বাণী

	ও, কুল-ভাঙ্গা নদী রে,
	আমার চোখের নীর এনেছি মিশাতে তোর নীরে।।
	যে লোনা জলের সিন্ধুতে নদী, নিতি তব আনাগোনা
	মোর চোখের জল লাগবে না ভাই তার চেয়ে বেশি লোনা।
	আমায় কাঁদাতে দেখে আসবিনে তুই রে,
	উজান বেয়ে ফিরে' নদী, উজান বেয়ে ফিরে'।।
		আমার মন বোঝে না, নদী —
তাই	বারে বারে আসি ফিরে তোর কাছে নিরবধি।
	তোরই অতল তলে ডুবিতে চাই রে,
		তুই ঠেলে দিস তীরে (ওরে)।।

বাণী

ও মেঘের দেশের মেয়ে।
কোথা হ’তে এলি রে তুই কেয়াপাতার খেয়া বেয়ে।।
	ধারা নূপুর রুন্‌ঝুনিয়ে
	কানে কদম দুল দুলিয়ে
ফুল কুড়াতে এলি কি তুই মোর কাননে ধেয়ে।।
পূব-হাওয়াতে উড়ছে আঁচল নীলাম্বরী,
তুমি বুঝি ভাই রূপকাহিনীর মেঘ্লা-পরী।
তোর	কণ্ঠে বাজে যে গান মধুর
	তারি’ তালে নাচে ময়ূর,
মেঘ-মাদলের সাথে ওঠে আমারও মন গেয়ে।।

বাণী

ওরে	শুভ্রবসনা রজনীগন্ধ্যা বনের বিধবা মেয়ে,
	হারানো কাহারে খুঁজিস নিশীথ-আকাশের পানে চেয়ে।।
	ক্ষীণ তনুলতা বেদনা-মলিন,
	উদাস মূরতি ভূষণবিহীন,
	তোরে হেরি ঝরে কুসুম-অশ্রু বনের কপোল বেয়ে।।
	তুইলুকায়ে কাঁদিস রজনী জাগিস সবাই ঘুমায় যবে,
	বিধাতারে যেন বলিস — দেবতা আমারে লইবে কবে।
	করুণ শুভ্র ভালোবাসা তোর
	সুরভি ছড়ায় সারা নিশি ভোর,
	প্রভাত বেলায় লুটাস ধূলায় যেন-কারে নাহি পেয়ে।।

বাণী

ও কে কলসি ভাসায়ে জলে আনমনে।
তীরে ব’সে কী ভাবে আর ঢেউ গণে।।
নিয়ে শিথিল আঁচল খেলে উতল সমীর
তার আল্‌তা পায়ের মুছে নেয় নদী-নীর,
খুলে কবরী জড়ায় হাতের কাঁকনে।।
সে জল্‌কে আসার ছলে নদী-তীরে
শুধু ওপার পানে চাহে ফিরে ফিরে,
খুলে পায়ের নূপুর ফেলে দেয় সে নীরে —
আসে ঘরে ফিরে নিয়ে জল নয়নে।।

বাণী

ওগো বৈশাখী ঝড়! ল’য়ে যাও অবেলায় ঝরা এ মুকুল।
ল’য়ে যাও বিফল এ জীবন — এই পায়ে দলা ফুল।।
	ওগো নদীজল লহো আমারে
	বিরহের সেই মহা-পাথারে,
চাঁদের পানে চাহে যে পারাবারে — অনন্তকাল কাঁদে বিরহ-ব্যাকুল।।

বাণী

ও মা	বক্ষে ধরেন শিব যে চরণ শরণ নিলাম সেই চরণে
	জীবন আমার ধন্য হলো ভয় নাই মা আর মরণে।।
		যা ছিল মা মোর ত্রিলোকে
		তোকে দিলাম, দিলাম তোকে
	আমার ব’লে রইল শুধু তোর চরণের ধ্যান, এ মনে।।
তোর	কেশ নাকি মা মুক্ত হলো ছুঁয়ে তোর ওই রাঙা চরণ
	মুক্তকেশী, মুক্ত হবো ওই চরণে নিয়ে শরণ।
	তোর	চরণ-চিহ্ন বক্ষে এঁকে
		বিশ্বজনে বলবো ডেকে — মা
	‘দেখে যা কোন্ রত্ন রাজে আমার হৃদয়-সিংহাসনে’।।