকে প্রাণ মন দোলে দোলে।।
পলকের চাহনিতে কে জানে কেমনে
প্রাণে এলো এত মধু এত লাজ নয়নে
বাহিরে নীরব কথার কুহু অন্তরে মুহুমুহু বোলে বোলে
			মুহু মুহু কুহু কুহু বোলে।।
তোরি মত ছিনু সই বনের কুরঙ্গী
মানি নাই কোনদিন লাজের ভ্রুভঙ্গি।
মধুরা মুখরা ওলো! মিষ্টি মুখের তোর
সব মধু খেয়েছে কি ঠাকুর জামাই চোর?
তব অভিনব বাণী হিল্লোলে
গুন্ঠন আপনি খোলে পুলকে প্রাণ মন দোলে।।

নাটিকাঃ ‘প্রীতি উপহার’

বাণী

হোরির রঙ লাগে আজি গোপিনীর তনু মনে।
অনুরাগে-রাঙা গোরীর বিধু-বদনে॥
ফাগের লালী আনিল কে,
কাজল-কালো চোখে
কামনা-আবির ঝরে রাঙা নয়নে॥
অশোক রঙন ফুলের আভা জাগে ডালিম-ফুলী গালে,
নাচিছে হৃদয় আজি রসিয়ার নাচের তালে।
তাম্বুলীরাঙা ঠোঁটে ফাগুনের ভাষা ফোটে,
(তার) প্রাণের খুশির রং লেগেছে রাঙা বসনে॥

বাণী

হে নট-ভৈরবী আশাবরি।
ওঠো গো অরুণ গান বিসরি’।।
চেয়ে আছ জলভরা নয়নে,
তীব্র নিদাঘ তাপ কোমল করি’।।
পঞ্চমে কোয়েলিয়া ক’য়ে যায়
প্রথম প্রহর দিবা ব’য়ে যায়,
গুরু গঞ্জনা দিতে আসে ঐ —
মুখ ভার করি’ তব ননদিনী তোড়ি।।

বাণী

হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি।
তুমি কেন হায় আসিলে হেথায় সুখের স্বরগ হইতে নামি।।
	চারিপাশে মোর উড়িছে কেবল
	শুকনো পাতা মলিন ফুল–দল,
বৃথাই কেন হায় তব আঁখিজল ছিটাও অবিরল দিবস–যামী।।
	এলে অবেলায় পথিক বেভুল
	বিঁধিছে কাঁটা নাহি যবে ফুল,
কি দিয়ে বরণ করি ও চরণ নিভিছে জীবন, জীবন–স্বামী।।

বাণী

হে বিধাতা! হে বিধাতা! হে বিধাতা!
দুঃখ-শোক-মাঝে, তোমারি পরশ রাজে,
কাঁদায়ে জননী-প্রায়, কোলে কর পুনরায়, শান্তি-দাতা।।
ভুলিয়া যাই হে যবে সুখ-দিনে তোমারে
স্মরণ করায়ে দাও আঘাতের মাঝারে।
দুঃখের মাঝে তাই, হরি হে, তোমারে পাই দুঃখ-ত্রাতা।।
দারা-সুত-পরিজন-রূপে হরি, অনুখন
তোমার আমার মাঝে আড়াল করে সৃজন।
তুমি যবে চাহ মোরে, লও হে তোদের হ’রে
ছিঁড়ে দিয়ে মায়া-ডোর, ক্রোড়ে ধর আপন।
ভক্ত সে প্রহ্লাদ ডাকে যবে ‘নারায়ণ’,
নির্মম হয়ে তার পিতারও হর জীবন।
সব যবে ছেড়ে যায় দেখি তব বুকে হায় আসন পাতা।।