বাণী

নতুন চাঁদের তক্‌বীর শোন্‌ কয় ডেকে ঐ মুয়াজ্জিন —
আসমানে ফের ঈদুজ্জোহার চাঁদ উঠেছে মুসলেমিন।।
এলো স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুজ্জোহার এই সে চাঁদ,
তোরা ভোগের পাত্র ফেল্‌ রে ছুঁড়ে ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
প্রাণের যা তোর প্রিয়তম আজকে সে সব আন্‌,
খোদারই রাহে আজ তাহাদের কর রে কোরবান্‌।
কি হবে ঐ বনের পশু খোদারে দিয়ে,
তোর কাম-ক্রোধাদি মনের পশু জবেহ্‌ কর্‌ নিয়ে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।
বিলিয়ে দেওয়ার খুশির শিরনি তশ্‌তরিতে আন,
পর্‌ রে তোরা সবাই ত্যাগের রঙিন পিরহান্‌।
মোদের যা কিছু প্রিয় বিলাব সবে
নবীর উম্মত তবে সকলে কবে।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।

বাণী

তোমার কুসুম বনে আমি আসিয়াছি ভুলে।
তবু মুখপানে প্রিয় চাহ মুখ তুলে।।
দেখি সে-দিনের সম, ওগো ভুলে-যাওয়া স্মৃতি মম
তব ও-নয়নে আজো ওঠে কি-না দুলে।।
ওগো ভুল ক’রে আসিয়াছি, জানি ভুলেছ, তুমিও
তবু ক্ষণেকের তরে সে-ভুল ভেঙো না প্রিয়।
তীর্থে এসেছি মম দেবীর দেউলে।।
তোমার মাধবী-রাতে, আসিনি আমি কাঁদাতে
কাঁদিতে এসেছি একা বিদায়-নদীর কূলে।।

বাণী

যে নামে মা ডেকেছিল সুরথ আর শ্রীমন্ত তোরে।
সেই নাম তুই শিখিয়ে দে মা, ডাকব আমি তেমনি ক’রে।।
	বেদ-পুরাণে যে নাম শুনি
	যে নাম জপে ঋষি-মুনি
সেই নাম দে, যে নাম নিতে বক্ষ ভাসে অশ্রু-নীরে।।
ভয় যদি তোর ভক্তি দিতে, কর মা অসুর দানব মোরে
আসবি যখন শাস্তি দিতে, দেখব তোরে নয়ন ভরে।।
	তোর হাতে মা মরণ হলে
	ঠাঁই পাব যে তোরই কোলে
আঘাত করে ছেলেকে মা কাঁদে যেমন বক্ষে ধরে।।

বাণী

মোর দুখ নিশি কবে হবে ভোর
ভুবনে ছাড়ালো প্রভাতের আলো —
আমারি ভবনে কেন আঁধার ঘোর ॥
সূর্য-কিরণে সাগর শুকায় —
সে রবি-কিরণে শুকালো না হায়
আমার বিরহী আঁখির লোর ॥
আশোক বনে সীতার সঙ্গিনী প্রমীলার সম
নিশীথের আঁধার মুখ লুকায়ে কাঁদে অন্তরে মম। 
মালা চন্দন লয়ে মন্দির মাঝে
ফেলে নববধূ সাজ পূজারিণী-সাজে
শূন্য মন্দিরে আমি একা কাঁদি জড়ায়ে ছিন্ন মালার ডোর ॥

বাণী

ও কালো বউ! জল আনিতে যেয়ো না আর বাজিয়ে মল।
তোমায় দেখে শিউরে ওঠে কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।
		ওগো কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।।
	দেখে তোমার কালো আঁখি
	কালো কোকিল ওঠে ডাকি’
তোমার চোখের কাজল মাখি’ হয় সজল ঐ মেঘ-দল
		ওগো হয় সজল ঐ মেঘ-দল।।
	তোমার কালো রূপের মায়া
	দুপুর রোদে শীতল ছায়া
কচি অশথ্‌ পাতায় টলে ঐ কালো রূপ টলমল।।
	ভাদর মাসের ভরা ঝিলে
	তোমার রূপের আদর মিলে গো —
তোমার তনুর নিবিড় নীলে আকাশ করে টলমল।
		ঐ আকাশ করে টলমল।।

বাণী

দোলা লাগিল দখিনার বনে বনে
বাঁশরি বাজিল ছায়ানটে মনে মনে॥
	চিত্তে চপল নৃত্যে কে
	ছন্দে ছন্দে যায় ডেকে;
যৌবনের বিহঙ্গ ঐ ডেকে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে॥
বাজে বিজয়-ডঙ্কা তারই এলো তরুণ ফাল্গুনী,
জাগো ঘুমন্ত – দিকে দিকে ঐ গান শুনি’।
	টুটিল সব অন্ধকার –
	খোলো খোলো বন্ধ দ্বার;
বাহিরে কে যাবি আয় সে শুধায় জনে জনে॥