সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায়

বাণী

সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায় তুমি ফিরিলে না ঘরে,
আঁধার ভবন জ্বলেনি প্রদীপ মন যে কেমন করে।।
	উঠানে শূন্য কলসির কাছে
	সারাদিন ধরে ঝ’রে প’ড়ে আছে
তোমার দোপাটি গাঁদা ফুলগুলি যেন অভিমান ভরে।।
বাসন্তী রাঙা শাড়িখানি তব ধূলায় লুটায় কেঁদে,
তোমার কেশের কাঁটাগুলি বুকে স্মৃতির সমান বেঁধে।
	যাইনি বাহিরে আজ সারাদিন
	ঝরিছে বাদল শ্রান্তিবিহীন
পিয়া পিয়া ব’লে ডাকিছে পাপিয়া এ বুকের পিঞ্জরে।।

সাজে অভিনব সাজে রাই

বাণী

সাজে অভিনব সাজে রাই, — শ্যাম পাগলিনী
নয়ন টিপিয়া হাসে চারিপাশে আহিরিণী
আনমনে মনের ভুলে বাঁধে চূড়া বেণী খুলে
সিঁথি-মৌর ফেলে পরে শিখী-পাখা বিনোদিনী রাই সাজে একি সাজে রে
তারে হেরিয়া কি বনে শ্যাম লুকাইল লাজে রে।
গাগরি বিসরি বাজায় সে বাঁশরি,
পায়েলা পরা-পায়ে নূপুর বাজে রে।
পরিহরি নীলশাড়ি এলো পীত ধরা পরি
হেরিয়া কিশোর হরি মুখে বলে ‘হরি হরি’
আয় রে শ্রীদাম যা রে দেখে, আয় রে সুবল যা রে দেখে,
আয় বিরজা যা রে দেখে, আয় বিশাখা যা রে দেখে,
কার-চাঁদে তোরা দেখেছিস্‌ এবার গোরাচাঁদে তোরা যা লো দেখে।
উছলে রূপের ছটা কোটি রবি-শশী জিনি।।

টিকি আর টুপিতে লেগেছে দ্বন্দ্ব

বাণী

টিকি আর টুপিতে লেগেছে দ্বন্দ্ব বচন যুদ্ধ ঘোর
কে বড় কে ছোট চাই মীমাংসা, কার আছে কর-জোর॥

টিকি বলে শিরে আমি বিরাজিলে হয় আহা কিবা শোভা।
যেন প্রকান্ড কুষ্মান্ডের বৃন্তটি মনোলোভা।
এ যে চতুর্বর্গ ফলেরি বোঁটা।
শুনে টুপি ফিক্ ক’রে হেসে বল্লেঃ ‘ভায়া, শিরে বিরাজ করবার
শোভার কথা যদি বল তো ও বড়াই আমারি মুখে মানায়,
ও বড়াই আমার মুখে মানায়।’
আমি বাঁকা হয়ে যবে শিরে বসি, দেখে বিবিরা মূর্ছা যায়॥

টিকি বলে, মোরে বলে চৈতন্ কভু বা আর্কফলা
আর আমারি প্রসাদে প্রণামীটা মেলে দুটি বেলা চাল-কলা॥
(মেলে দাদা) দুটি বেলা চাল-কলা॥

[শুনে বাদশাহী চালে টুপি বল্লেঃ ‘আরে তোবা তোবা
চাল আর কলা? ওসব আবার খাদ্য নাকি হে? এ্যাঁ?]
বাদশাহী চালে টুপি বলে ওসব খাদ্য নাকি?
দেখো, আমারি দোয়ায়, আহা তোফা জুটে যায়, গোস্ত ও রামপাখি।

টিকি বলে মিয়া, আমার কৃপায় স্বর্গে free pass মেলে
(আর) আমারঃ through দিয়ে মগজে বুদ্ধি electricity খেলে
মিয়া আমার কৃপায় স্বর্গে free pass মেলে।
এ যে পারে যাবার টিকিট - শুধু টিকিট নয়।
[শুনে টুপি রেগে কাঁই, বল্লেঃ]
বেহেশ্‌তে মোর একচেটে অধিকার
কাফেরের তরে no admission খোদার ইস্তাহার।

(এই রূপে) ক্রমশঃ তর্ক বাড়িল ভীষণ বচনে বেজায় দড়,
এ উহারে কয় মোর ঠাঁই উঁচু তুমি বাপু স’রে পড়॥
সহসা মুন্ড ছিন্ন হইল শক্র কৃপাণ ঘায়।
টুপি আর টিকি একই সঙ্গে ভূঁয়ে গড়াগড়ি যায়॥

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে

বাণী

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে,
তোমায় আমার অনেক যুগের অনেক কথা বলার আছে।।
গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ, ঘোরে যেমন অহরহ;
আমার আকুল এ বিরহ তেমনি প্রিয় তোমায় যাচে॥
চিরকালই রইলে তুমি আমার পাওয়ার বহুদূরে
আজকে ক্ষণিক কইব কথা সকরুণ গানের সুরে।
করব পূজা গানে গানে, চাইব না আর নয়ন পানে;
আমার চোখের অশ্রুলেখা দেখে তুমি চেন পাছে॥

আয় বিজয়া আয় রে জয়া

বাণী

আয় বিজয়া আয় রে জয়া উমার লীলা যা রে দেখে।
সেজেছে সে মহাকালী চোখের কাজল মুখে মেখে।।
	সে ঘুমিয়েছিল আমার কোলে
	জেগে উঠে কেঁদে বলে,
আমায় কালী সাজিয়ে দে মা ছেলেরা মোর কাঁদছে ডেকে।।
চেয়ে দেখি মোর উমা নাই নাচে কালী দিগম্বরী,
হুঙ্কার দেয় কোটি গ্রহের মুণ্ডমালা গলায় পরি’।
	আমি শুধু উমায় চিনি
	এ কোন্ মহামায়াবিনী,
কালোরূপে বিশ্বভুবন আকাশ-পবন দিল ঢেকে।।

রামছাগী গায় চতুরঙ্গ বেড়ার ধারে

বাণী

		রামছাগী গায় চতুরঙ্গ বেড়ার ধারে,
		গাইয়ে ষাঁড়-সাথে বাছুর হাম্বা রবে — ভীষণ নাদ ছাড়ে,
		ফেটে বুঝি গেল কান, প্রাণে মারে!
		শুনিয়া হাই তোলে ভেউ ভেউ রোলে — ভুলোটা পগার পারে।।
তেলেনা: 		ডিম নেরে, তা দেরে, আমি না রে, তুই দেরে,
		নেরে ডিম, দেরে তা, তা দেনা,
		ওদের না না, তাদের না না তুই দেরে ডিম!
		ওদের নারী তাদের নারী দেদার নারী,
		দে রে নারী, যা ধেৎ, টানাটানি!
সরগম:	 	ধ প র ধ র গ, গ র গ ধ, গ র গ ধ,
		ন ধ ম ম, প র ন ম র গ, স র ন ধ স ম।।
তবলার বোল: 	ভেগে যা, মেগে খা, মেরে কেটে খা, মেরে কেটে খা’
		তেড়ে ধরে কাট ধুম, ধরে কেটে রাখুন না রাখুন না,
		কান দুটি যাক তবু কাটা থাক দুম।।

‘চতুরঙ্গ’