বাণী

কে এলে হংস-রথে, কোথা যাও?
তার লিপি এনেছ কি? দাও মোরে দাও।।
যা’র বিরহে মোর হৃদয়-কমল
অশ্রু-সরসী-নীরে কাঁপে টলমল,
শুনেছি তার সাথে তুমি কথা কও —
কার কথা হয় সেথা — শোনাও শোনাও।।
আনন্দ-দূত তুমি, লিপি আন নাই?
দেখিতে কি আসিয়াছ — কত দুঃখ পাই?
সে এত প্রেম দিয়ে কেন লুকিয়ে থাকে
কেন দেখা দেয় না এত যে ডাকে,
কেন মোর আর ভালো লাগে না কিছুই?
মনে ক’রে বলো যদি তার দেখা পাও।।

বাণী

পুরুষ	:	কোথায় গেলে পেঁচা-মুখি একবার এসে খ্যাচ-খ্যাচাও
স্ত্রী	:	বলি, গাই-হারা বাছুরের মতন গোয়াল থেকে কে চ্যাঁচাও॥
পুরুষ	:	(বলি ও শাকচুন্নি, আহাহাহা)
		অমন শ্যাওড়া বৃক্ষ ফেলে, আমার ঘাড়ে কেন এলে গো, ও হো হো
স্ত্রী	:	(বলি ও কালিয়া পেরেত)
		তুমি উনুন-মুখো দেবতা যে তাই
		ছাই-পাঁশের নৈবিদ্যি পাও।
পুরুষ	:	(মরি অরি অরি অরি মরি, কি যে রূপের ছিরি, আহাহাহাহা)
		চন্দ্র-বদন ন্যাপা পোছা
		কুত্‌কুতে চোখ নাকটি বোঁচা গো, ও হো হো
স্ত্রী	:	(বলি ও বেরসো কাট, বলি ও কেলো হুলো)
		তুমি কাঁদলে চোখে কালি বোরোয় কয়লার ডিপোয় লজ্জা দাও
		তুমি কয়লার ডিপোয় লজ্জা দাও।
পুরুষ	:	বলি ও জুজুবুড়ি
স্ত্রী	:	বলি ও ঝাঁকাভূঁড়ি
পুরুষ	:	ও বাবা জুজু
স্ত্রী	:	ও বাবা ঝাঁকা
পুরুষ	:	আহা, চাম্‌চিকে ওই ডানা কাটা
স্ত্রী	:	তুমি যেন পূজোর পাঁঠা
পুরুষ	:	আহা, হার মেনে যায় হাঁড়ি চাঁছা প্রিয়ে যখন খ্যাচ-খ্যাচাও।
স্ত্রী	:	(আ-মরি মরি, কি যে বচন সুধা)
		পিঁপড়ে ধরবে ও প্রাণনাথ তুমি, শিগ্‌গির মুখে ফিনাল দাও॥

বাণী

কেন তুমি কাঁদাও মোরে, হে মদিনাওয়ালা!
অবরোধবাসিনী আমি কুলের কুলবালা।।
ঈদের চাঁদের ইশারাতে কেন ডাক নিঝুম রাতে,
হাসিন ইউসুফ! জুলেখারে কত দিবে জ্বালা।।
একি লিপি পাঠালে নাথ কোরানের আয়াতে —
পড়তে গিয়ে অশ্রু-বাদল নামে আঁখি-পাতে।
বাজিয়ে শাহাদতের বাঁশি কেন ডাক নিত্য আসি';
হাজার বছর আগে তোমায় দিয়েছি তো মালা।।

বাণী

	কত আর এ মন্দির দ্বার, হে প্রিয়, রাখিব খুলি'
	বয়ে যায় যে লগ্নের ক্ষণ, জীবনে ঘনায় গোধূলি।।
	নিয়ে যাও বিদায়-আরতি, হ'ল ম্লান আঁখির জ্যোতি;
	ঝরে যায় শুষ্ক স্মৃতির মালিকা-কুসুমগুলি।।
	কত চন্দন ক্ষয় হ'ল হায়, কত ধূপ পুড়িল বৃথায়;
	নিরাশায় সে পুষ্প কত ও পায়ে হইল ধূলি।।
ও	বেদী-তলে কত প্রাণ — হে পাষাণ নিলে বলিদান;
	তবু হায় দিলে না দেখা — দেবতা, রহিলে ভুলি'।।

বাণী

		করুণা তোর জানি মাগো আসবে শুভদিন।
		হোক না আমার চরম ক্ষতি থাক না অভাব ঋণ।।
			আমায় ব্যথা দেওয়ার ছলে
			টানিস্ মা তোর অভয় কোলে,
		সন্তানে মা দুঃখ দিয়ে রয় কি উদাসীন।।
(তোর)	কঠোরতার চেয়ে বেশি দয়া জানি ব’লে,
		ভয় যত মা দেখাস্ তত লুকাই তোরই কোলে।
			সন্তানে ক্লেশ দিস্ যে এমন
			হয়ত মা তার আছে কারণ,
তুই		কাঁদাস্ ব’লে বল্‌ব কি মা হ’লাম মাতৃহীন।।

বাণী

কবি,		সবার কথা কইলে, এবার নিজের কথা কহ।
(কেন)	নিখিল ভুবন অভিমানের আগুন দিয়ে দহ।।
		কে তোমারে হান্‌ল হেলা, কবি!
(হায়!)	সুরে সুরে আঁক কি গো সেই বেদনার ছবি?
		কা’র বিরহ রক্ত ঝরায় বক্ষে অহরহ।।
		কোন্‌ ছন্দময়ীর ছন্দ দোলে আমার গানে গানে,
		তোমার সুরের স্রোত ব’য়ে যায় কাহার প্রেমের টানে গো —
		কাহার চরণ পানে?
		কাহার গলায় ঠাঁই পেল না ব’লে
(তব)		কথার মালা ব্যথার মত প্রতি হিয়ায় দোলে,
(তোমার)	হাসিতে যে বাঁশি বাজে, সে ত’ তুমি নহ।।

১. সবার কথা কইলে কবি নিজের কথা কহ।