বাণী

সোনার হিন্দোলে কিশোর–কিশোরী দোলে ঝুলনের উৎসব রঙ্গে
বিন্দু বিন্দু বারি অবিরত পড়ে ঝরি’ বাজে তাল জলদ মৃদঙ্গে।।
	জড়াইয়া শ্যামে দোলে ভীরু রাধা
	থির বিজুরি ডোরে মেঘ যেন বাঁধা
পল্লব কোলে ফুলদলে দোলে (যেন) গোপীদল গোপীবল্লভ সঙ্গে।।
	উল্লাসে থরথর খরতর বহে বায়
	পুলকে ডালে ডালে কদম্ব শিহরায়।
	দৃষ্টিতে গোপীদের বৃষ্টির লাবনি
	আনন্দ উতরোল গাহে বৃন্দাবনী
নূপুর মধুর বাজে যমুনা তরঙ্গে ঝুলনের উৎসব রঙ্গে।।

বাণী

সোনার চাঁপা ভাসিয়ে দিয়ে গহীন সাগর-জলে
দূরে ব’সে কাঁদে কে রে কাঁদে আয় ফিরে আয় ব’লে।।
		কার আঁচলের মানিক ওরে
		অকূল স্রোতে পড়লি ঝরে রে
কোন্ মায়ের কোল্ খালি ক’রে এলি রে তুই চ’লে।।

নাটিকাঃ ‘শ্রীমন্ত’

বাণী

খুশি লয়ে খুশরোজের আয় খেয়ালি খুশ্‌-নসীব।
জ্বাল্‌ দেয়ালি শবেরাতের জ্বাল রে তাজা প্রাণ প্রদীপ।।
	আন্‌ নয়া দ্বীনী ফরমান
	দরাজ দিলে দৃপ্ত গান,
প্রাণ পেয়ে আজ গোরস্থান তোর ডাকে জাগুক নকীব।।
আন্‌ মহিমা হজরতের শক্তি আন্‌ শেরে খোদার,
কুরবানী আন্‌ কারবালার আন্‌ রহম মা ফাতেমার,
আন্‌ উমরের শৌর্য বল সিদ্দিকের আন্‌ সাচ্চা মন,
হাসান হোসেনের সে ত্যাগ শহীদানের মৃত্যুপণ,
রোজ হাশরে করবেন পার মেহেরবান খোদার হাবিব।।
খোৎবা পড়বি মসজিদে তুই খতীব নূতন ভাষায়,
শুষ্ক মালঞ্চের বুকে ফুল ফুটাবি ভোর হাওয়ায়,
এস্‌মে-আজম এনে মৃত মুসলিমে তুই কর সজীব।।

বাণী

ঝাঁপিয়া অঞ্চলে কেন বিধুবদন অবনত কাঁদে নয়ান।
অভিমান পরিহর হরি-হৃদি বিহারিণী প্রেম দিয়া জুড়াও এ প্রাণ।
তুয়া বিনা নয়নে অন্যে না হেরি
একই রাধা আছে ত্রিভুবন ঘেরি’
(আমি রাধা ছাড়া জানি’ না
অনন্ত বিশ্বে রাধারই রূপধারা,
রাধা ছাড়া দেখি না)
ভৃঙ্গার ভরি’ তুমি শৃঙ্গার রস
করাও পান, তাই হই যে অবশ।।
তুমি রাধা হয়ে মধু দিলে মাধব হই,
তুমি ধারা হয়ে নামিলে সৃষ্টিতে রই
রাধা, সকলি তোমার খেলা
তবে কেন কর অভিমান, কেন কর হেলা।
প্রতি দেহ-বিম্বে তোরি
পদতলে হর হয়ে রহি তাই ছবি।
হরিরত হর-জ্ঞান মহামায়া হরিলী
(এ যে) তোমারই ইচ্ছা, আমি নিজে নিজে রূপ ধরিণী।
ভোল মানের খেলা
দূরে থেকোনা, দাও চরণ ভেলা
আমি তরে’ যাই, তরে’ যাই
রাধা-প্রেম যমুনায় ডুবিয়া মরে’ যাই।।

পাঠান্তর : রেকর্ডের জন্য কবি এই গানটির বহু অংশ বর্জন করেন।বর্জিত অংশগুলো এই:
গলে দিয়া পীতধড়া গো, পদতলে দিয়া শিখী-চূড়া গো
পদযুগ ধরিয়া চাহি ক্ষমা, ক্ষম অপরাধ প্রিয়তমা!
হরি-মনোরমা ক্ষমা কর গো।।
তব প্রেমে অবগাহন করি সব দাহন চিরতরে জুড়াব
কল্প-কদম-তরু-তলে চিরদিন তোমার প্রেম-কণা কেশর কুড়াব।।

বাণী

আমি 	গিরিধারী সাথে মিলিতে যাইব, সুন্দর সাজে মোরে সাজায়ে দে।
	লাখ যুগের পরে শুভদিন এলো, মেহেদী রঙে হাত রাঙায়ে দে।।
	চন্দন টিপ, গলে মালতীর মালা, নয়নে কাজল পরায়ে দে,
	অধর রাঙায়ে দে তাম্বুল রাগে, চরণে আল্‌তা মাখায়ে দে।।
	প্রেম নীল শাড়ি প্রীতির আঙিনা, অনুরাগ ভূষণে বধূ সাজিয়া
	হৃদয়-বাসরে মিলিব দোঁহে — কুসুমের শেজ সখি বিছায়ে দে।।

বাণী

এ জনমে মোদের মিলন হবে না আর, জানি জানি।
মাঝে সাগর, এপার ওপার করি মোরা কানাকানি।।
	দুজনে দুকূলে থাকি’
	কাঁদি মোরা চখা-চখি,
বিরহের রাত পোহায় না আর বুকে শুকায় বুকের বাণী।।
	মোদের পূজা আরতি হায়
	চোখের জলে, গহন ব্যথায়,
মোদের বুকে বাজায় বীণা বেদনারি বীণাপাণি।।
	হেথায় মিলন-রাতের মালা
	ম্লান হয়ে যায় প্রভাত বেলা,
সকালে যার তরে কাঁদি, বিকালে তায় হেলাফেলা।
	মোদের এ প্রেম-ফুল না শুকায়
	নিঠুর হাতে কঠোর ছোঁওয়ায়,
ব্যথার মাঝে চির-অমর মোদের মিলন-কুসুমদানি।।