বাণী

নাচে নটরাজ, মহাকাল।
অম্বর ছাপিয়া পড়ে লুটাইয়া আলো-ছায়ার বাঘ-ছাল।।
কালো সিন্ধু জলে তাথৈ তাথৈ রব
শুনি সেই নৃত্যের নাচে মহাভৈরব
বিষাণ মন্দ্রে বাজে মাভৈঃ মাভৈঃ রব
প্রাণ পেয়ে জেগে ওঠে মৃত কঙ্কাল।।
গঙ্গা তরঙ্গে অপরূপ রঙ্গে
ছন্দ জাগে সেই নৃত্য-বিভঙ্গে
জোছনা আশিস-ধারা ঝরে চরাচরে
ছাপিয়া ললাট শশী ভাল।।

বাণী

নাচো শ্যাম-নটবর কিশোর-মুরলীধর অঙ্গ মিশায়ে মম অঙ্গে।
তোমার নাচের শ্রী ফুটুক আমার এই নৃত্য-বিভঙ্গে।।
মম রক্তে বাজুক তব পায়ের নূপুর
আমার কণ্ঠে দাও বাঁশরির সুর,
	তব বাঁশরির সুর।
লীলায়িত হয়ে উঠুক এ তনু তোমার প্রেম-আনন্দ-তরঙ্গে।।
আমার মাঝে হরি, নাচো যবে তুমি আমি নাচি আপনা ভুলি’
			হরি আমি নাচি আপনা ভুলি’
শরম ভরম যায় এই দেহ যমুনায় ছন্দের হিল্লোল তুলি’।
মনে হয় আমি যেন রাসের রাধা জনম জনম আমি নাচি তব সঙ্গে।।

বাণী

নাহি ভয় নাহি ভয়।
মৃত্যু সাগর মন্থন শেষ আসে মৃত্যুঞ্জয়।।
কৃষ্ণাতিথির তিমির হরণ
আসিল কৃষ্ণ তিমির বরণ,
দিকে দিকে ঐ গাহে জনগণ —
জয় হে জ্যোতির্ময়।।
দলিত হৃদয়-শতদলে তাঁর
আঁখি-জল-ঘেরা আসন বিথার,
ব্যথা-বিহারীরে দেখিবি কে আয়।
ধ্বংসের মাঝে বংশী বাজায়,
নিখিলের হৃদি বেদনা-আভায় —
নবীন অভ্যুদয়।।

বাণী

নিদাঘের খর তাপে ক্লান্ত এ ধরণী।
মাধুরী হারায়ে হল পাণ্ডুর বরণী।।
পিঙ্গল জটাজাল, তেজ তার অশনি।
বৈশাখী ভোরে স্মরি’ রুদ্রাণী জননী।।
ধূলি-ধূসরিত প্রসারিত অম্বর
বুক-ভরা তৃষা তার, চাহে সে নটবর,
শ্যামলী মেঘ-মালা, সেই তার জলধর —
দাহনের অবসানে জুড়াইবে আপনি।।

বাণী

নিশি ভোর হলো জাগিয়া, পরান-পিয়া
কাঁদে ‘পিউ কাহাঁ’ পাপিয়া, পরান-পিয়া।।
	ভুলি’ বুলবুলি-সোহাগে
	কত গুল্‌বদনী জাগে
রাতি গুল্‌সনে যাপিয়া, পরান-পিয়া।।
	জেগে রয়, জাগার সাথী
	দূরে চাঁদ, শিয়রে বাতি
কাঁদি ফুল-শয়ন পাতিয়া, পরান-পিয়া।।
	গেয়ে গান চেয়ে কাহারে
	জেগে র’স কবি এপারে
দিলি দান কারে এ হিয়া, পরান-পিয়া।।

বাণী

নিতি নিতি মোরে ডাকে সে স্বপনে,
নিরাশার আলো জ্বলিয়া গোপনে।
জানি না মায়াবিনী কী মায়া জানে
কেবলি বাহিরে পরান টানে,
ঘুরে ঘুরে মরি আঁধার-গহনে।।
শত পথিকে ও-রূপে ছল হানে,
অপরূপ শতরূপে শত গানে।
পথে পথে বাজে তাহারি বাঁশি,
সে-সুরে নিখিল-মন উদাসী;
দহে যাদুকরী বিধুর দহনে।।