আমি পূরব দেশের পুরনারী
বাণী
আমি পূরব দেশের পুরনারী (গো)। গাগরি ভরিয়া এনেছি গো অমৃত-বারি।। পদ্মকুলের আমি পদ্মিনী-বধূ এনেছি শাপলা-পদ্মের মধু ঘন বন ছায়ায় শ্যামলী মায়ায় শান্তি আনিয়াছি ভরি’ হেমঝারি।। আমি শঙ্খ-নগর হতে আনিয়াছি শাখা, অভয়শঙ্খ, ঝিল্ ছেনে এনেছি সুনীল কাজল গো — বিল্ ছেনে অনাবিল চন্দন-পঙ্ক (এনেছি)। এনেছি, শত ব্রত-পার্বণ-উৎসব এনেছি, সারস হংসের কলরব এনেছি, নব আশা-ঊষার সিন্দুর মেঘ-ডম্বরু সাথে মেঘ-ডুমুর শাড়ি।।
ওগো ফুলের মতন ফুল্ল মুখে দেখছি একি ভুল
বাণী
ওগো ফুলের মতন ফুল্ল মুখে দেখছি একি ভুল। হাসির বদল দোলে সেথায় অশ্রুকণার দুল।। রোদের দাহে বালুচরে মরা নদী কেঁদে মরে গাইতে এসে কাঁদছে ব'সে বাণ-বেঁধা বুলবুল।। ভোর-গগনে পূর্ণ চাঁদের এমনি মলিন মুখ, ঝড়ের কোলে এমনি দোলে প্রদীপ-শিখার বুক। ম্লান-মাধুরী মালার ফুলে এমনি নীরব কান্না দোলে, করুণ তুমি নির্জনের দেবীর সমতুল।।
তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে
বাণী
তুমি আঘাত দিয়ে মন ফেরাবে এই কি তোমার আশা? আমার যে নাথ অনন্ত সাধ, অনন্ত পিপাসা॥ দাহন তুমি করবে যত প্রেমের শিখা জ্বলবে তত সে যে আমার মন্ত্র পূজার তোমার কঠিন ভাষা॥ ফুলমালী! ফুলের শাখা কাটো যত পার, আহত সেই ফুল-শাখাতে ধরবে কুসুম আরো। হানলে আঘাত নিথর জলে, অধীর বেগে ঢেউ উথলে, তোমার অবহেলায় বিপুল হ’ল ভীরু ভালোবাসা। আমার ভীরু ভালোবাসা॥
আমার ঘরের পাশ দিয়ে সে
বাণী
আমার ঘরের পাশ দিয়ে সে চলতো নিতুই সকাল-সাঁঝে। আর এ পথে চলবে না সে, সেই ব্যথা হায় বক্ষে বাজে।। আমার দ্বারের কাছটিতে তার ফুটতো লালী গালের টোলে, টলতো চরণ, চাউনি বিবশ, কাঁপতো নয়ন-পাতার কোলে — কুঁড়ি যেমন খোলে গো! কেউ কখনো কইনি কথা, কেবল নিবিড় নীরবতা সুর বাজাতো অনাহতা গোপন মরম-বীণার মাঝে।। মূক পথের আজ বুক ফেটে যায় স্মরি’ তারি পায়ের পরশ বুক-খসা তার আঁচর-চুমু, রঙিন ধুলো পাংশু হ’ল, ঘাস শুকোলো যেচে’ বাচাল যোড়-পায়েলার রুমু-ঝুমু। আজো আমার কাটবে গো দিন রোজই যেমন কাটতো বেলা, একলা ব’সে শূন্য ঘরে — তেমনি ঘাটে ভাসবে ভেলা — অবহেলা হেলা-ফেলায় গো! শুধু সে আর তেমন ক’রে মন র’বে না নেশায় ভ’রে আসার আশায় সে কার তরে সজাগ হ’য়ে সকল কাজে। ডুকরে কাঁদে মন-কপোতী ‘কোথায় সাথির কূজন বাজে? সে-পার ভাষা কোথায় রাজে।।