দাদ্‌রা

  • ব্রজে আবার আসবে ফিরে আমার ননী-চোরা

    বাণী

    ব্রজে আবার আসবে ফিরে আমার ননী-চোরা
    	আর কাঁদিস্‌নে গো তোরা।
    স্বভাব যে ওর লুকিয়ে থেকে কাঁদিয়ে পাগল করা —
    	আর কাঁদিস্‌নে গো তোরা।
    	আমি যে তার মা যশোদা
    	সে আমারেই কাঁদায় সদা,
    যেই কাঁদি সে যায় যে ভুলে বনে বনে ঘোরা॥
    মথুরাতে আমার গোপাল রাজা হ’ল নাকি,
    যেখানে যায়, সে রাজা হয় (তোরে) ভুল দেখেনি আঁখি।
    	সে রাজা যদি হয়েই থাকে
    	তাই ব’লে কি ভুলবে মাকে,
    আমি হব রাজ-মাতা, তাই ওর রাজবেশ পরা॥
    
  • ভক্ত নরের কাছে হে নারায়ণ

    বাণী

    ভক্ত নরের কাছে হে নারায়ণ চিরদিন আজ হারি
    তাই তো তোমায় নামায়েছি ব্রজে গোলক হইতে কাড়ি।।
    চতুর্ভুজের দ্বিভুজ হরিয়া বেঁধেছি যশোদা দুলাল করিয়া
    বনমালা পীত বসন পরিয়া হয়েছ ময়ূর মুকুটধারী।।
    রাঙা পায়ে তব নূপুর পরায়ে নাচায়েছি পথ মাঝে
    হাতে দিয়ে বেণু সাথে দিয়ে ধেণু সাজানু গোপাল সাজে।
    ভগবান বলে মোরা না ধেয়াই চোর কপট নিঠুর বলি তাই
    সুমধুর গালি দিয়েছি কানাই বামে দিয়ে রাধা প্যারী।।
    
  • ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায়

    বাণী

    ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায় টেনে  নে না তারে কোলে
    মুছিয়ে দে তার নয়নেরি জল (সে যে) আপন মায়ের ছেলে।।
         এত কাল যদি ছিলি এক ঠাঁই
         আজ কেন ছাড়া হলি ঠাঁই ভাই
    ভাই বিনে তোর আর কেহ নাই দিতে প্রাণ অবহেলে।।
         বিপদেতে পাবি কাহারে তখন
         ভাই যদি রয় ফিরায়ে বদন
    সেই ভা'য়ে তোর পরের মতন দিসনে আজিকে ঠেলে।।
    

  • ভারত আজিও ভোলেনি বিরাট

    বাণী

    ভারত আজিও ভোলেনি বিরাট মহাভারতের ধ্যান।
    দেশ হারায়েছে — হারায়নি তা’র আত্মা ও ভগবান।।
    তাহার ক্ষাত্রশক্তি গিয়াছে
    প্রেম ও ভক্তি আজও বেঁচে আছে,
    আজিও পরম ধৈর্য ও বিশ্বাসে —
    তার আশা-দীপ জ্বালিয়া রেখেছে সেই ভাগবত জ্ঞান।।
    দেহের জীর্ণ পিঞ্জরে তার প্রাণ কাঁদে নিরাশায়,
    ‘সম্ভবামি যুগে যুগে’ বাণী ভুলিতে পারে না হায়!
    সেই আশ্বাসে আজ নব অনুরাগে
    পাষাণ ভারতে বিরাট চেতনা জাগে,
    জেগেছে সুপ্ত-সিংহ, এসেছে দিব্য অসি-কৃপাণ।।
    
  • ভিখারিনী করে পাঠাইলি মোরে

    বাণী

    	ভিখারিনী করে পাঠাইলি মোরে, (মাগো) কি দিয়ে পূজিব বল।
    	হাতে আছে শুধু শূন্য প্রণাম, চোখে আছে শুধু জল।।
    	পূজা ধূপ নাই, চন্দন নাই, মাগো, লাজে মরি দিতে ভয় পাই
    	চুরি করে আনা দুটি জবা ফুল, একটি বিল্বদল।।
    তোর	ধনী ছেলে মেয়ে ঘটা করে তোর পূজা করে কত রূপে,
    মাগো	ভিখারি মেয়ের বেশে তুই কেন দাঁড়াইলি এসে, মোর কাছে চুপে চুপে
    	কিছু নাই মাগো হাতে দিতে তোর, শুধু নামখানি সম্বল মোর,
    যদি	চাস তুই ঐ রাঙা পায়ে দিব নামের সে শতদল।।
    
  • ভীরু এ মনের কলি ফোটালে না কেন

    বাণী

    ভীরু এ মনের কলি ফোটালে না কেন ফোটালে না —
    জয় করে কেন নিলে না আমারে, কেন তুমি গেলে চলি।।
    		ভাঙ্গিয়া দিলে না কেন মোর ভয়,
    		কেন ফিরে গেলে শুনি অনুনয়;
    কেন সে বেদনা বুঝিতে পার না মুখে যাহা নাহি বলি।।
    কেন চাহিলে না জল নদী তীরে এসে,
    সকরুণ অভিমানে চলে গেলে মরু–তৃষ্ণার দেশে।।
    		ঝোড়ো হাওয়া ঝরা পাতারে যেমন
    		তুলে নেয় তার বক্ষে আপন
    কেন কাড়িয়া নিলে না তেমনি করিয়া মোর ফুল অঞ্জলি।।
    
  • ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি

    বাণী

    ভুল ক'রে যদি ভালোবেসে থাকি ক্ষমিও সে অপরাধ।
    অসহায় মনে কেন জেগেছিল ভালবাসিবার সাধ।।
    	কত জন আসে তব ফুলবন
    	মলয়, ভ্রমর, চাঁদের কিরণ, —
    তেমনি আমিও আসি অকারণ অপরূপ উন্মাদ।।
    তোমার হৃদয়-শূন্যে জ্বলিছে কত রবি শশী তারা,
    তারি মাঝে আমি ধূমকেতু সম এসেছিনু পথহারা।
    	তবু জানি প্রিয় একদা নিশীথে
    	মনে পড়ে যাবে আমারে চকিতে,
    সহসা জাগিবে উৎসব-গীতে সকরুণ অবসাদ।।
    
  • ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি

    বাণী

    ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি’।
    ভোল মোর সে অপরাধ, আজি যে লগ্ন গোধূলি।।
    এমনি রঙিন বেলায় খেলেছি তোমায় আমায়,
    খুঁজিতে এসেছি তাই সেই পুরানো দিনগুলি।।
    তুমি যে গেছ ভুলে – ছিল না আমার মনে,
    তাই আসিয়াছি তব বেড়া–দেওয়া ফুলবনে।
    গেঁথেছি কতই মালা এই বাগানের ফুল তুলি’—
    আজও সেথা গাহে গান আমার পোষা বুলবুলি।।
    

  • ভুলে যেয়ো ভুলে যেয়ো

    বাণী

    	ভুলে যেয়ো, ভুলে যেয়ো সেদিন যদি পড়ে আমায় মনে
    যবে	চৈতী বাতাস উদাস হয়ে ফিরবে বকুল বনে।।
    		তোমার মুখের জোছনা নিয়ে
    		উঠবে যে চাঁদ ঝিলমিলিয়ে,
    	হেনার সুবাস ফেলবে নিশাস তোমার বাতায়নে।।
    		শুনবে যেন অনেক দূরে
    		ক্লান্ত বাঁশির করুন সুরে —
    	বিদায় নেওয়া কোন বিরহীর কানে কাঁদে নিরজনে।।
    
  • ভেঙো না ভেঙো না ধ্যান

    বাণী

    ভেঙো না ভেঙো না ধ্যান হে আমার ধ্যানের দেবতা।
    পূজা লহ, অর্ঘ্য লহ ক’য়ো না ক’য়ো না কথা।।
    পাষাণ মূরতি তুমি পাষাণ হইয়া থাকো,
    মন্দির-বেদী হতে ধরার ধূলায় নেমো নাকো।
    তুমিও মাটির মানুষ বুঝায়ে দিও না ব্যথা।।
    সহিবে সকলি স্বামী হেনো হেলা ব্যথা দিও,
    সহিবে না অপমান ভালোবাসার আমার হে প্রিয়,
    থাক তুমি হিয়ার মাঝে তোমার মন্দির যথা।।
    
  • ভোল লাজ ভোল গ্লানি জননী

    বাণী

    ভোল লাজ ভোল গ্লানি জননী মুক্ত আলোকে জাগো।
    কবে সে ঘুমালি মরণ-ঘুমে মা আর তো জাগিলি না গো।।
    চরণে কাঁদে মা তেমনি জলধি
    বক্ষ আঁকড়ি কাঁদে নদ-নদী,
    ত্রিশ কোটি সন্তান নিরবধি — 
    			কাঁদে আর ডাকে মা গো।।
    যে তিতিক্ষা যে শিক্ষা ল’য়ে
    অতীতে ছিলি মা রাজরানী হয়ে,
    ল’য়ে সে-মহিমা পুন নির্ভয়ে — 
    			বিশ্ব-বুকে-দাঁড়া গো।।
    বিশ্বের এই খল কোলহলে
    তুই আয় কল্যাণ-দীপ জ্বেলে’,
    বিরোধের শেষে তুই শান্তি মা — 
    			মৃত্যু শেষে সুধা গো।।
    
  • মনে পড়ে আজ সে কোন্‌ জনমে

    বাণী

    মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যাবেলা –
    আমি দাঁড়ায়ে রহিনু এপারে তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা।।
    সেই সে বিদায় ক্ষণে
    শপথ করিলে বন্ধু আমার, রাখিবে আমারে মনে,
    ফিরিয়া আসিবে খেলিবে আবার সেই পুরাতন খেলা।।
    আজো আসিলে না হায়,
    মোর অশ্রুর লিপি বনের বিহগী দিকে দিকে লয়ে যায়,
    তোমারে খুঁজে না পায়।
    মোর গানের পাপিয়া ঝুরে
    গহন কাননে তব নাম লয়ে আজো পিয়া পিয়া সুরে;
    গান থেমে যায়, হায় ফিরে আসে পাখী বুকে বিঁধে অবহেলা।।
    
  • মনে যে মোর মনের ঠাকুর তারেই আমি

    বাণী

    মনে যে মোর মনের ঠাকুর তারেই আমি পূজা করি,
    আমার দেহের পঞ্চভূতের পঞ্চপ্রদীপ তুলে ধরি।।
    	ফকির যোগী হয়ে বনে
    	ফিরি না তার অন্বেষণে
    আমি	মনের দুয়ার খুলে দেখি রূপের জোয়ার মরি মরি।।
    	আছেন যিনি ঘিরে আমায়
    	তারে আমি খুঁজব কোথায়
    সাগরে খুঁজে বেড়াই সাগর বুকে ভাসিয়ে তরী।
    	মন্দিরের ঐ বন্ধ খোঁপে
    	ঠাকুর কি রয় পূজার লোভে?
    পেতে রাখি ভক্তি বেদী আসবে নেমে প্রেমের হরি।।
    
  • মনে রাখার দিন গিয়েছে

    বাণী

    মনে রাখার দিন গিয়েছে এখন ভোলার বেলা
    আর লাগে না ভালো আমার হৃদয় নিয়ে খেলা।।
    	লগ্ন ছিল ছিল সময়
    	পরান ভরা চিল প্রণয়,
    সেদিন যদি আসতে মলয় বসতো ফুলের মেলা।।
    সুকুমার সুন্দর যাহা চিল আমার মাঝে
    গেছে ম'রে নিরাশাতে ঝ'রে গেছে লাজে।
    	আজ উদাসীন শূন্য মনে
    	ঘুরে বেড়াই অকারণে
    তোমার চেয়েও আমি আমায় হানি অবহেলা।।
    
  • মমতাজ মমতাজ তোমার তাজমহল

    বাণী

    	মমতাজ মমতাজ তোমার তাজমহল —
    যেন 	ফিরদৌসের একমুঠো প্রেম,
    	বৃন্দাবনের একমুঠো প্রেম, আজো করে ঝলমল।।
    	কত সম্রাট হ’ল ধূলি স্মৃতির গোরস্তানে —
    	পৃথিবী ভুলিতে নারে প্রেমিক শাহ্‌জাহানে,
    	শ্বেত মর্মরে সেই বিরহীর ক্রন্দন –মর্মর গুঞ্জরে অবিরল।।
    	কেমনে জানিল শাজাহান – প্রেম পৃথিবীতে ম’রে যায়,
    তাই	পাষাণ প্রেমের স্মৃতি রেখে গেল পাষাণে লিখিয়া হায়!
    যেন	তাজের পাষাণ অঞ্জলি ল’য়ে নিঠুর বিধাতা পানে
    	অতৃপ্ত প্রেম বিরহী আত্মা আজো অভিযোগ হানে!
    বুঝি	সেই লাজে বালুকায় মুখ লুকাইতে চায় শীর্ণা যমুনা জল।।
    
  • মা আমি আর কি ভুলি

    বাণী

    মা আমি আর কি ভুলি
    মাগো আমি আর কি ভুলি।
    চরণ যখন ধরেছি তোর মাগো আমি আর কি ভুলি।
    আমায় বহু জনম ঘুরিয়েছিস্ মা পরিয়ে চোখে মায়ার ঠুলি॥
    	তোর পা ছেড়ে যে মোক্ষ যাচে,
    	তুই বর্‌ নিয়ে যা তাহার কাছে
    ওমা আমি যেন যুগে যুগে পাই মা প্রসাদ চরণ-ধূলি॥
    মোরে শিশু পেয়ে খেল্‌না দিয়ে, রেখেছিলি মা ভুলিয়ে
    এখন খেল্‌না ফেলে কোলে নিতে মাকে ডাকি দু’হাত তুলি।
    	তোর ঐশ্বর্য যা কিছু মা
    	দে ভক্তগণে বিলিয়ে উমা,
    তোর ভিখারি এই সন্তানে দিস্ মাতৃনামের ভিক্ষাঝুলি॥
    
  • মা আমি তোর অন্ধ ছেলে

    বাণী

    মা! আমি তোর অন্ধ ছেলে হাত ধ’রে মোর নিয়ে যা মা।
    পথ নাহি পাই যেদিকে চাই দেখি আঁধার ঘোর ত্রিযামা।।
    	আমি নিজে পথ চলিতে যাই
    	বারে বারে পথ ভুলি মা তাই
    মায়া-কূপে পড়ে কাঁদি কোথায় দয়াময়ী শ্যামা।।
    মা তুই যবে হাত ধ’রে চলিস্ রয় না পতন-ভয়,
    তুই যবে পথ দেখাস্ মা গো সে পথ জ্যোতির্ময়।
    	কি হবে জ্ঞান-প্রদীপ নিয়ে সাথে
    	বৃথা এ দীপ জন্মান্ধের হাতে
    তুই যদি হ’স নির্ভর মোর পথের ভয় আর রবে না মা।।
    
  • মা এসেছে মা এসেছে মা এসেছে রে

    বাণী

    মা এসেছে, মা এসেছে, মা এসেছে রে
    মা এসেছে, মা এসেছে উঠ্‌ল কলরোল।
    (ওরে) দিকে দিকে বেজে ওঠে সানাই কাঁসর ঢোল॥
    ভরা নদীর কূলে কূলে, শিউলি শালুক পদ্মফুলে।
    মায়ের আসার আভাস দুলে আনন্দ-হিল্লোল,
    সেই খুশিতে পড়ল নিটোল নীল আকাশে টোল্॥
    বিনা কাজের মাতন রে আজ কাজে দে ভাই ক্ষমা,
    বে-হিসাবী করব খরচ সাধ যা আছে জমা।
    এক বছরের অতৃপ্তি ভাই, এই ক’দিনে কিসে মিটাই,
    কে জানে ভাই ফিরব কিনা আবার মায়ের কোল্ ।
    আনন্দে আজ আনন্দকে পাগল ক’রে তোল্॥
    
  • মা কবে তোরে পারব দিতে আমার সকল ভার

    বাণী

    মা	কবে তোরে পারব দিতে আমার সকল ভার।
    	ভাবতে কখন পারব মাগো নাই কিছু আমার॥
    		কারেও আনিনি মা সঙ্গে ক’রে
    		রাখতে নারি কারেও ধ’রে
    	তুই দিস্, তুই নিস্ মা হ’রে (আমার) কোথায় অধিকার॥
    	হাসি খেলি, চলি, ফিরি ইঙ্গিতে মা তোরই,
    মা	তোরই মাঝে লভি, তোরই মাঝে মরি।
    		পুত্র-মিত্র-কন্যা-জায়া,
    		মহামায়া তোরই মায়া,
    মা	তোর লীলার পুতুল আমি ভাবতে দে এবার॥
    
  • মা তোর কালো রূপের মাঝে

    বাণী

    	মা তোর কালো রূপের মাঝে রসের সাগর লুকিয়ে আছে,
    তোর	কৃষ্ণ জ্যোতির আড়াল টেনে মোর প্রেমময় কৃষ্ণ নাচে।।
    			(নাচে, নাচে, নাচে গো)
    আমি	যাঁহার পরম তৃষ্ণা লয়ে কাঁদি (মা),
    ওমা	কৃষ্ণা কেন রাখলি তারে বাঁধি,
    ওমা	যোগমায়া সে যে বাজায় বাঁশি তোরই রূপের কদম গাছে।।
    	আমার অভয় সুন্দরেরে কেন ভয়ের আবরণে
    	রাখলি ঢেকে মাগো, আমি কাঁদব কত এই বিরহের বৃন্দাবনে।
    ওমা	তোর শক্তি যমুনারি তীরে
    	নাম লয়ে মোর শ্যাম যে কেঁদে ফিরে।
    তুই	কোলে করে মেয়েরে তোর নিয়ে যা তাঁর পায়ের কাছে।।